(বাঁ দিকে) সুকান্ত মজুমদার এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
আবার পশ্চিমবঙ্গে ভোটপ্রচারে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত মাস দেড়েকের মধ্যে বেশ কয়েক বার এ রাজ্যে এসে সভা করেছিলেন তিনি। তবে লোকসভা ভোট ঘোষণার পর কোচবিহারে প্রথম সভা করতে চলেছেন মোদী। বিজেপি সূত্রে খবর, সব ঠিকঠাক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবার এই সভা হতে পারে। শুধু কোচবিহার নয়, রবিবারও জোড়া সভা রয়েছে উত্তরবঙ্গে। বালুরঘাট এবং জলপাইগুড়িতে সভা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
ভোট ঘোষণার আগে থেকেই বাংলায় মোদী আসা-যাওয়া শুরু করেছিলেন। তবে ভোট ঘোষণার পর বৃহস্পতিবারই কোচবিহারে মোদী প্রথম সভা করতে চলেছেন। আরামবাগ, কৃষ্ণনগর, বারাসত,শিলিগুড়িতে সভা করেছেন মোদী। সূত্রের খবর, এ বারের ভোটে পশ্চিমবঙ্গকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে বিজেপি নেতৃত্ব। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের থেকে এ বারে পশ্চিমবঙ্গে আরও বেশি আসন জিততে চাইছে তারা। আর প্রধানমন্ত্রীকে সামনেই রেখেই প্রচার শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপি। গোটা ভোটপর্বে এ রাজ্যে মোদী ৩০-এর বেশি সভা করবেন বলে ঠিক রয়েছে।
ভোট ঘোষণার পর কোচবিহার থেকেই বাংলায় প্রচার অভিযান শুরু করছেন মোদী। প্রথম দফাতেই কোচবিহারে ভোট রয়েছে। কোচবিহার ছাড়াও ১৯ এপ্রিল ভোট রয়েছে উত্তরবঙ্গের আরও দুই জেলা আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়িতেও। সেই কথা মাথায় রেখেই মোদীর প্রথম সভা হিসাবে কোচবিহারের রাজবংশী এলাকাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, কোচবিহারের রাসলীলা ময়দানে সভা হওয়ার কথা।
বিজেপি সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারের পরে রবিবার মোদী পশ্চিমবঙ্গে জোড়া সভা করবেন। বঙ্গ বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের লোকসভা কেন্দ্র বালুরঘাটে রবিবার দুপুর আড়াইটের সময় সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী। তার পর সেখান থেকেই তিনি জলপাইগুড়িতে যাবেন। বিকেল সাড়ে ৪টেয় সেখানে সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এই সভাতেই আলিপুরদুয়ার থেকে কর্মী, সমর্থক নিয়ে আসবে বিজেপি।
কোচবিহারে এ বার বিজেপি নিশীথ প্রামাণিককে প্রার্থী করেছে বিজেপি। আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি থেকে যথাক্রমে মনোজ টিগ্গা এবং জয়ন্ত রায়কে প্রার্থী করেছে পদ্ম শিবির।
কেন বিজেপি এ বার দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে কোচবিহারকে আলাদা করে গুরুত্ব দিচ্ছে? উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহারের ‘স্বঘোষিত’ মহারাজ অনন্ত রায়কে কাছে টানতে অনেক কিছুই করতে হয়েছিল বিজেপিকে। স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজবংশী ভোট টানার লক্ষ্যে অনন্তকে মানাতে চলে গিয়েছিলেন মহারাজের অসমের বাড়িতে। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি কিছুটা বেসুরো। এখন বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ হলেও দলের বিরুদ্ধেই ক্ষুব্ধ অনন্ত। কয়েক মাস আগেই রাজবংশী অধ্যুষিত ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে জেতা আসন খোয়াতে হয়েছে বিজেপিকে। উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জেতা নির্মলচন্দ্র রায়কেই লোকসভা ভোটে প্রার্থী করেছে ঘাষফুল শিবির। ফলে রাজবংশী ভোটে বিজেপির একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে বলা যাবে না। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, তাই দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে রাজবংশী ভোট নিশ্চিত করতেই মোদী সফর শুরু করছেন কোচবিহার থেকেই।