সবং থানায় পুলিশের সঙ্গে তর্ক হিরণের। —নিজস্ব চিত্র।
সবং থানার ভিতরে কর্তব্যরত এক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়ালেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়। এফআইআর দায়ের নিয়ে পুলিশকে প্রশ্ন করেন তিনি। সেখান থেকে এসপিকে ফোন করার পর অভিযোগ জমা করেছেন। তার পর প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ দেবকে নিশানা করেন তিনি। পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী।
এক বিজেপি কর্মীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর তাতে ইন্ধন রয়েছে তৃণমূলের। এমনই অভিযোগ তুলে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং থানার সামনে ধর্নায় বসেন ঘাটাল লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী হিরণ। বিজেপির একটি সূত্রে খবর, সবং ব্লকের ১৩ নম্বর অঞ্চলের মাধবচকের বিজেপি নেতা মানিক ভঞ্জকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার তাঁকে আদালতে হাজির করানোর আগে সেখানে গিয়ে হাজির হন হিরণ এবং বিজেপি কর্মীরা। প্রথমে ধর্নায় বসেন। পরে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে কটাক্ষ করতে শোনা যায় হিরণকে। তিনি একটি এফআইআর দায়ের করতে চান। কিন্তু তা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। ওই নিয়ে শুরু হয় তর্কাতর্কি।
থানায় কর্তব্যরত এক পুলিশ আধিকারিকের উদ্দেশে হিরণ বলেন, ‘‘ভারতবর্ষের কোন আইনে আছে যে ওসির অনুমতি ছাড়া এফআইআর দায়ের করা যাবে না? আমাকে সেই আইন দেখান। কোন সেকশনে আছে ওই নির্দেশ?’’ তার পর টেবিল চাপড়ে হিরণ বলেন, ‘‘আইন কে তৈরি করেছে? মমতার পুলিশ? আমি এফআইআর জমা করব। তার জন্য ওসির পারমিশন নেব? কোন আইনে লেখা রয়েছে?’’ ওই অফিসারের উদ্দেশে হিরণকে এ-ও বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনার কথাবার্তা ভিডিয়ো হচ্ছে। আমি কিন্তু আদালতে গিয়ে এই প্রশ্নটা করব। মুর্শিদাবাদে ওসি সাসপেন্ড হয়েছেন।’’ তখন ওই পুলিশ আধিকারিককে জানিয়ে দেন তিনি এফআইআর দায়ের করতে পারবেন না। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি চলে দীর্ঘ ক্ষণ। হুড়োহুড়ি হয়। পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন করেন বিজেপি নেতা এবং কর্মীরা। বেশ কিছু ক্ষণ ধরে গন্ডগোলের মধ্যে এক জনকে ফোন করতে দেখা যায় হিরণকে। তাঁর দাবি, জেলার পুলিশ সুপারকে ফোন করার পর তাঁদের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু এফআইআর নেওয়া হয়নি।
ওই ঘটনা নিয়ে হিরণ বলেন, ‘‘এখানকার মানুষকে ভুল বোঝচ্ছেন এখানকার অভিনেতা-সাংসদ। সবং বিধানসভা এলাকার থানার টেবিল অফিসার বলছেন, এফআইআর দায়েরের জন্য ওসির অনুমতি দরকার, ওসি বলছেন এসপির অনুমতি নিতে হবে। এ ভাবে পুলিশ অফিসারদের দিয়ে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভোট লুট করেছেন এখানকার অভিনেতা-সাংসদ।’’ হিরণের সংযোজন, ‘‘আমি অবশ্য পুলিশকে দোষ দেব না। এঁরা চাকরি বাঁচাতে এ সব করছেন।’’ অন্য দিকে এই ঘটনায় পুলিশের তরফে সরকারি ভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।