প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা প্রচারে প্রচারে বলছেন, ‘‘খেলা হবে।’’ তারই জবাব দিতে এ বার নরেন্দ্র মোদী বললেন, ‘‘খেলতে দেব না।’’
নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে বঙ্গ রাজনীতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে ‘খেলা হবে’ শব্দবন্ধ। গত বৃহস্পতিবার পুরুলিয়ার জনসভা থেকে মোদী ‘খেলা হবে’-র পাল্টা দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘দিদি বলেন, খেলা হবে। বিজেপি বলে, বিকাশ হবে। বিজেপি বলে, শিক্ষা হবে। মহিলাদের উত্থান হবে। বিজেপি বলে, যুবশক্তির সম্পূর্ণ বিকাশ হবে। চাকরি হবে। পরিষ্কার জল হবে। গ্রামে গ্রামে হাসপাতাল হবে। স্কুল হবে।’’ সে দিন ‘খেলা শেষ’ করার কথাও বলেছিলেন মোদী। ব্রিগেডের সমাবেশ যে ভাবে ‘খেলা খতম’-এর বার্তা দিয়েছিলেন তেমন ভাবেই বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘দিদি ও দিদি! ১০ বছর বাংলার ভাইবোনেদের চিন্তার খেলা খেলেছেন। এ বার তার অবসান হবে বাংলায়। এ বার খেলা শেষ হবে!’’
শনিবার আবার নতুন সুর শোনালেন মোদী। এত দিন ‘খেলা শেষ হবে’ বলেছেন। এ বার বললেন, ‘‘খেলতে দেব না।’’ খড়্গপুরের জনসভা থেকে তিনি বলেন, ‘‘গরিবের ছেলে ডাক্তার হোক, তাতেও আপত্তি দিদির। তাই নতুন শিক্ষানীতি চালু করতে চাইছেন না। যুবসমাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবিত নন দিদি। বাংলার যুবসমাজ, মা-বোন, দরিদ্র, দলিতদের আশ্বাস দিচ্ছি, দিদিকে বাংলার যুবসমাজের ভবিষ্যতের সঙ্গে খেলতে দেব না।’’ এখানেই না থেমে মোদী বলেন, ‘‘দিদি বলে বেড়াচ্ছেন খেলা হবে। কিন্তু গোটা বাংলা বলছে, খেলা শেষ হবে। উন্নয়ন শুরু হবে। দিদির কাছ থেকে ১০ বছরের হিসাব চাইছেন বাংলার মানুষ। জবাব দেওয়ার পরিবর্তে অত্যাচার চালাচ্ছেন দিদি। অনেক বলেছি, কিন্তু কথা কানেই তোলেন না। আমপান ত্রাণের হিসেব নেই, রেশন দুর্নীতির হিসেব নেই।’’
তৃণমূলের বিরুদ্ধে শনিবার ভোট এককাট্টা করার ডাকও দেন মোদী। সেই প্রসঙ্গে টেনে আনেন কাদায় আটকে থাকা গাড়ি তোলার প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘কোথাও গাড়ি যদি কাদায় আটকে যায় তাকে বার করতে সব যাত্রীদের নেমে এক দিকে ধাক্কা দিতে হয়। দু’দিক থেকে ধাক্কা দিলে গাড়ি ওঠে না। তাই আপনাদের একই দিকে এগিয়ে আসতে হবে।’’
নিজের বক্তব্যে, শুক্রবার রাতের হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক পরিষেবা থমকে যাওয়ার প্রসঙ্গও টেনে আনেন মোদী। শনিবার তিনি বলেন, ‘‘কাল রাতে ৫০-৫৫ মিনিটের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ডাউন হয়ে গিয়েছিল। মানুষ দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। বাংলায় তো ৫০-৫৫ বছর ধরে উন্নতিই আটকে রয়েছে। এখন বাংলায় উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন দিদি।’’ সেই সঙ্গে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অবাধ ভোট হতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে মোদী বলেন, ‘‘আগের ভোটগুলিতে তৃণমূল যা যা করত তা এ বার আর হবে না। সবাই একসঙ্গে রুখে দাঁড়ান। নির্ভয়ে ভোট দিন।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এই ভোট শুধু বিধায়ক, মন্ত্রী বানানোর ভোট নয়। বাংলার ভবিষ্যৎ বদলানোর ভোট। মোদী বলেন, ‘‘এ বার ভয় নয়, শুধু জয়।’’