গত এক দশক ধরে বিভিন্ন জঙ্গলে পড়ে থাকা এমনই ৬২টি সিং উদ্ধার করে তা রাখা হয়েছিল বাঁকুড়া দক্ষিণ বনবিভাগের হেফাজতে। —নিজস্ব চিত্র।
হাতির দাঁতের পর এ বার হরিণের শিং পোড়াল বন দফতর। সোমবার বাঁকুড়ার বড়জোড়ার একটি কারখানায় কড়া নিরাপত্তায় উচ্চ তাপমাত্রায় পুড়িয়ে ফেলা হয় হরিণের ৬২টি শিং। প্রায় এক দশক ধরে বিভিন্ন জঙ্গল থেকে হরিণের শিংগুলি উদ্ধার করে সেগুলি রাখা হয়েছিল বন দফতরের হেফাজতে।
বাঁকুড়া জেলার বিভিন্ন জঙ্গলে হাতি ছাড়াও রয়েছে বিপুল সংখ্যক হরিণ। মুকুটমণিপুর লাগোয়া বনপুখুরিয়া এলাকায় থাকা ডিয়ার পার্কেও বেশ কিছু হরিণ রয়েছে। বিভিন্ন কারণে জঙ্গলে ঘুরে বেড়ানোর সময় হরিণের শিং ভেঙে পড়ে। নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ের সময়েও শিং ভেঙে যায়। গত এক দশক ধরে বিভিন্ন জঙ্গলে পড়ে থাকা এমনই ৬২টি শিং উদ্ধার করে তা রাখা হয়েছিল বাঁকুড়া দক্ষিণ বন বিভাগের হেফাজতে। আন্তর্জাতিক সাইটস চুক্তি অনুযায়ী বিপন্ন বন্যপ্রাণীর দেহাংশ বিক্রি বা ব্যবহার অবৈধ। সেগুলিকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর নষ্ট করে ফেলতে হয়। সেই চুক্তি মেনে সম্প্রতি নিজেদের সংগ্রহে থাকা হরিণের ৬২টি শিং নষ্ট করার উদ্যোগ নেয় বন দফতর। সোমবার কড়া নিরাপত্তার মোড়কে শিংগুলি বড়জোড়ার একটি বেসরকারি কারখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চুল্লির অতি উচ্চ তাপমাত্রায় একে একে প্রতিটি শিং নষ্ট করে ফেলা হয়।
বন্যপ্রাণীর দেহাংশ নষ্ট করার ঘটনা বাঁকুড়ায় এই প্রথম নয়। এর আগে গত ডিসেম্বর মাসে বাঁকুড়া উত্তর, বাঁকুড়া দক্ষিণ এবং বিষ্ণুপুর বন বিভাগ মিলিয়ে তাদের সংগ্রহে থাকা হাতির মোট ৫৭টি দাঁত এই উপায়েই নষ্ট করা হয়েছিল। বন দফতরের মুখ্য বনপাল (কেন্দ্রীয় চক্র) এস কুলানডাইভেল বলেন, ‘‘হাতির দাঁত হোক বা হরিণের শিং, নির্দিষ্ট সময় অন্তর তা নষ্ট করে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। মূলত বন্যপ্রাণীর দেহাংশ নিয়ে যাতে চোরাকারবার না হয়, সেই জন্যই এই কাজ করা হয়েছে। প্রায় দশ বছর ধরে বিভিন্ন জঙ্গল থেকে এই ৬২টি শিং সংগ্রহ করা হয়েছিল।’’