প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের পর জাতীয় রাজনীতি উত্তর এবং দক্ষিণ আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। উত্তরে বিজেপির নিরঙ্কুশ দাপট থাকলেও দক্ষিণে তাদের উপস্থিতি নগণ্য। কিন্তু এ বার দাক্ষিণাত্যে পদ্ম ফোটাতে চলতি বছরের গোড়া থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তৎপরতা চোখে পড়ার মতো। এই আবহে আজ থেকে দু’দিনের কেরল এবং তামিলনাড়ু সফর শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কেরলে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস এবং সিপিএম-কে এক বন্ধনীতে রেখে তীব্র আক্রমণ করলেন তিনি।
তিরুঅনন্তপুরমে আজ জনসভায় কংগ্রেস এবং সিপিএম-কে ‘বিএফএফ’, অর্থাৎ বেস্ট ফ্রেন্ড ফরেভার বলে কটাক্ষ করেছেন মোদী! বললেন, “কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে বাম এবং কংগ্রেসের সম্পর্ক আদায়-কাঁচকলায়। অথচ দিল্লিতে সমীকরণ একদম আলাদা। আবার পশ্চিমবঙ্গে অন্য রকম সমীকরণ দুই দলের।”
প্রধানমন্ত্রীর আক্রমণ থেকে বাদ যাননি কেরলের সিপিএমের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও।
তিনি বলেছেন, “কমিউনিস্টরা কংগ্রেসের উপর লাঠিচার্জ করেছে। তবে কেরলের বাইরে ‘ইন্ডিয়া’য় এদের গলায় গলায় বন্ধুত্ব। একসঙ্গে বসে, শিঙাড়া-বিস্কুট আর চা খায়। তিরুঅনন্তপুরমে তারা এক রকম কথা বলে আর দিল্লিতে গিয়ে অন্য কথা বলে।”
এর পরই পরিবারতন্ত্রের পরিচিত প্রসঙ্গ তুলে মোদী বলেন, “কংগ্রেস আর কমিউনিস্টদের একটাই উদ্দেশ্য, দেশের কল্যাণে নয়, নিজেদের পরিবারের কল্যাণই ওদের একমাত্র লক্ষ্য।”
লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ ‘চারশো পার’-এর ডাক দিয়েছেন মোদী। আর তা করতে হলে দক্ষিণে আসন বাড়াতেই হবে বিজেপিকে। মোদীর কথাতেও তা স্পষ্ট। বলছেন, ‘‘গত বছর যখন এখানে এসেছিলাম, তখন হাজার হাজার মানুষ আশীর্বাদ করার জন্য রাস্তার পাশে জড়ো হয়েছিলেন। আমি কেরলের মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালবাসা পেয়েছি।’’
প্রত্যয়ী স্বরে প্রধানমন্ত্রী আজ জানিয়েছেন, লোকসভা ভোটের আগে তিনি কেরলের মানুষের মধ্যে এ বার নতুন উদ্দীপনা দেখতে পাচ্ছেন। বিষয়টি যে নেহাতই ভোট নির্ভর নয়, সে কথা স্পষ্ট করতে চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিজেপি কখনওই ভারতের কোনও রাজ্যকে ভোট-ব্যাঙ্কের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখেনি। এমনকি, যখন কেরলে বিজেপি শক্তিশালী ছিল না, তখনও আমরা কেরলে দিনরাত কাজ করেছি। গত ১০ বছরে উন্নয়নের সুফল পাওয়া গিয়েছে।’’
ওই দক্ষিণী রাজ্যের বাম নেতৃত্বাধীন সরকারকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এলডিএফ এবং ইউডিএফ কেরলের শিক্ষা ব্যবস্থার কী ক্ষতি করেছে তা সকলেই জানেন। কেরলের দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির ছাত্ররা উচ্চ শিক্ষার সময় যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল তা-ও অজানা নয়। আমরা কেন্দ্রে তৃতীয় বার এলে, কেরলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠাগুলির উন্নয়নের কাজ করব। দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার পথ প্রশস্ত করবে
মোদী সরকার।”