ভোট প্রচারে দেব। নিজস্ব চিত্র।
“উত্তরপ্রদেশে উত্তরপত্রে ‘জয় শ্রীরাম’ লিখে ছাত্রেরা পরীক্ষায় ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে যাচ্ছে। বাংলায় কেউ যদি ‘জয় বাংলা’ লিখে ৫০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করে যায়, তাতেও খারাপ হবে”— উত্তরবঙ্গের নির্বাচনী জনসভায় মন্তব্য তৃণমূলের তারকা প্রার্থী তথা অভিনেতা দীপক অধিকারী ওরফে দেবের। শনিবার মালদহের মোথাবাড়ির জনসভায় কিছুটা ভিন্ন মেজাজে দেখা গেল ‘সৌজন্যের রাজনীতির’ নজির রাখা দেবকে। সম্প্রতি বাগডোগরায় এক বিজেপি সমর্থক তাঁকে দেখে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়ার পরেই তিনি তাঁকে আলিঙ্গন করেছিলেন। এ দিন সেই পরিচিত শব্দবন্ধেই বিজেপিকে বিঁধলেন অভিনেতা-রাজনীতিক।
রামমন্দির প্রসঙ্গে বিজেপিকে আক্রমণ করে দেব বলেন, “ভোট এলেই ধর্মকে সামনে আনা হচ্ছে। এই ভোট মন্দির-মসজিদ নির্মাণের নয়। হাসপাতাল, স্কুল, রাস্তা নির্মাণের মতো উন্নয়নের ভোট।” এর পরে রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজের উল্লেখ করেন। মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রায়হানের সমর্থনে আয়োজিত সভায় এ দিন চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রসঙ্গেও বিজেপিকে খোঁচা দেন দেব। বলেন, “২০১৪ সালে বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার সময় সবার অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কারও অ্যাকাউন্টে কি ১৫ লক্ষ টাকা ঢুকেছে? বছরে দু’কোটি টাকার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। চাকরি দেওয়া তো দূরের কথা, উল্টে, আমাদের রাজ্যের চাকরি কেড়ে নিয়ে গিয়েছে। দেশে চাকরি নেই।” স্বাধীনতার পরে চাকরির এমন অবস্থা দেশে হয়নি বলে দাবি তাঁরা।
দেব এ দিন দুপুরে হেলিকপ্টারে বহরমপুর থেকে কালিয়াচকের কৃষিবাজারে পৌঁছন। পরে সড়কপথে রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের বিধানসভা মোথাবাড়ির পূর্ত দফতরের মাঠে যান।
দেবকে ঘিরে নবীনদের উচ্ছ্বাস দেখা যায়। ছবি তোলার জন্য মঞ্চের কাছে ভিড় ছিল। তবে সভায় বহু আসন ফাঁকা থাকা ছিল বলে বিজেপির দাবি। বিজেপির মালদহের বিধায়ক গোপাল সাহা বলেন, “দেবের মতো তৃণমূলের তারকার সভাতেও লোক হচ্ছে না। দেব প্রচারে বেরিয়ে তা টের পাচ্ছেন। তাই সৌজন্য ছেড়ে ওঁকে বিজেপিকে আক্রমণ করতে হচ্ছে।” সাবিনা পাল্টা বলেন, “টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করে দূর থেকে লোক নিয়ে আসা হয়নি। স্থানীয়দের নিয়ে সভা করা হয়েছে। ভোটের মাধ্যমেই বিজেপিকে মানুষ জবাব দেবেন।”