সৌগত রায়, মহুয়া মৈত্র এবং যশবন্ত সিনহা।
পশ্চিমবঙ্গে ‘অবাধ এবং স্বচ্ছ’ নির্বাচনের দাবিতে দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করতে চলেছেন তৃণমূলের সংসদীয় প্রতিনিধি দল। শুক্রবার দুপুর ১২টা নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা প্রতিনিধি দলটির। এই দলে রয়েছেন সৌগত রায়, মহুয়া মৈত্র এবং সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া যশবন্ত সিনহা। এত দিন বিরোধীরা যে ‘স্বচ্ছ এবং অবাধ’ ভোট করানোর দাবি নিয়ে সরব হয়েছিল, এ বার তৃণমূলও সেই দাবি নিয়ে পাল্টা চাপ দিতে চলেছে কমিশনের কাছে।
নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, রাজ্যে রাজনৈতিক আবহাওয়া ততই তপ্ত হচ্ছে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের বেশ কয়েক জায়গায় দুই প্রতিপক্ষ তৃণমূল এবং বিজেপি-র কর্মী সমর্থকদের মধ্যে গন্ডগোলের ছবি সামনে আসছে। কোথাও উদ্ধার হচ্ছে তাজা বোমা। কোথাও প্রার্থীদের উপর হামলা হচ্ছে। কোথাও আবার দু’পক্ষের কর্মী সমর্থকরা ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ছেন। ভোটে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তাই এ বার আগেই স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব যখনই এ রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে এসেছেন, তখনই কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর কথা বার বার উল্লেখ করেছেন। খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানো হবে বলেও বাংলার বেশ কয়কেটি জনসভা থেকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু প্রথম থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে আপত্তি ছিল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের। কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তারা। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে আবার বিরোধীরাও রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের উপর ভরসা রাখতে পারেননি। ফলে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করানোর জন্য প্রথম থেকেই সরব হয়েছিল তারা।
ভোটে হিংসা রুখতে তাই এ বার গোটা প্রক্রিয়াটিকে পরিচালনা করতে প্রচুর কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার দিকটাও নজরে রাখছে কমিশন। রাজনৈতিক কারবারিরা বলছেন, যে দাবি নিয়ে এত দিন বিরোধীরা আওয়াজ তুলেছে, এ বার রাজ্যের শাসক দল সেই দাবি তুলে কমিশনের উপর পাল্টা চাপ তৈরির কৌশল নিল।