বাজেয়াপ্ত করা মদ হাতে লকেট। — নিজস্ব চিত্র।
নাকা চেকিংয়ে ধরা পড়েছিল মদ। সেই মদ নিয়েই তুলকালাম কাণ্ড হুগলির পোলবায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, পোলবার কোরোলায় নাকা চেকিংয়ে গাড়ি আটকে তল্লাশি চালাচ্ছিলেন পুলিশকর্মীরা। একটি গাড়িতে ভরা ছিল মদ। নথি দেখাতে না পারায় পুলিশ গাড়ি-সহ সেই মদ বাজেয়াপ্ত করে। সেই সময় ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন হুগলির বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। গাড়ি থামিয়ে ঘটনার কথা শুনে রাগে ফেটে পড়েন তিনি। অভিযোগ করেন, তৃণমূল ভোটারদের মন জিততে মদ বিলি করছে। পাল্টা লকেটকে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
কোরোলায় নাকা চেকিংয়ে তল্লাশি চলছে সব গাড়ির। শনিবার দুপুরে একটি চার চাকার ছোট গাড়িকে সেই নাকায় আটকান পুলিশকর্মীরা। মালপত্রে তল্লাশি চালিয়ে বেরোয়, একাধিক ট্রলিব্যাগে ঠাঁসা রয়েছে মদের টেট্রা প্যাক। কিন্তু সেই সংক্রান্ত কোনও নথি দেখাতে পারেননি আরোহী বা চালক। সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি-সহ মালপত্র বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। ঘটনাচক্রে, সেই সময় ওই রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলেন লকেট। নাকার সামনে তিনিও গাড়ি থামান। কী ঘটেছে তা জানতে পেরে গাড়ি থেকে নেমে আসেন। নিজেই গাড়িতে তল্লাশি শুরু করেন বিদায়ী সাংসদ। ওই গাড়ির চালককেও বিভিন্ন প্রশ্ন করতে দেখা যায় লকেটকে। চালক তাঁকে জানান, হাওড়া থেকে তাঁকে ভাড়া করা হয়েছে। কথা ছিল, ব্যান্ডেল স্টেশনে ছেড়ে দেওয়া হবে। গাড়ির দুই আরোহী পুলিশ দেখে আগেই পালিয়ে গেলেও এক সওয়ারি ছিলেন। তিনি লকেটকে জানান, তাঁরা বিহারের বাসিন্দা। সেখানে একটি বিয়ে উপলক্ষ্যে হুগলি থেকে মদ নিয়ে যাচ্ছিলেন। কারণ, বিহারে মদ নিষিদ্ধ। শেষে ওই ব্যক্তি লকেটকে জানান, তিনিও বিজেপিকে সমর্থন করেন। তখন লকেটকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বিজেপি সমর্থক বলে তুমি এ সব নিয়ে যাবে!’’ পুলিশের গাড়ি থেকে মদের টেট্রাপ্যাক ভরা ট্রলিব্যাগ টেনে বার করে রাস্তায় ফেলে দেন লকেট। ধমকানি দেন আটক হওয়া গাড়ির আরোহী এবং চালককে।
লকেটের অভিযোগ, এই মদ তৃণমূল ভোটারদের মধ্যে বিলি করার জন্য নিয়ে যাচ্ছিল। মদ খাইয়ে ভোট কেনার চেষ্টা। লকেট বলেন, ‘‘এরা কী ভেবেছে, নেশা করিয়ে মানুষকে বুঁদ করে রেখে দেবে? এই করে তো রাজ্যটাকে রসাতলে পাঠিয়ে দিয়েছে। এই সব খাইয়ে নেশা করিয়ে, মাতাল বানিয়ে রেখে দেবে! আজ তৃণমূলের এই অবস্থা যে মাতাল বানিয়ে রেখে দিচ্ছে! পুলিশকে বলব, ভাল ভাবে নজর রাখুন। শাড়ি বিলি হচ্ছে, এ সব বিলি হচ্ছে। বিহারে নিয়ে যাচ্ছে বলে মিথ্যা কথা বলছে। এরা হাওড়া থেকে এসেছে। এসপিকে ফোন করেছিলাম, টিম পাঠাচ্ছেন। একটাকেও ছাড়া হবে না।’’
পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূল। এলাকাটি যে বিধানসভার মধ্যে পড়ে, সেই চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘ওঁর কি খেয়েদেয়ে কাজ নেই! পুলিশ নাকা চেকিংয়ে মদ ধরেছে, সেটা তৃণমূলের কেন হতে যাবে! পুলিশের কাজে নাক না গলানোই ভাল। পুলিশের কাজ পুলিশ করুক। তৃণমূলের এই অবস্থা নয় যে, মদ খাইয়ে ভোট করাতে হবে। মদ খাওয়ানো যাঁদের সংস্কৃতি, তাঁরাই এ সব করেন।’’