(বাঁ দিকে) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। — ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ তুললেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে। পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানান তিনি। উত্তরপ্রদেশের এক জনসভা থেকে মোদী দাবি করেছিলেন, বিরোধীরা যদি ক্ষমতায় আসে, তবে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি রামমন্দিরের উপর বুলডোজ়ার চালাবে! প্রধানমন্ত্রীর এই দাবি প্রকাশ্যে আসার পরেই শোরগোল পড়ে যায় জাতীয় রাজনীতিতে। খড়্গের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী এমন কথা বলে মানুষকে উস্কানি দিচ্ছেন।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস সভাপতিকে মোদীর মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমরা আজ পর্যন্ত বুলডোজ়ার ব্যবহার করিনি। যাঁরা উস্কানিমূলক বক্তৃতা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী নিজেই এমন করেছেন। উনি জনগণকে উস্কানি দিচ্ছেন। আমাদের সরকার আসার পর আমরা সংবিধান মেনেই সব কিছু রক্ষা করব।’’
ভোটপ্রচারে গোটা দেশ চষে বেড়াচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রায় প্রতি দিনই কোনও না কোনও রাজ্যে জনসভা করছেন। কখনও আবার রোড-শোও করছেন। শুক্রবার উত্তরপ্রদেশে প্রচারে গিয়েছিলেন মোদী। সেই সভা থেকেই বিরোধীদের আক্রমণ করতে গিয়ে রামমন্দিরের প্রসঙ্গ টেনে এনেছিলেন প্রধানমন্ত্রী।
উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেস এবং সমাজবাদী পার্টি (এসপি) জোট করে লড়ছে। সেই জোটকে কটাক্ষ করতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘রামনবমীর দিন এসপির এক নেতা বলেছিলেন, রামমন্দিরের কোনও প্রয়োজন নেই। কংগ্রেসও রামমন্দির নিয়ে রায় বদলানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে ছোটাছুটি করছে। যদি কংগ্রেস-এসপি ক্ষমতায় আসে, তবে ওরা রামলালাকে আবার তাঁবুতে পাঠাবে। মন্দিরের উপর বুলডোজ়ার চালাবে।’’
এখানেই থেমে থাকেননি মোদী। শুক্রবারের সভায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বুলডোজ়ার চালানো নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আদিত্যনাথের থেকে বিরোধীদের শেখা উচিত কোথায় কখন বুলডোজ়ার চালাতে হয়। ওটা মন্দিরের উপর চালানোর কথা নয়।’’
মোদীর এই মন্তব্য নিয়ে কমিশনকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান কংগ্রেস সভাপতি খড়্গে। পাশাপাশি কমিশনের ভূমিকা নিয়েও দুঃখপ্রকাশ করেছেন তিনি। মহারাষ্ট্রে শিবসেনা এবং ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) মধ্যে ভাঙনের কথা সকলের জানা। এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার এবং শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্ডে দলের মধ্যে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন। বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে উদ্ধব ঠাকরের সরকার পতন ঘটান অজিত-একনাথ।
তার পরই দলের নাম এবং প্রতীক নিয়ে টানাপড়েন শুরু হয় দু’দলের মধ্যেই। যদিও কমিশন অজিত এবং একনাথের পক্ষেই রায় দেয়। সেই প্রসঙ্গে খড়্গে বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের অবৈধ সরকার বিশ্বাসঘাতকতা এবং ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছিল। দলীয় প্রতীক আসল দলগুলির থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। তার পর সেই প্রতীক বিজেপিকে সমর্থনকারী দলগুলিকে দেওয়া হয়। এটি আদালত এবং কমিশনের সিদ্ধান্ত, কিন্তু সবটাই মোদীর নির্দেশেই হয়েছে।’’