ব্যারাকপুরে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী অর্জুন সিংহ। —ফাইল চিত্র।
ব্যারাকপুর। অর্জুন সিংহের ‘গড়’। ৪ জুন লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল বলছে, ‘গড়’ হারিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী তথা বিদায়ী সাংসদ। ব্যারাকপুরে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী পার্থ ভৌমিক। হেরে গিয়ে আনন্দবাজার অনলাইনকে অর্জুন বললেন, ‘‘আর দলবদল নয়।’’
ব্যারাকপুরে হিসাব মেলাতে পারেননি অর্জুন। ঘরোয়া আলোচনায় তিনি এর আগে অনেক বার বলেছেন, ‘‘আমি ভোটে লড়তে নামি সব হিসাব করে। একটা ভোট হওয়ার পরের মিনিট থেকে পরের ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিই আমি।’’ কিন্তু ব্যারাকপুরের ফলাফল বলছে, অর্জুনের কোনও হিসাবই এ বার মেলেনি। তিনি নিজেও তা স্বীকার করে নিয়েছেন। আনন্দবাজার অনলাইনকে স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘আমার হিসাব মেলেনি।’’
তা হলে এর পর কী করবেন? জবাবে অর্জুন বলেন, ‘‘রাজনীতিই করব। কিন্তু আর অন্য কোনও দলে আমি যাব না। আর দলবদল করব না।’’
অর্জুন ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, তাঁর হারের নেপথ্যে রয়েছে বিজেপির অন্দরের অন্তর্ঘাত। পলতা, ইছাপুর, নৈহাটি, নোয়াপাড়া, কাঁকিনাড়া, ব্যারাকপুর শহর— বিজেপির একাধিক মণ্ডলে স্থানীয় নেতৃত্ব অন্তর্ঘাত করেছেন বলে অভিযোগ। তা নিয়ে অবশ্য এখনও কিছু বলেননি অর্জুন নিজে।
২০০৪ সালে তৃণমূলের টিকিটে ব্যারাকপুর কেন্দ্র থেকে প্রথম বার লোকসভা ভোটে লড়েছিলেন অর্জুন। সে বার সিপিএমের কাছে হেরে গিয়েছিলেন তিনি। তবে তৃণমূলের টিকিটে ভাটপাড়ার চার বারের বিধায়ক হন তিনি। ২০১৯ সালে অর্জুন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। লোকসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে লড়ে ব্যারাকপুরের সাংসদ হন তিনি। তার তিন বছরের মধ্যে আবার তৃণমূলে যোগ দেন। খাতায়কলমে বিজেপির সাংসদ থাকলেও অর্জুন তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এত দিন। ২০২৪ সালের লোকসভায় ব্যারাকপুর থেকেই তাঁকে তৃণমূল টিকিট দেবে ভেবেছিলেন। সেই অনুযায়ী, ব্রিগেড সমাবেশেও গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি মঞ্চে থাকাকালীন ব্যারাকপুরের সাংসদ হিসাবে পার্থ ভৌমিকের নাম ঘোষণা করে তৃণমূল। এর দু’দিনের মধ্যে অর্জুন আবার বিজেপিতে ফেরেন। আবার তাদের
টিকিটেই ভোটে দাঁড়ান। এ বার আর তাঁর হিসাব মিলল না। নিজের ‘গড়েই’ হেরে গেলেন অর্জুন। মাস ছয়েক আগে একটি ঘরোয়া আলোচনায় তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমি ১৫ বছর সাংসদ থাকব।’’ তাঁর সেই আত্মবিশ্বাস এ বারের ভোটে টলে গেল।