রাহুল গান্ধী। —ফাইল চিত্র।
নিজের পুরনো কেন্দ্র অমেঠী থেকে নয়, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের ‘গড়’ রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হচ্ছেন রাহুল গান্ধী। দীর্ঘ জল্পনার অবসান ঘটিয়ে শুক্রবার সকালে কংগ্রেসের তরফে এই ঘোষণা করা হয়।
শুক্রবার সকালে রাহুলের পুরনো কেন্দ্র অমেঠীতেও দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। সেখানে গান্ধী পরিবারের ‘আস্থাভাজন’ কিশোরীলাল শর্মাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০ মে পঞ্চম দফায় ভোট অমেঠী এবং রায়বরেলীতে। শুক্রবারই ছিল এই দুই কেন্দ্রের জন্য প্রার্থীদের মনোনয়ন পেশের শেষ দিন। তাই প্রার্থী হিসাবে নাম ঘোষণার দিনই মনোনয়ন পেশ করতে হবে রাহুল এবং কিশোরীলালকে।
ইতিমধ্যেই অমেঠী থেকে বিজেপির বিদায়ী সাংসদ স্মৃতি ইরানি মনোনয়ন জমা দিয়ে দিয়েছেন। রায়বরেলীতে পদ্মশিবির প্রার্থী করেছে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী দীনেশপ্রতাপ সিংহকে। ২০০৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ বছর অমেঠীর সাংসদ ছিলেন রাহুল। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে তিনি স্মৃতির কাছে হেরে যান। অন্য দিকে, রায়বরেলীতে এ বারের বিজেপি প্রার্থী দীনেশকে হারিয়েই ২০১৯-এ জয়ী হন সনিয়া। কিন্তু সনিয়া রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ায় তাঁর এ বার লোকসভা ভোটে লড়ার সম্ভাবনা প্রায় ছিলই না।
সেই জহরলাল নেহরুর আমল থেকে রায়বরেলী কংগ্রেসের গড় হিসাবে পরিচিত। ১৯৬২ এবং ১৯৯৯ সাল বাদ দিয়ে এই কেন্দ্রে সব সময়ই নেহরু-গান্ধী পরিবারের কেউ প্রার্থী হয়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই কেন্দ্র থেকে তিন বার জয়ী হয়েছেন। সনিয়া টানা পাঁচ বার এই কেন্দ্রে জিতে লোকসভায় গিয়েছেন। ১৯৫২ সালের পর বিজেপি মাত্র দু’বার এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে। আর এসপি, বিএসপি কখনও এই কেন্দ্রে জয়ের মুখ দেখেনি। এই পরিসংখ্যান মাথায় রেখে রায়বরেলী কেন্দ্রটিকে রাহুলের জন্য ‘নিরাপদ’ বলে মনে করছেন অনেকে। রাহুল গত লোকসভা ভোটে অমেঠীর সঙ্গে কেরলের ওয়েনাড় কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওয়েনাড়ে জিতলেও অমেঠীতে হেরে যান তিনি। এ বারও ওয়েনাড় থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তিনি। গত ২৬ এপ্রিল ওই কেন্দ্রে ভোট হয়ে গিয়েছে।
মাঝে কংগ্রেস সূত্রে জানা গিয়েছিল, রায়বরেলীতে প্রার্থী হতে পারেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। অমেঠী, রায়বরেলীর প্রার্থী কারা হবেন, তা নিয়ে সোমবার রাতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের সঙ্গে প্রিয়ঙ্কার আলোচনা হয়। ওই সূত্রের খবর, প্রিয়ঙ্কা খড়্গেকে জানান, তিনি গোটা দেশে প্রচারে মন দিতে চান। শুধু রায়বরেলী বা অমেঠীতে লড়তে গেলে তিনি একটি আসনে আটকে যাবেন। এআইসিসি মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বুধবার জানিয়েছিলেন, দিন দেড়েকের মধ্যে ওই দুই কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা হবে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশে দুই আসন থেকেই গান্ধী পরিবারের কেউ না লড়লে কংগ্রেস নির্বাচনী ময়দানের জমি ছেড়ে পালাচ্ছে বলে বার্তা যেত। তাই রাহুলকে রায়বরেলীতে প্রার্থী করে উত্তরপ্রদেশের দলীয় কর্মীদের কংগ্রেস ইতিবাচক বার্তা দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।