দিল্লিতে বৈঠকে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা ভোটের রাজ্যওয়াড়ি ফল বিশ্লেষণ করে হারের কারণগুলি চিহ্নিত করা হবে। শনিবার দুপুরে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বর্ধিত বৈঠকে এ কথা জানালেন দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, কংগ্রেস শাসিত যে রাজ্যগুলিতে লোকসভা ভোটে দলের ফল খারাপ হয়েছে, সেগুলিতে বিশেষ ভাবে নজর দেওয়ার কথা বলেছেন খড়্গে।
২০১৪ সালে ৪৪ এবং ২০১৯-এ ৫২টি আসনে জেতা কংগ্রেস এ বার লোকসভা নির্বাচনে ৯৯টি আসন জিতে ‘প্রধান বিরোধী দল’-এর মর্যাদা পুনরুদ্ধার করেছে। তবে জাতীয় প্রেক্ষাপটে তুলনামূলক ভাল ফল করলেও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছেন, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তীসগঢ়, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, উত্তরাখণ্ড এবং কংগ্রেস শাসিত কর্নাটক ও হিমাচল প্রদেশে দলের ফল খুবই খারাপ হয়েছে। মাত্র ছ’মাস আগে বিধানসভা ভোটে বিপুল ভাবে জেতা তেলঙ্গানাতেও এ বার কংগ্রেসের সঙ্গে সমানে টক্কর দিয়েছে বিজেপি।
কংগ্রেস শাসিত হিমাচলের চারটি লোকসভাই বিজেপি জিতেছে। শুধু তা-ই নয়, মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখুর বিধানসভা কেন্দ্র-সহ সব বিধানসভা এলাকাতেই কংগ্রেস পিছিয়ে রয়েছে। অথচ হিমাচলের ছয় বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কের সদস্যপদ খারিজের পরে সেখানে উপনির্বাচন হয়েছিল। তার মধ্যে চারটি কেন্দ্রে কংগ্রেস জিতেছে। কংগ্রেস হাইকমান্ড মনে করছে, রাজ্যে সরকার বাঁচাতে হিমাচলের কংগ্রেস নেতারা লোকসভা ভোটের বদলে বিধানসভার উপনির্বাচনে বেশি মন দিয়েছিলেন।
খড়্গের রাজ্য কর্নাটকে ঠিক এক বছর আগে বিধানসভা ভোটে ক্ষমতা দখল করেছিল কংগ্রেস। সেখানে ২৮টি আসনের মধ্যে মাত্র ন’টিতে জিতেছে ‘হাত’। বিজেপি ১৭ এবং তাদের সহযোগী জেডিএস দু’টিতে। লিঙ্গায়েত জনগোষ্ঠীর ভোট আবার বিজেপিমুখী হওয়ায় এবং দক্ষিণ কর্নাটকে ভোক্কালিগা ভোটে জেডিএস ভাগ বসানোতেই এমন ফল বলে দলের একাংশ মনে করছেন। দাক্ষিণাত্যের আর এক রাজ্য তেলঙ্গানায় ১৭টি লোকসভা আসনের মধ্যে কংগ্রেস এবং বিজেপি দু’দলই আটটি করে আসনে জিতেছে। হায়দরাবাদে আবার জিতেছেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম) দলের প্রধান তথা বিদায়ী সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি।
এই পরিস্থিতিতে লোকসভা ভোটের ফলাফল পর্যালোচনার জন্য শনিবার দুপুর থেকে শুরু হয়েছে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারক মঞ্চ, ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। ১৯৯৯ এবং ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর কংগ্রেসের তৎকালীন সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকেই প্রবীণ নেতা একে অ্যান্টনিকে মাথায় রেখে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। সেই কমিটির সুপারিশ মেনে সাংগঠনিক স্তরে কিছু পদক্ষেপও করা হয়েছিল। এ বারও খড়্গে রাজ্যওয়াড়ি ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় রদবদলের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।