লাঠি হাতে প্রাতর্ভ্রমণে বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র।
ভোটের প্রচারে ইদানীং রোজনামচা হয়ে গিয়েছে বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুরের প্রার্থীর ‘প্রভাতী-বচন’। প্রতিদিনই প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়ে ‘গরম গরম’ বিভিন্ন কথা বলেন। আর দিনভর দিলীপের মুখনিঃসৃত সেই বাণী বুদবুদ তুলে যায় রাজনীতির তালপুকুরে। দলের অন্দরে দিলীপের এই ‘প্রভাতী-বচন’ নিয়ে কেউ কেউ আপত্তি তুললেও ঘোষকে থামানো যায়নি। তিনি স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় ব্যাট চালিয়ে খেলে যাচ্ছেন। ঠিক যেমন, মঙ্গলবার সকালে দিলীপ ধরা দিলেন সম্পূর্ণ অন্য অবতারে। হাতে লাঠি, মুখে কাকা!
মেদিনীপুর আসনে একাধিক বার জিতেছেন। কিন্তু এ বার সেই আসনে জায়গা হয়নি দিলীপের। বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করেছে বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা আসনে। নতুন মাঠে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য কীর্তি আজ়াদ। পোড়খাওয়া ক্রিকেটারের টক্কর নিতে তাই দেরি না করে ব্যাট চালিয়েই নতুন ইনিংস শুরু করে দিয়েছেন দিলীপ। তারই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলছে তাঁর প্রভাতী-বচনের পালাও। তিনি মঙ্গলবার সাতসকালেই ‘খেলে’ দিয়েছেন। সোমবার রাতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সপার্ষদ গিয়েছিলেন রাজভবনে। তৃণমূলের দাবি, রাজধানী দিল্লিতে তাদের প্রতিনিধি দলকে যে ভাবে দিল্লি পুলিশ ‘হেনস্থা’ করেছে, তারই প্রতিবাদ জানাতে রাজভবন অভিযান। মঙ্গলবার সকালে তার সমালোচনা করেন দিলীপ। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলেন, ‘‘যাদের বেশি গালাগালি দিত তৃণমূল, সমালোচনা করত, এমন পরিস্থিতি যে, তাদের পায়ে গিয়ে পড়তে হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন না কি বিজেপির দালাল! সকাল-বিকেল রাজ্যপালের অফিসে গিয়ে পড়ে থাকছে। কী এমন পরিস্থিতি হয়ে গেল? প্যাঁচে পড়লে কাকা বাঁচাও, মেসো বাঁচাও! এজেন্সি ঠিক কাজ করছে।’’ এর পরেই বৈঠকি মেজাজে দিলীপ বলে ওঠেন, ‘‘ওয়াক্ত পড়ে বাঁকা, তো গাধা কো কহে কাকা!’’ (গোলমেলে সময়ে গাধাকেও কাকা ডাকার মতো ভুল হয়ে যায়।)
মঙ্গলবার সকালে দিলীপের হাতে ছিল একটি ছোট লাঠিও। এক প্রাতর্ভ্রমণকারী অবাক হয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘‘হাতে লাঠি কেন?’’ তার জবাবে দিলীপ বলেন, ‘‘আমার এক বন্ধু বললেন, রাস্তায় বেরোলে অনেক অবাঞ্ছিত লোক সামনে চলে আসছে। তাই একটা স্টিক দিলেন। এমন অভিজ্ঞতা অনেক হয়েছে। কিন্তু আমরা আইন মানি। আইন হাতে তুলে নিই না। যারা আইনকে হাতে তুলে নিচ্ছে, তাদের জন্য ডান্ডা আছে।’’
দিলীপ কটাক্ষ করেন কীর্তিকেও। বলেন, ‘‘আসলে ওঁর টেনশনে ঘুম হচ্ছে না। তাই হাঁটেন। আমি রোজ হাঁটি, বহু দিনের অভ্যাস। আর ওঁর কপালে অনভ্যাসের টিকা চরচর করছে। আসলে, অনেক রাত পর্যন্ত পার্টি-ফার্টি করেন তো!’’