—প্রতীকী চিত্র।
নথি জাল করেই কি বিজেপি বিধায়কের নামে নেওয়া হয়েছিল কিড স্ট্রিটের বিধায়ক হস্টেলের ঘর? আর টাকা চেয়ে সেখানেই ডাকা হয়েছিল শাসক দলের পুরপ্রধানকে। সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে টাকা চাওয়ার ঘটনায় ধৃতদের জেরা করে এই রহস্যের সমাধান চাইছে কলকাতা পুলিশ।
ঘটনায় নাম জড়ানো কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি করে জানান, তিনি জানেন না তাঁর সই করা কাগজ দেখিয়ে কী ভাবে বিধায়ক হস্টেলে তাঁর ঘর নেওয়া হয়েছে। বিধানসভার সচিবকে চিঠি দেবেন বলে তিনি শুক্রবার দাবি করায় তাই নতুন রহস্য দানা বেঁধেছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের তরফে কিছুই জানানো হয়নি। লালবাজারের যুগ্ম নগরপাল পদমর্যাদার এক অফিসার (অপরাধ সংক্রান্ত বিষয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত) এ দিন শুধু বলেছেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’
ঘটনায় বৃহস্পতিবার কিড স্ট্রিটের বিধায়ক হস্টেল থেকে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ জুনেইদুল হক চৌধুরী, শুভদীপ মল্লিক এবং শেখ তসলিম নামে তিন জনকে ধরে।
তারকেশ্বরের নাইটা মালপাহাড় রামচন্দ্রপুর এলাকার বাসিন্দা ধৃত শুভদীপ মালিক। পেশায় গাড়ির চালক। তাঁর বাবা পূর্ণচন্দ্র মালিক বলেন, ‘‘আমার ছেলে কোনও দল করত না। গাড়ি চালানোর সুবাদে তৃণমূলের লোকজনের গাড়িও চালাত। আমার ছেলে নির্দোষ।’’ ধৃত জনাইদুল হক চৌধুরীর বাড়ি পুরশুড়ার ধাপধাড়া গ্রামে। পরিবারের লোকজন কেউ গ্রামে থাকেন না। কোনও উৎসব হলে তাঁরা আসেন বলে পড়সিরা জানালেন। ‘ঠাটবাট’ বেশি হলেও জনাইদুলের ব্যবহার খুবই ভাল ছিল বলে জানিয়েছেন পাড়ার লোকজন। রাজনীতির সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগ কেউ দেখেননি বলেই জানালেন। তবে বছর কয়েক আগে পর্যন্ত বাড়ি এলে তৃণমূলের কিছু মাঝারি মাপের নেতার সঙ্গে তাঁকে ঘুরতে দেখা যেত বলে জানা গিয়েছে।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘তৃণমূল দল এমন ব্যবস্থা তৈরি করেছে, যেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে সরকার চলছে।’’
হস্টেলের সুপারিন্টেন্ডেন্টের কাছ থেকে এই ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘বিধায়ক হস্টেলের সুপারিন্টেন্ডেন্টকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে বলেছি। যাঁকে ঘর দেওয়া হয়েছিল, তাঁর নাম ও আধার কার্ডের নম্বর রেকর্ড করা হয়েছিল। নিরাপত্তার দিক থেকে যতটা সম্ভব, সবটাই করা হয়। কিন্তু
আমাদের জানা থাকে না, কার সুপারিশে কে ভিতরে ঢুকছেন।” সংশ্লিষ্ট বিজেপি বিধায়কের ‘যোগসূত্র’ প্রসঙ্গে স্পিকারের সংযোজন, “আগে জানব, বিষয়টি কী। তাঁর সুপারিশপত্র দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতরের নাম করে কেউ খারাপ কাজ করলে, পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নেবে। এর সঙ্গে দল বা রাজনীতির যোগ নেই। আইন আইনের মতো চলবে।”