অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। — ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহারকে কটাক্ষ করতে গিয়ে পাকিস্তানকে টেনে আনলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। ‘‘ভারত নয়, পাকিস্তানের জন্য ইস্তেহার বানিয়েছে কংগ্রেস’’, এ ভাবেই নিজের পুরনো দলকে নিশানা করলেন বিজেপি নেতা তথা অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছে হাত শিবিরও। পুরনো সঙ্গীকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস জানায়, ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বোঝার ক্ষমতা নেই হিমন্তের।
লোকসভা নির্বাচনের দামামা বাজার পর থেকেই ভোট প্রচারে নেমে পড়েছে প্রায় সব রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন জনসভা থেকে বিপক্ষকে আক্রমণ করতে ছাড়ছেন না কোনও রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী। ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে আক্রমণের ঝাঁঝ। তার মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলি প্রার্থী ঘোষণা থেকে শুরু করে ইস্তাহার প্রকাশও করছে। সম্প্রতি কংগ্রেস তাদের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করেছে। তার পর থেকেই বিজেপি নেতানেত্রীরা সেই ইস্তাহার নিয়ে কংগ্রেসকে নানা ভাবে কটাক্ষ করছেন।
শনিবার কংগ্রেসের ইস্তাহার নিয়ে বলতে গিয়ে হিমন্ত বলেন, ‘‘এটা তোষণের রাজনীতি। ওই ইস্তাহার দেখে মনে হচ্ছে সেটা ভারতের জন্য নয়, পাকিস্তানের জন্য তৈরি করা হয়েছে।’’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘‘দেশে কোনও ব্যক্তি, তিনি হিন্দু হোক বা মুসলিম কেউই তিন তালাককে ফিরিয়ে আনতে চান না। এমনকি, বাল্যবিবাহ বা বহুগামিতাকে সমর্থন করেন না। কিন্তু কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে এরা সমাজকে বিভক্ত করে দেবে।’’
পুরনো সঙ্গী হিমন্তের কথার পাল্টা জবাবে অসম কংগ্রেসের মুখপাত্র বেদব্রত বোরা দাবি করেন, হিমন্তের মতো দলবদলুরা কখনই ধর্মনিরপেক্ষতা নীতি বুঝবেন না। তিনি বহু দন কংগ্রেস দলের সদস্য ছিলেন। কিন্তু দলের নীতি বুঝতে না পেরে কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপির প্রতি নিজের আনুগত্য প্রমাণ করতেই কংগ্রেসের সম্মানহানি করছেন হিমন্ত।
উল্লেখ্য, শুক্রবার দিল্লিতে সনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী, মল্লিকার্জুন খড়্গের উপস্থিতিতে লোকসভা ভোটের ইস্তাহার প্রকাশ করে কংগ্রেস। এ বার কংগ্রেস তাঁর ইস্তাহারের নাম রেখেছে ‘ন্যায়পত্র’। তাদের ‘ন্যায়পত্র’-এ দেশের ৩০ লক্ষ সরকারি শূন্যপদে চাকরি, ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নগদহীন স্বাস্থ্যবিমা, মহিলাদের আর্থিক সহায়তা, জাতগণনা এবং ৫০ শতাংশ পর্যন্ত জাতভিত্তিক সংরক্ষণ (এসসি, এসটি এবং ওবিসিদের জন্য), আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া উচ্চবর্ণের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।
শুধু হিমন্ত নন, অন্যান্য বিজেপি নেতানেত্রীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ইস্তাহার প্রসঙ্গে কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেছেন। শনিবার জনসভা থেকে মোদী বলেন, “ইস্তাহারে গুচ্ছ গুচ্ছ মিথ্যা কথা বলে কংগ্রেস নিজেদের মুখোশ খুলে দিয়েছে। প্রতি পাতায় ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার কথা বলা হয়েছে। স্বাধীনতার আগে মুসলিম লিগের ভাবনার প্রতিফলন রয়েছে এই ইস্তাহারে। এখানে কমিউনিস্ট এবং বামপন্থীদের চিন্তাধারার প্রতিফলনও ঘটেছে।”