মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।
তিনি মনে করেন কে কী খাবেন, কে কী পরবেন এবং কে কাকে ভালবাসবেন, এগুলি একান্তই ব্যক্তিগত বিষয় এবং মৌলিক অধিকার। তিনি এ-ও মনে করেন, এই তিনটি সূচকই বিজেপির শাসনে ‘বিপন্ন’। তিনি নিজে কি ব্যক্তিজীবনে একাকিত্ব বোধ করেন? আনন্দবাজার অনলাইনের সাক্ষাৎকারভিত্তিক অনুষ্ঠান ‘দিল্লিবাড়ির লড়াই: মুখোমুখি’তে কৃষ্ণনগরের প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা এ বারের তৃণমূল প্রার্থী মহুয়া মৈত্র জানিয়ে দিলেন, এ সব জীবনের অংশ। এ সব নিয়ে এত ভাবলে চলে না। কিন্তু মহুয়ার কি ভালবাসার মানুষ নেই? হাসতে হাসতে ইঙ্গিত দিয়েছেন মহুয়া। তাঁর জবাব, ‘‘পিকচার অভি বাকি হ্যায়!’’
সংসদে ‘প্রশ্ন ঘুষ’ অভিযোগে বিদ্ধ হয়ে তাঁর সাংসদপদ খারিজ হয়েছিল। তার পরে আবার তাঁকে কৃষ্ণনগরে টিকিট দিয়েছে দল। কিন্তু সেই বিতর্কের পর্বেই মহুয়ার ব্যক্তিগত জীবনের বিবিধ ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। কোনওটায় দেখা গিয়েছিল, ছোট পোশাক পরিহিতা মহুয়ার হাতে ওয়াইনের গ্লাস, কোনওটায় আবার হাতে সিগার (চুরুট)। মহুয়া কি মনে করেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাঁর যাপনে আরও নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন? মৈত্রের জবাব, ‘‘ওই সব ব্যক্তিগত ছবি আইটি সেলের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে আসলে কুৎসা করা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমি তো কৃষ্ণনগরে বা করিমপুরে ছোট পোশাক পরে ঘুরছি না! আর আমি যদি গ্রিসে গিয়ে শাড়ি না পরে সেই দেশের উপযুক্ত পোশাক পরি, তাতে আপত্তির কী রয়েছে?’’
মহুয়া স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চেতনায় তিনি ‘বিশ্বনাগরিক’। নিজেকে তিনি কোনও সংকীর্ণ গণ্ডিতে আবদ্ধ রাখতে চান না। তাঁর পড়াশোনা বিলেতে। তিনি চাকরি করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় অর্থনৈতিক সংস্থা জেপি মর্গ্যানে। মহুয়ার কথায়, ‘‘আমি সুযোগ পেয়েছি বাইরে থাকার। আমার সুযোগ হয়েছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ঘোরার। আমি সব দেশের ভাল জিনিসগুলোকে নিতে শিখেছি।’’
মহুয়ার ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’-এর অন্যতম হল ঢাউস সানগ্লাস। কেন সবসময়ে বেঢপ সাইজ়ের রোদচশমা পরেন? সাক্ষাৎকারে মহুয়া জানিয়েছেন, চোখে রোদ পড়লে তাঁর সমস্যা হয়। আগে ছোট সানগ্লাস পরতেন। কিন্তু তাতে চোখের আশপাশে রোদ লাগত। তাতে মাথা যন্ত্রণা হত। তার পর থেকেই বড় সানগ্লাস পরা শুরু করেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওটাই এখন আমার ট্রেড মার্ক হয়ে গিয়েছে।’’ রোদে প্রচারে তিনি বেরোলে দেখা যায়, শাড়ির আঁচল ঘোমটার মতো করে মাথায় জড়িয়ে রেখেছেন। সেটাও একই কারণে। মহুয়া জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর পোশাক বা যা কিছু তিনি করেন, তাতে ‘কৃত্রিমতা’ নেই। সবটাই সাবলীল এবং স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই করেন।