—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
পাসপোর্ট তৈরির সময় আবেদনকারীর তথ্য যাচাইয়ে কেবল আধারকার্ড, ভোটারকার্ড দেখলেই হবে না, স্থানীয় সূত্রও কাজে লাগাতে হবে। সদ্য জেলা গোয়েন্দা বিভাগকে (ডিআইবি) এই নির্দেশ দিয়েছেন বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি। পাশাপাশি পর্যটন মরসুমে বিদেশ থেকে যাঁরা জেলায় বেড়াতে আসছেন সুক্ষ্ম ভাবে তাঁদের গতিবিধির উপরেও নজর রাখতে বলেছেন পুলিশ সুপার।
পুলিশ সুপার বলেন, “পাসপোর্টের তথ্য যাচাই করার সময় বিশেষ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনও ভুল ব্যক্তি যাতে ছাড়পত্র পেয়ে না যায়, সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। দরকারে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত বা পুরসভার কাছ থেকেও তথ্য নিতে হবে। স্থানীয় মানুষজনের সঙ্গেও কথা বলতে হবে। এক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত সমস্যা এড়াতে বাড়তি পুলিশ কর্মী ডিআইবিতে দেওয়া হয়েছে। বিদেশী পর্যটকদের গতিবিধির উপরেও নজর রাখা হচ্ছে।”
সম্প্রতি এ রাজ্যে বেশ কয়েকজন অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়েছে। তাদের মধ্যে কয়েক জন জঙ্গি বলে পুলিশের দাবি। তাদের অনেকেই এ দেশের পরিচয়পত্র তৈরি করে নিয়েছিল। ধৃতদের মধ্যে কয়েক জন বাংলাদেশি জঙ্গি সংগঠন ‘আনসারুল্লা বাংলা টিম’-এর (এবিটি) সদস্য রয়েছে। নিয়মের বেড়াজাল থাকা সত্ত্বেও অনুপ্রবেশকারীরা কী ভাবে পরিচয়পত্র পেল, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন রয়েছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
সূত্রের খবর, সদ্য গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেন বাঁকুড়া জেলা পুলিশ সুপার। সেখানে তিনি পাসপোর্ট তৈরির ক্ষেত্রে কঠোর ভাবে নিয়মনীতি পালনের বিষয়ে সচেতন করেছেন। কেবল আধারকার্ড বা ভোটারকার্ডে দেখলেই হবে না, গোয়েন্দা বিভাগের পুলিশ কর্মীদের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে এলাকায় ভাল করে খোঁজ নিতে বলা হয়েছে। ওই ব্যক্তি কত দিন ওই এলাকায় বাস করছেন, আগে কোথায় থাকতেন এ সব তথ্য স্থানীয় বাসিন্দা এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত অথবা পুরসভার কাছে খোঁজ নিতে হবে। তবে কর্মীর অভাব থাকায় তথ্য যাচাইয়ের কাজ করতে সমস্যা হতে পারে বলে বৈঠকে জেলার গোয়েন্দারা জানিয়েছেন। পুলিশ সুপার সমস্যা মেটাতে ওই দফতরে বেশ কিছু সাব-ইনস্পেক্টর, কনস্টেবল নিয়োগ করেছেন।
ভৌগোলিক অবস্থানগত ভাবে বাঁকুড়া জেলা দেশের অন্য কোনও রাজ্য বা পড়শি দেশের
সীমান্তবর্তী নয়। তবুও পুলিশ কর্তারা বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে নজরদারিতে কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না। তাই বিদেশি পর্যটকদের উপরেও সুক্ষ্ম ভাবে নজর রাখার বিষয়ে সচেতন করেছেন পুলিশ সুপার।
জেলার মন্দিরনগরী বিষ্ণুপুরে প্রতি বছর প্রচুর বিদেশি পর্যটক আসেন। গোয়েন্দা দফতর সূত্রে খবর, গত বছর জেলায় প্রায় ১৬০ জন বিদেশি পর্যটক এসেছিলেন। যাঁদের বেশির ভাগ এসেছিলেন নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে। জে
লার প্রতিটি হোটেল-লজের কাছ থেকেও পুলিশ নিয়মিত পর্যটকদের তালিকা সংগ্রহ করে যাচাই করছে। পর্যটনস্থগুলির উপরেও পুলিশের বিশেষ নজর থাকছে।