Arms Smuggling racket

অস্ত্রের রমরমা রুখতে চাই অভিযান, ধরপাকড়ও

পঞ্চায়েতের সচিব তো দূরের কথা, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ়ে থাকা অভিযুক্তের কোনও সঙ্গীকেও গ্রেফতার করা হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের একাংশের।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩৩
Share:

এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

চারপাশে ঘন জনবসতি। মাঝে ব্যস্ত রাজ্য সড়ক। দিনের আলোয় দুষ্কৃতীরা ধাওয়া করে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেয় মালদহের ‘ওজনদার’ তৃণমূল নেতা তথা ছয় বারের পুরপ্রতিনিধি দুলাল সরকার ওরফে বাবলাকে (৬২)। খুনের সময়ের সিসিটিভি ক্যামেরার সেই ফুটেজ় এখন সমাজ মাধ্যমে ‘ভাইরাল’। প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দুষ্কৃতীরা দাপাদাপির সাহস পাচ্ছে কী ভাবে? আগ্নেয়াস্ত্রই বা কোন পথে পৌঁছে যাচ্ছে তরুণ, যুবকদের হাতে? জেলাবাসীর একাংশের মনে এমনই অনেক প্রশ্ন।

Advertisement

তবে জেলার কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরের মতো থানা এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপির ভিডিয়ো দেখার অভিজ্ঞতা অনেকেরই রয়েছে। তবে হবিবপুরের বুলবুলচণ্ডীর মতো ‘শান্ত’ এলাকায় এ ঘটনা যেন ছিল নজিরবিহীন। অভিযোগ, দেড় মাস আগে বুলবুলচণ্ডীর ষোলাডাঙায় তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়ির সামনে প্রেমঘটিত বিবাদের জেরে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাপাদাপি করতে দেখা গিয়েছিল গ্রাম পঞ্চায়েতেরই সচিব সুদীপ্ত সিংহকে। সিসিটিভি ক্যামেরার সেই ফুটেজ়ও সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। পুলিশেও অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ অস্ত্র আইনের ধারায় মামলা রুজু করে। তবে ওই পর্যন্তই। পঞ্চায়েতের সচিব তো দূরের কথা, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ়ে থাকা অভিযুক্তের কোনও সঙ্গীকেও গ্রেফতার করা হয়নি বলে অভিযোগ গ্রামবাসীদের একাংশের।

গ্রেফতার না হওয়া, অপরাধ করে রেহাই পেয়ে যাওয়ায় কি সাহস পাচ্ছে অপরাধীরা?

Advertisement

মালদহের ভৌগোলিক অবস্থান পুলিশের কাছে একটা বড় সমস্যা ঠিকই। কারণ, জেলার এক প্রান্তে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এবং অন্য প্রান্তে বিহার, ঝাড়খণ্ডের সীমানা। জল-সীমানাও রয়েছে। এ ছাড়া হরিশ্চন্দ্রপুরে এমনও গ্রাম রয়েছে, যেখানে বিহার এবং বাংলা মিলেমিশে রয়েছে। বাংলা-বিহার-ঝাড়খণ্ড, এই তিন রাজ্যের মানুষের যাতায়াতের ‘অবাধ করিডর’ মালদহ। সেই সুযোগ নেয় চোরাকারবারীরাও। পুলিশের দাবি, সেই পথ ধরেই জেলায় আগ্নেয়াস্ত্র পৌঁছয়। নাকা চেকিং করে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারও করা হয়।

শুধু বিহার, ঝাড়খণ্ড থেকে আসা আগ্নেয়াস্ত্রতেই কি বেআইনি অস্ত্রের রমরমা? কালিয়াচক, বৈষ্ণবনগরে এক সময় বেআইনি অস্ত্র কারখানার হদিস মিলেছে একাধিক বার। বিহারের মুঙ্গের থেকে অস্ত্র নির্মাতাদের নিয়ে এসে জেলায় আগ্নেয়াস্ত্র তৈরির কারবারও চলছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, তার জেরেই এখন হাত বাড়ালেই মিলছে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র।

বেআইনি অস্ত্রের কারবার রুখতে অভিযান চালানোর পাশাপাশি ধরপাকড়েরও প্রয়োজন রয়েছে। দুষ্কৃতীই হোক বা পঞ্চায়েত সচিবের মতো ওজনদার কোনও অভিযুক্ত, আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন পুলিশের। তবে এখন দেখার, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবার বন্ধে মালদহে কী কৌশল নেয় পুলিশ?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement