লোকসভা ভোটে বেসরকারি গাড়ির ভাড়া জানাল রাজ্য সরকার। — ফাইল চিত্র।
দিন ঘোষণা না হলেও ভোটের বাদ্যি বেজে গিয়েছে দেশ জুড়ে। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পশ্চিমবঙ্গে ঘুরে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। এই আবহে ভোটের কাজের জন্য গাড়ি ভাড়া নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল এই রাজ্যে। কোন গাড়ি কত টাকায় ভাড়া নেওয়া হবে, তা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিল রাজ্য সরকার।
নির্বাচনের কাজের জন্য বাস-সহ অনেক যাত্রিবাহী গাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়। সেই তালিকায় থাকে লঞ্চও। সেই সব যান ভাড়া নিলে এ বার মালিকদের কত টাকা করে দেবে কমিশন, তা স্থির করে দিল সরকার। জানা গিয়েছে, গত বারের নির্বাচনের তুলনায় এ বারে ভোটে গাড়ি ভাড়া ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গাড়ির সঙ্গে থাকা চালক এবং খালাসিদের জন্য খোরাকিও বৃদ্ধি করা হয়েছে ২৫ শতাংশ।
এ বার দিনপিছু সাধারণ বাসের ভাড়া ২৫৩০ টাকা রাখা হয়েছে। মিনি বাসের জন্য ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ২০৯০ টাকা। এ ছাড়াও ছোট যাত্রিবাহী গাড়ির (চালক-সহ সাত জন যাত্রী) ভাড়া রাখা হয়েছে ৮৯০ টাকা। পাশাপাশি এ বছর নির্বাচনে ছোট, বড় ‘ম্যাক্সি ক্যাব’ নেওয়া হচ্ছে। ছোট ‘ম্যাক্সি ক্যাব’-এর ভাড়া ১৩১০ টাকা এবং বড় ‘ম্যাক্সি ক্যাব’-এর ভাড়া ১৫৬০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অনেক ভারী গাড়িও ব্যবহার করা হবে নির্বাচনে। ট্র্যাক্টর, অটো, ই-অটোও থাকবে নির্বাচনের কাজে। সেই সব যানের জন্য ভাড়া স্থির করা হয়েছে যথাক্রমে ১৩২০ টাকা, ৫০০ টাকা, ৭৭০ টাকা। নন এসি গাড়ি পাশাপাশি কিছু এসি গাড়িও ভাড়া করা হবে বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফে।
উল্লেখ্য, ভোটের কাজের জন্য যে সব গাড়ি নির্বাচন কমিশন ব্যবহার করে, তা ঠিক করে দেওয়ার দায়িত্ব থাকে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের উপরেই। লোকসভা ভোটে ভাড়া বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিল এ রাজ্যের পরিবহণ সংগঠনগুলি। অনেকের মতে, সেই কথা মাথায় রেখেই এ বার বাস ভাড়া আগের তুলনায় ১০ শতাংশ এবং খোরাকি খরচ ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু বাস নয়, অন্যান্য গাড়ির ভাড়াও বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে খবর।
তবে ১০ শতাংশ বৃদ্ধিতে খুশি নয় বাস-মিনি বাস সমন্বয় সমিতি। এই সংগঠনের পক্ষে রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওড়িশা সরকার নির্বাচনের জন্য দিনপিছু সাধারণ বাসের ভাড়া ৩৮০০ টাকা করেছে। আমাদের সরকারের কাছে আবেদন, ওড়িশা তো এ দেশের বাইরে নয়। তাই সে রাজ্যের সরকার যেখানে বাস মালিকদের অবস্থার কথা ভাবছে, সেখানে আমাদের কথাও ভাবা হোক। রাজ্য সরকারের কাছে ভাড়া আরও বাড়ানোর আবেদন জানাচ্ছি।’’ অন্য দিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন সিটি সাব-আরবান বাস সার্ভিসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা গত ১৬ ফেব্রুয়ারি রাজ্যে পরিবহণ দফতরের আধিকারিক সৌমিত্র মোহনের সঙ্গে দেখা করে ভাড়া বৃদ্ধি করার কথা জানিয়েছিলাম। সরকার যে আমাদের কথা ভেবেছে, তাতে খুশি।’’