—প্রতীকী চিত্র।
দীর্ঘ দিন ধরে গ্রাম ছাড়া জঙ্গিপুরের প্রায় দেড়শো বাসিন্দা। লোকসভা ভোটের আগে গ্রামে ফিরতে চেয়ে দেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের কাছে আর্জি জানিয়ে তাঁর হস্তক্ষেপ চাইলেন। সূত্রের খবর, তাঁরা সকলেই কংগ্রেস ও বাম সমর্থক। তাঁরা ভারত–বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া চর বাজিতপুর গ্রামের বাসিন্দা। ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে গ্রামছাড়া রয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই সীমান্তের ওই গ্রামে কংগ্রেস সমর্থকদের উপরে মারধর ও অত্যাচার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। সংঘর্ষ ঘটেছে গিরিয়াতেও। হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে দু’জনকে।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সোমনাথ সিংহরায় বলেন, “গ্রামছাড়াদের বেশির ভাগেরই বাড়িঘর লুট করা হয়েছে, আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁদের আত্মীয় পরিজনেরাও পাশের গ্রামে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন প্রাণের ভয়ে। এর আগেও তাঁদের ঘরে ফেরাতে প্রশাসনের সাহায্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। ৭ মে গ্রামে ভোট রয়েছে। গ্রামে ফিরতে না পারলে তাঁরা নিজেদের ভোট দিতে পারবেন না। সেই কারণেই দিল্লির মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে লিখিত ভাবে অভিযোগ জানানো হয়েছে।”
কংগ্রেসের রঘুনাথগঞ্জ ২ ব্লকের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, “নির্বাচনের আগে বাজিতপুর ও পিরোজপুর চরের গ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা দরকার। কারণ গ্রামে বিরোধী দলের সমর্থক ও কর্মীদের এখন থেকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বুথে না যেতে। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বহু খুনের অভিযুক্তরা ঘুরে বেড়াচ্ছে এলাকায়। তাই রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভা এলাকার গিরিয়া, সেকেন্দ্রার কিছু অংশ ও দুই চরের গ্রাম পিরোজপুর ও বাজিতপুরে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহল শুরু করা হোক। ঘরছাড়াদের ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করুক নির্বাচন কমিশন।”
রাকিয়া বিবি বলেন, “বাড়িতে ৬ জনের ভোট রয়েছে। ৬ জন নাবালক ছেলেমেয়ে। গ্রামছাড়া থাকায় তাদের পড়াশোনা বন্ধ হতে বসেছে।” ইশা শেখের বাড়িতে রয়েছেন ১৪ জন। ৮ জনের পরিবার ছবিবিবির। ভোটার রয়েছেন ৫ জন। তাঁর অভিযোগ, “আমাদের গ্রামে ঢোকার ব্যাপারে পদক্ষেপ করুক নির্বাচন কমিশন। পুলিশকে বলেছি, কোনও কাজ হয়নি।” ১০ জন ভোটার সহ ২০ জনের পরিবার রসুল শেখের। তিনি বলেন, “গ্রাম ছাড়া বহু দিন। জানি না ঘরবাড়ি এখন কী অবস্থায় রয়েছে।”
তৃণমূলের পক্ষ থেকে কিছু মানুষের গ্রাম ছেড়ে থাকার কথা স্বীকার করা হয়েছে। তৃণমূলের এক নেতা বলেন, ‘‘গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের দুই ভাই খুন হন। তারপর থেকেই তাঁরা নিজেরাই গ্রাম ছেড়ে রয়েছেন।’’ তারা গ্রামে এলে নতুন করে অশান্তি শুরুর আশঙ্কাও করছে তৃণমূল।