ছবি: পিটিআই ।
হাওড়ার পর হুগলি। আবার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ানের বিরুদ্ধে। তা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় বাহিনী এবং বিজেপির বিরুদ্ধে একযোগে আক্রমণ শানিয়েছে তৃণমূল। অভিযোগ উঠেছে, রবিবার রাতে হুগলির জাঙ্গিপাড়ায় একটি বাড়িতে ঢুকে এক গৃহবধূকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বুথে কাজ করতে আসা আইটিবিপি-র এক কনস্টেবল। সেই সময় ওই গৃহবধূ ঘুমোচ্ছিলেন। অভিযোগ, ঘুমন্ত অবস্থাতেই ওই মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অভিযুক্ত জওয়ান। মহিলার পরিবার এবং প্রতিবেশীদের মারধরের অভিযোগও উঠেছে ওই জওয়ানের বিরুদ্ধে। এর পরেই ওই জওয়ানকে ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। গাছে বেঁধে রেখে মারধর করে পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে খবর। ইতিমধ্যেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ওই জওয়ানকে আটক করেছে পুলিশ। ওই জওয়ানকে গাছে বেঁধে মারধরের একটি ভিডিয়োও ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে। যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
মহিলার শ্লীলতাহানির ঘটনা নিয়ে সরব হয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘একটা কী অভিযান শুরু হয়েছে? রবিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এসেছিলেন বাংলায়। একই দিনে উলুবেড়িয়ায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে এক জন মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন। ওই মহিলাকে কুপ্রস্তাব দেওয়া হয়, অত্যাচার করা হয়। এর পর আবার প্রধানমন্ত্রী সভা করে চলে যাওয়ার পর হুগলির জাঙ্গিপাড়াতেও একই অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক জওয়ান একেবারে বাড়িতে ঢুকে মহিলার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। বাংলায় সুষ্ঠু ভাবে ভোট হোক, তা চায় না বিজেপি। কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোটারদের বিজেপির হয়ে ভোট দেওয়ার জন্য প্ররোচনা দিচ্ছে। যে ভাবে বাংলার মহিলারা কেন্দ্রীয় বাহিনীর হাতে আক্রান্ত হচ্ছেন, তার বিরুদ্ধে কথা বলছে তৃণমূল।’’ বাকি দলগুলি কেন এই নিয়ে আওয়াজ তুলছে না, তা নিয়েও আক্রমণ শানিয়েছেন শশী।
জাঙ্গিপাড়ার যে গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে, সেখানে যান শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামের মহিলাদের সঙ্গে কথা বললেন তিনি। কী ঘটেছিল, তা শোনেন। এই নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘বাহিনীর হাতে আবার মহিলার শ্লীলতাহানি হয়েছে। যে রক্ষক, সেই ভক্ষক।’’
কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিকও। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান যা করেছে, তা নিয়ে কেন্দ্র জবাব দিক বলেও তিনি দাবি জানিয়েছেন। কাঞ্চনের কথায়, ‘‘এই নিয়ে কেন্দ্র জবাব দিক। কর্তব্যরত অবস্থায় এক জন জওয়ান কী ভাবে বাড়িতে ঢুকে মহিলার শ্লীলতাহানি করতে পারে? মানুষ এর জবাব দেবে। আমি সবাইকে বলব চোখ-কান খুলে রেখে ভোট দিয়ে আসুন।’’
উল্লেখ্য, রবিবারও হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় নির্বাচনী কর্তব্য করতে আসা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানের বিরুদ্ধে এক স্থানীয় মহিলাকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছিল। রবিবার সকালে উলুবেড়িয়ার চণ্ডীপুরে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই মহিলা অভিযোগ করেছেন, রবিবার সকাল ৬টা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটে উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ায়। গ্রামের ফাঁকা রাস্তায় প্রাতর্ভ্রমণরত ওই মহিলাকে দেখে দুই উর্দি পরিহিত জওয়ান অশ্লীল ইঙ্গিত করেন, কুপ্রস্তাবও দেন। প্রতিবাদ করলে এক জন জওয়ান তাঁকে জড়িয়ে ধরেন এবং চুম্বন করেন। মহিলা চিৎকার করলে এক জন জওয়ান পালিয়ে যান। গ্রামবাসীরা অন্য জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন।