হাসপাতালে আক্রান্ত তৃণমূল নেতা। ডানদিকে, ভাঙচুড় চালানোর পর তাঁর গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
নন্দীগ্রামে ফের তৃণমূলের উপর হামলার অভিযোগ উঠল। এ বার আক্রান্ত তৃণমূলের এক যুবনেতা। অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যায় নন্দীগ্রামের একটি কর্মিসভায় যোগ দিয়ে ফেরার পথে তাঁর উপর লাঠি এবং রড নিয়ে চড়াও হয় একদল দুষ্কৃতী। গাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি দুষ্কৃতীরা ওই নেতা এবং তাঁর সঙ্গীদের মারধর করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। ঘটনায় বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ও তার অনুগামীদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তৃণমূলের। যদিও বিজেপি সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার রাতেই নন্দীগ্রাম থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল।
আক্রান্ত নেতা সম্রাট তপাদার যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। বুধবার নন্দীগ্রামে একটি কর্মিসভায় যোগ দিতে এসেছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই সভা সেরে ফেরার পথেই নন্দীগ্রাম ২নম্বর ব্লকের রামচকে হামলার মুখে পড়েন তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা। সম্রাটের গাড়িতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই এবং যুব তৃণমূল নেতা দেবজিৎ, দু’জন দেহরক্ষী এবং গাড়িচালক। লাঠি-রড নিয়ে দুষ্কৃতীদের একটি দল তাঁদের গাড়ির ওপর চড়াও হয় বলে দাবি তাঁদের। সম্রাট ও তাঁর সঙ্গীরা গুরুতর জখম হন এই হামলায়। আহত অবস্থায় সম্রাট ও তাঁর দলবলকে নিয়ে আসা হয় নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। সম্রাটের হাতে চোট ছিল বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁর হাতে প্লাস্টার করাতে হয়। বাকিরাও চিকিৎসাধীন বলে জানা গিয়েছে হাসপাতাল সূত্রে।
খবর পেয়ে বুধবার রাতেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা হাসপাতালে পৌঁছন। নন্দীগ্রাম ব্লক তৃণমূলের সভাপতি স্বদেশ দাস বলেন, ‘‘সদ্য নন্দীগ্রাম মামলা খুঁচিয়ে তোলা হয়েছে। যার জেরে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে তৎকালীন জমি আন্দোলনকারী এবং বর্তমানে তৃণমূল নেতাদের নামে। এর মধ্যে নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর হামলা হয়। এ বার তৃণমূলের এই যুবনেতার উপরও হামলা করা হল।’’
বুধবারই নন্দীগ্রাম ২ ব্লকের ভেটুরিয়ায় শুভেন্দুর গাড়ি ঘিরে ঝাঁটা হাতে বিক্ষোভ দেখিয়েছিল তৃণমূলের মহিলা সদস্যরা। তৃণমূল নেতার দাবি, এই হামলা তারই ‘প্রতিশোধ’। বুধবারের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারির দাবিতে রাতেই নন্দীগ্রামের থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।
যদিও বিজেপি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি প্রলয় পালের দাবি, বিজেপি কোনও রকম হামলার সঙ্গে যুক্ত নয়। তাঁর কথায়, ‘‘এর আগেও তৃণমূল মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল। সেটা ছিল নিছকই দুর্ঘটনা।’’ প্রলয় বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে নন্দীগ্রাম বেশ উত্তপ্ত। তার মধ্যেই তৃণমূলের কিছু বহিরাগত প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ করছে। পাশাপাশি ভোটের প্রচারও করছে। সে সব নিয়েই এলাকাবাসীর সঙ্গে কিছু দ্বন্দ্ব হয়ে থাকতে পারে। বিজেপি এর সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নয়।’’