Seventh Phase Vote Percentage in West Bengal

ভোটদানে অনীহা? ২০১৯ সালের তুলনায় বাংলায় শেষ দফাতেও কম ভোট পড়ল! কোথায় কত?

সপ্তম দফায় পশ্চিমবঙ্গের ন’টি আসন—দমদম, বারাসাত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা উত্তর এবং কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। শেষ দফায় ভোটদানের হার নিয়ে উৎসাহ ছিল অনেকের মধ্যেই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জুন ২০২৪ ২৩:২৭
Share:

প্রতিনিধিমূলক ছবি।

১৯ এপ্রিল শুরু হয়েছিল এ বারের লোকসভা নির্বাচন। শনিবার সপ্তম তথা শেষ দফার নির্বাচন ছিল। এই সপ্তম দফায় পশ্চিমবঙ্গের ন’টি আসন—দমদম, বারাসাত, বসিরহাট, জয়নগর, মথুরাপুর, ডায়মন্ড হারবার, যাদবপুর, কলকাতা উত্তর এবং কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়। শেষ দফায় ভোটদানের হার কেমন ছিল তা নিয়ে উৎসাহ ছিল অনেকের মধ্যেই। রবিবার ভোটদানের যে হিসাব দিল নির্বাচন কমিশন, তাতে দেখা গেল ২০১৯ সালের থেকে ২০২৪ সালে— এই ন’আসনের ভোটদনের গড় হার প্রায় পাঁচ শতাংশ কম। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, তবে কি ভোটদানে অনীহা ক্রমশ বাড়ছে?

Advertisement

কমিশন সূত্রে খবর, শনিবার বাংলার ন’আসনে ভোটদানের গড় হার ছিল ৭৩.৭৯ শতাংশ। ২০১৯ সালে এই নয়টি আসনে ভোটদানের গড় হার পাঁচ শতাংশ বেশি ছিল। সে বার ভোটদানের গড় হার ছিল ৭৮.৮৪ শতাংশ।

দমদম লোকসভা কেন্দ্রে এ বারও তৃণমূল বিদায়ী সাংসদ সৌগত রায়কে প্রার্থী করেছিল। তাঁর কেন্দ্রে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে আসা শীলভদ্র দত্তকে প্রার্থী করে পদ্মশিবির। সৌগত এবং শীলভদ্রের বিরুদ্ধে কংগ্রেস সমর্থিত বামপ্রার্থী সুজন চক্রবর্তী। বারাসত লোকসভা কেন্দ্রেও দমদমের মতো বিদায়ী সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বিজেপি দাঁড় করিয়েছিল স্বপন মজুমদারকে। কমিশন সূত্রে খবর, এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৭২.৩৭ শতাংশ। ২০১৯ সালে ভোটদানের হার ছিল ৭৬.৯৮ শতাংশ।

Advertisement

শনিবার রাজ্যের যে নয়টি আসনে ভোটগ্রহণ হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে বসিরহাট। সেখানকার বিদায়ী সাংসদ নুসরত জাহানের বদলে তৃণমূল এ বার প্রার্থী করেছে হাজি নুরুল ইসলামকে। বসিরহাটে রেখা পাত্রকে এ বার প্রার্থী করে চমক দিয়েছিল পদ্মশিবির। রেখা সন্দেশখালির আন্দোলন থেকে বঙ্গ-রাজনীতির আলোকবৃত্তে উঠে এসেছেন। সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ আছড়ে পড়ার পর থেকেই সংবাদমাধ্যমের পর্দায় বার বার ভেসে উঠেছিল তাঁর মুখ। নারী নির্যাতনের অভিযোগ তুলে শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে অচিরেই ‘প্রতিবাদী মুখ’ হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিলেন তিনি। সেই বসিরহাটে শনিবারের ভোটগ্রহণের হার ৮২.৮১ শতাংশ। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল ৮৫.৫১ শতাংশ।

যাদবপুরে গতবারের বিজয়ী প্রার্থী মিমি চক্রবর্তীর বদলে রাজ্যের শাসকদল প্রার্থী করেছে তৃণমূলের যুবনেত্রী সায়নী ঘোষকে। সেই কেন্দ্রে সায়নীর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন সিপিএমের তরুণ তুর্কি সৃজন ভট্টাচার্য। বিজেপি প্রার্থী করেছিল অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়কে। কমিশন সূত্রে খবর, এই কেন্দ্রে শনিবার ভোট পড়েছিল ৭১.৮৫ শতাংশ। যা ২০১৯ সালের থেকে কম। সে বার এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল ৭৯.১৪ শতাংশ।

হেভিওয়েট প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের মালা রায়ও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র কলকাতা দক্ষিণে তৃণমূল ভরসা রেখেছে তাঁর উপরেই। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীকে প্রার্থী করে। আর এই দুই হেভিওয়েটের বিরুদ্ধে সায়রা শাহ হালিমকে প্রার্থী করেছিল সিপিএম। এই কেন্দ্রে শনিবার ভোট পড়েছিল ৬৪.৭১ শতাংশ। ২০১৯ সালে কলকাতা দক্ষিণে ভোট পড়েছিল ৬৯.৮৪ শতাংশ।

কলকাতা উত্তরেও প্রার্থী বদল করেনি তৃণমূল। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই প্রার্থী করে বাংলার শাসকদল। ভোটের মুখে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেন তাপস রায়। বিজেপিতে যোগদানের পর লোকসভা নির্বাচনে তাঁকে সুদীপের বিরুদ্ধে কলকাতা উত্তরেই টিকিট দেয় বিজেপি। এ বার সেই কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৫৯.৯৯ শতাংশ। ন’আসনের মধ্যে সবচেয়ে কম ভোট পড়েছে এই কেন্দ্রেই। ২০১৯ সালে কলকাতা উত্তরে ভোট পড়েছিল ৬৫.৮৪ শতাংশ।

মথুরাপুরের তৃণমূলের প্রার্থী বাপি হালদার ভোট ময়দানে নতুন। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির হয়ে লড়েছেন অশোক পুরকায়েত। সেই কেন্দ্রে এ বার ভোট পড়েছে ৮০.৭৩ শতাংশ। ২০১৯ সালে মথুরাপুরে ভোট পড়েছিল ৮৪.৯১ শতাংশ। শনিবার গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল প্রার্থী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর আগে পর পর দু’বার জিতে ওই কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়েছেন তিনি। এ বার তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছিল অভিজিৎ দাসকে। সপ্তম দফায় এই কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল ৭৬.৬২ শতাংশ। তবে ২০১৯ সালে বেশি ভোট পড়েছিল এখানে। সে বার ভোটদানের হার ছিল ৮২.০১ শতাংশ।

জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রের বিদায়ী সাংসদ প্রতিমা মণ্ডলকে এ বারও প্রার্থী করেছিল তৃণমূল। তাঁর বিরুদ্ধে অশোক কান্ডারিকে প্রার্থী করে বিজেপি। শনিবার এই কেন্দ্রে ভোটদানের হার ছিল ৭৬.৮৪ শতাংশ। ২০১৯ সালে জয়নগর লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছিল ৮২.৩২ শতাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement