উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতার গণনাকেন্দ্রগুলিতে আঁটসাঁট নিরাপত্তা। ছবি: সারমিন বেগম।
সাত দফার ভোটপর্ব শেষ হয়েছে শনিবার। এ বার গণনার পালা। মঙ্গলবার রাজ্যের ৪২টি কেন্দ্রের জন্য মোট ৫৫টি কেন্দ্রে গণনা চলবে। কলকাতা উত্তর এবং কলকাতা দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের গণনা হবে শহরের মোট আটটি গণনাকেন্দ্রে। কলকাতা উত্তর কেন্দ্রের ভোটগণনা হবে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। আর কলকাতা দক্ষিণে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের জন্য থাকছে একটি করে গণনাকেন্দ্র। মোট সাতটি গণনাকেন্দ্রে ভোট গোনার কাজ চলবে।
সোমবার থেকেই নেতাজি ইন্ডোরকে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় তল্লাশির পরেই গণনাকেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে কাউকে। সোমবার সকালে নেতাজি ইন্ডোরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। অস্থায়ী ভাবে লাগানো হচ্ছে কোলাপসিবল্ গেট। গণনাকেন্দ্রের বাইরে পুলিশ আধিকারিকেরা ঢুকলেও তাঁদের রীতিমতো কৈফিয়ত দিয়ে ভিতরে ঢুকতে হয়েছে।
সোমবার নেতাজি ইন্ডোরে যান কমিশনের পদস্থ আধিকারিকেরাও। তাঁরা শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন। অনেকেই কাজের পরিকল্পনা ছকে নেন। কমিশন সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে সাড়ে ৬টার মধ্যেই গণনাকেন্দ্রে পৌঁছে যাবেন তাদের আধিকারিকেরা। সোমবার সকালেই নেতাজি ইন্ডোরে যান কলকাতা উত্তরের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়। গণনাকেন্দ্র সরেজমিনে ঘুরে দেখেন তিনি। নেতাজি ইন্ডোর ছাড়ার সময় তাপস বলেন, “এখনও পর্যন্ত সব ঠিকই আছে। প্রয়োজনে রাতের দিকে আবার আসব।” জয়ের ব্যাপারে প্রত্যয়ী সুরে তাপস বলেন, “দেশে, রাজ্যে এবং কলকাতা উত্তরে আমরা ভাল ফল করব। দেশে ৪০০ পার হবে, বাংলায় ৩০ পার হবে।”
কলকাতা দক্ষিণ কেন্দ্রের ভোটগণনা হবে কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, জোকার ব্রতচারী বিদ্যাশ্রম হায়ার সেকেন্ডারি স্কুল, ঠাকুরপুকুরের বিবেকানন্দ কলেজ, সেন্ট টমাস বয়েজ স্কুল, সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাই স্কুল, বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট হাই স্কুল এবং বাবাসাহেব অম্বেডকর এডুকেশন ইউনির্ভাসিটিতে। এই গণনাকেন্দ্রগুলিতেও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। স্ট্রংরুমের পাহারায় মোতায়েন করা হয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান জানান, স্ট্রংরুম এবং গণনাকেন্দ্রে তাঁদের যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রাজ্য পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও তাঁদের সর্বত্র যাওয়ার অনুমতি নেই।
সোমবার ভোটগণনার কাজে নিযুক্ত কর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয় কমিশন। বহু গণনাকেন্দ্রে সোমবার থেকেই নাম লেখার পর ভিতরে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মোবাইল কিংবা ইলেকট্রনিক সামগ্রী নিয়ে গণনাকেন্দ্রের ভিতরে ঢোকা যাবে না।
নির্বাচন কমিশনের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, রাজ্যের প্রতিটি গণনাকেন্দ্রে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা থাকবে। প্রথম স্তরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। দ্বিতীয় স্তরে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং রাজ্য পুলিশের সশস্ত্র বাহিনী। শেষ স্তরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন স্থানীয় থানার পুলিশ আধিকারিকেরা। এই আটটি গণনাকেন্দ্রেও তার অন্যথা হবে না। রাজ্যের মোট ৫৫টি গণনাকেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হচ্ছে ৯২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী।