সেই পোস্টার। ছবি: পিটিআইয়ের ভিডিয়ো থেকে সংগৃহীত।
ভোট এলেই গ্রামে বাড়ে নেতাদের আনাগোনা। বাড়ি বাড়ি এসে তাঁরা জানতে চান গ্রামবাসীদের সুখ-দুঃখের কথা। খোলা মনে গ্রামের সহজসরল মানুষ জানানও নিজেদের সমস্যার কথা। পান সমাধানের প্রতিশ্রুতি। কিন্তু ব্যাস ওই পর্যন্তই। প্রতিশ্রুতি আর পূরণ হয় না। ভোট মিটলেই উধাও হন নেতা। কিন্তু এ বারে আর তেমনটা হতে দেবেন না বলে ঠিক করে ফেলেছেন বিহারের বনগাঁও গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামে ঢোকার রাস্তাতেই পোস্টার টাঙিয়ে তারা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘আগে সমস্যা মেটাও, তার পরে ভোট পাও।’’ শুধু তা-ই নয় গ্রামে আগত নেতাদের নোটায় ভোট দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন তাঁরা।
বনগাঁওয়ে মূলত চাষিদের বাস। আর গ্রামের বড় সমস্যা বলতে একটাই— বাঁদরের উৎপাত। নেতারা সমস্যার কথা জেনে প্রতিবারই প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান বাঁদর তাড়ানোর, কিন্তু ভোটের পর ভোট চলে যায়। গ্রাম বাঁদরমুক্ত হয় না। কেউ কেউ বাঁদর তাড়ানোর সাময়িক ব্যবস্থা করলেও তাতে লাভ হয়নি। কিছু গ্রামে আবার শুরু হয় বাঁদরের বাঁদরামো। যার ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ। নষ্ট হয় ফসল। বাঁদরের দলের হাতে একা পড়ে গেলে অনেক সময় আক্রান্তও হন কৃষকেরা।
বিহারের এই গ্রাম সাহারসা জেলা এবং সাহারসা বিধানসভা ক্ষেত্র এবং মাধেপুরা লোকসভা ক্ষেত্রের অধীনে পড়ে। মাধেপুরা লোকসভায় গত বছর জিতেছিলেন বিহারের জোট সরকারের শরিক দল নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জনতা দল (ইউনাইটেড)-এর প্রার্থী দীনেশকুমার যাদব। গ্রামবাসীদের দাবি তিনিও কাজ করেননি।
বনগাঁও গ্রামটি জঙ্গলে ঘেরা। এখানে চাষজমিতে প্রায়ই দৌরাত্ম্য চলে বাঁদরদের। মাঝে মাঝেই চাষের জমিতে উপর চড়াও হয় জনাপঞ্চাশেক বাঁদরের দল। তাদের দৌরাত্ম্যে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন ছোট্ট কৃষিনির্ভর গ্রামের গ্রামবাসীরা। সম্প্রতি তাই তাঁরা স্লোগান তুলেছেন, ‘‘বাঁদর ভাগাও, লোকসভায় ভোট পাও।’’
পোস্টারে এ-ও লেখা হয়েছে যে, ‘‘মিথ্যা প্রতিশ্রুতি চলবে না। আগে সমাধান। তারপরে মতদান। না হলে নোটার বোতাম টেপা হবে।’’