কলাইকুণ্ডা বাদ দিলে বৃহস্পতিবার মোদী বনাম মমতা সমাবেশের লড়াইটা মূলত জঙ্গলমহলে। ফাইল চিত্র।
বৃহস্পতি, শনি, রবি এবং বুধবার। রাজ্যে পর পর ৪টি সমাবেশ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ৭ দিনে ৪ সভার প্রথমটি বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ায়। আর সেই শুরুর দিনটিতেই একের পর এক ৩টি সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।কলাইকুণ্ডা, গড়বেতা, কেশিয়াড়ি। কলাইকুণ্ডা বাদ দিলে বৃহস্পতিবার মোদী বনাম মমতা সমাবেশের লড়াইটা মূলত জঙ্গলমহলে।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে প্রথম দুই দফায় পশ্চিমাঞ্চল ও জঙ্গলমহলের বড় অংশে রয়েছে ভোটগ্রহণ। আর সেই এলাকায় দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল ও বিজেপি একের পর এক সভা করে চলেছে। তৃণমূলের মুখ হিসেবে মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সমাবেশ করে চলেছেন, তখন বিজেপি-র রাজ্য নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতারাও একের পর এক বাংলা সফর করছেন। সদ্যই অমিত শাহ এবং জেপি নড্ডা রাজ্যে একাধিক সভা করে গিয়েছেন। এসেছিলেন স্মৃতি ইরানি, রাজনাথ সিংহ, যোগী আদিত্যনাথরা। এ বার শুরু হচ্ছে মোদীর টানা সফর। এর আগে ব্রিগেড সমাবেশ ছাড়াও হলদিয়া ও হুগলির সাহাগঞ্জে সভা করেছেন মোদী। তবে সেই সভাগুলির মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল। এ বার একই সপ্তাহে ৪ বার রাজ্যে আসতে চলেছেন মোদী।
বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার পরে শনিবার বাঁকুড়া, রবিবার খড়্গপুর এবং বুধবার কাঁথিতে সমাবেশ রয়েছে মোদীর। সম্প্রতি ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুরে বিজেপি-র সভায় খুব একটা ভিড় হয়নি। এরই মধ্যে বৃহস্পতিবারের পুরুলিয়ায় মোদীর সভা নিয়ে রীতিমতো চাপে রয়েছেন বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব। এখনও পর্যন্ত মোদীর যে সফরসূচি জানা গিয়েছে তাতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় পুরুলিয়ার ভাঙড়ায় মোদীর জনসভা।
বৃহস্পতিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে ৩টি সমাবেশ রয়েছে তার সব ক’টিই অবশ্য পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। নন্দীগ্রামে আহত হওয়ার পর সোমবার থেকে ফের প্রচার শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার পুরুলিয়ার পর মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় তিনটি সভা করেন মমতা। বুধবার দু’টি সভা করেন ঝাড়গ্রাম জেলায়। বুধবারও মমতা তাঁর উপরে আক্রমণ হয়েছে বলে বিজেপি-কে নিশানা করেন। বলেন, ‘‘আমায় আগে মারত সিপিএম, এখন মারে বিজেপি। পা-টা বাকি ছিল। আজ সেটাকেও তোমরা আঘাত করলে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমার একটা পা নয়। লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষের পা নিয়ে আমি জিতব।’’
মোদীকেও আক্রমণ করেন বুধবার। বলেন, ‘‘১ হাজার নেতা নিয়ে এসেছে বাইরে থেকে। আর হাজার হাজার বহিরাগত গুন্ডা। ওরা চায় ঝাড়গ্রাম দখল করতে। ওরা চায় পুরুলিয়া দখল করতে। ওরা চায় গোয়ালতোড় দখল করতে। নরেন্দ্র মোদী নির্বাচনের সময় মাইক লাগিয়ে বড় বড় কথা বলে। দুটো বাংলায় বলে, কেমন আছেন? তার পরেই মিথ্যে বলতে শুরু করেন।’’
প্রসঙ্গত গত ৭ ফেব্রুয়ারি মোদীও ব্রিগেড সমাবেশ থেকে মমতাকে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, ‘‘ভবানীপুরে তো আপনার স্কুটি ভাল চলছিল। দেখলাম আপনার স্কুটি নন্দীগ্রামের দিকে টার্ন নিয়েছে। সেখানে যদি আপনার স্কুটি উল্টে যায় তা হলে আমাদের কিছু বলবেন না। আমরা কিন্তু আপনার ভালই চাই।’’ নন্দীগ্রামের ‘দুর্ঘটনা’-র পরে বৃহস্পতিবারই প্রথমবার রাজ্যে আসছেন মোদী। নীলবাড়ির লড়াইয়ের উত্তপ্ত আবহে মুখ্যমন্ত্রী আহত হলেও আরোগ্যকামনায় কোনও বার্তা দেননি প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার তিনি ওই প্রসঙ্গে কী বলেন সে দিকে অবশ্যই নজর থাকবে বাংলার।