নরেন্দ্র মোদী,শিশির অধিকারী,অমিত শাহ এবং দিব্যেন্দু অধিকারী।
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরায় রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জনসভা। সেই সভায় উপস্থিত থাকার জন্য শিশির অধিকারীর কাঁথির বাড়িতে এসে তৃণমূল সাংসদকে আমন্ত্রণ জানাল বিজেপি। আগামী বুধবার, ২৪ মার্চ কাঁথিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভা। সেই সভাতেও শিশিরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর সেজো ছেলে তথা হলদিয়ার তৃণমূল সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মোদীর সভায়।
মোদী-শাহ— দু’জনের সভাতেই উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানাতে শনিবার কাঁথির শান্তিকুঞ্জে অধিকারীদের বাসভবনে যান বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য। শান্তিকুঞ্জে তিনি দীর্ঘ ক্ষণ ছিলেন। সেখান থেকে বেরিয়ে যদিও কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
অধিকারী পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপি-র আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন শিশির-দিব্যেন্দু। তাঁরা দু’জনেই বিজেপি-র সভায় যোগদানের বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছেন বলেও দাবি ওই সূত্রের। দিব্যেন্দুও আমন্ত্রণ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন। দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘বিজেপি-র তরফে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গেও আমাদের কথা হয়েছে। তবে সভায় যাব কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত রবিবার নেব।’’
গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর মেদিনীপুরের অমিতের জনসভায় বিজেপি-তে যোগ দেন শুভেন্দু অধিকারী। তার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে দাদার হাত ধরে বিজেপি-তে চলে যান শিশিরবাবু ছোট ছেলে সৌম্যেন্দু অধিকারী। দু’জনের দলবদলের আগে থেকেই অধিকারীদের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল তৃণমূলের। শিশিরের দুই পুত্রের দলবদলের পরে তা তিক্ততার পর্যায়ে পৌঁছয়। শিশিরকে সরিয়ে দেওয়া হয় দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে।
চলতি মাসের ১৩ তারিখে শান্তিকুঞ্জে যান হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেখানে ঘরোয়া পরিবেশে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিলেন শিশির। মেনুতে ছিল ভাত-ডাল-আলুভাজা-শুক্তো মাছের ঝোল চাটনি। পরে, নিজের হাতে লকেটকে পান সেজে দেন শিশির-পত্নী গায়ত্রী দেবী। শান্তিকুঞ্জ থেকে বেরিয়ে রাজ্য বিজেপি সাধারণ সম্পাদক লকেট বলেন, ‘‘ছেলের পাশে থাকবেন বলেছেন বাবা। শিশিরবাবুর মতো মানুষের খুব দরকার। ভূমিপুত্রই জিতবে। মেদিনীপুর মানেই অধিকারী পরিবার। এখানে আসব আর শান্তিকুঞ্জে আসব না, তা হতে পারে না।’’
তখন থেকেই অধিকারী পরিবারের বাকি সদস্যদের বিজেপি-তে যোগদানের বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়। রবিবার শাহের সভার পর ২৪ মার্চ কাঁথি শহরেই জনসভা করতে আসবেন প্রধানমন্ত্রী। ওই দিনই অধিকারী পরিবারের সব সদস্যের বিজেপি-তে যোগদানের বিষয়টি সম্পন্ন করতে চায় গেরুয়া শিবির।