পরামর্শ দিচ্ছেন গণিত শিক্ষক। প্রতীকী ছবি।
জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। তার উপর অঙ্ক বিষয়ের প্রতি অনেকেরই ভয় থাকে। সেই ভয়ের জায়গা থেকেই অনেক সহজ অঙ্ক সঠিকভাবে না করতে পারার জন্য নম্বর কাটা যায়। মাধ্যমিকে অঙ্ক প্রশ্নপত্রের কোন দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন, সেই বিষয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন যোধপুর পার্ক বয়েজ বিদ্যালয়ের গণিত বিষয়ের সহশিক্ষক কল্যাণরতন মান্না।
প্রশ্নপত্রের কোন দিকগুলিতে বিশেষ সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন:
১ এর দাগের, ৬টি সঠিক উত্তর নির্বাচনের কোনওটি না ছাড়া ভাল। যদি সমাধান নাও হয়, অনুমানে একটি উত্তর লিখে এলেও পঁচিশ শতাংশ সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এক নম্বরের উত্তর গুলো সঠিক থাকলেই পুরো ১ নম্বর দেওয়া হয়। রাফ ওয়ার্ক না থাকলেও চলবে।
২ এর দাগের, শূন্যস্থান পূরণের ৬টির মধ্যে যে কোনও ৫টি করতে দেওয়া থাকলেও সব ক’টির উত্তর দেওয়া ভাল। কারণ উত্তরের প্রথম দিকে দু’-একটি ভুল হলেও অতিরিক্ত সঠিক উত্তরের নম্বর গ্রহণ করা হয়।
৩ নম্বর দাগের, সত্য/মিথ্যা সব ক’টি উত্তর লিখলে ভাল হয়। কোনও একটি প্রশ্নের সত্য/মিথ্যা-র উত্তর একবার লিখতে হবে। দু’বার লিখলে প্রথম উত্তরটি গ্রহণ করা হবে।
৪ নম্বর দাগের, বারোটি সংক্ষিপ্ত উত্তর ভিত্তিক, প্রতিটি দু’নম্বর করে প্রশ্নের মধ্যে দশটি করতে বলা থাকলেও বারোটিই করার চেষ্টা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দুইয়ে দুই পেতে হলে প্রয়োজনীয় রাফ ওয়ার্ক/চিত্র আবশ্যিক।
৫ নম্বর দাগে, ৫ নম্বরের পাটিগণিত থেকে দু’টি অঙ্কের মধ্যে একটি করতে হয়। সরল/চক্রবৃদ্ধি সুদ/সমহার বৃদ্ধি বা হ্রাসের অঙ্কে সঠিক সূত্র লেখার জন্য ১-২ নম্বর দেওয়া হয়।
৬ নম্বর দাগে, দু’টি ৩ নম্বরের দ্বিঘাত সমীকরণ থেকে প্রশ্নের মধ্যে একটি করতে বলা হয়। এখানে দ্বিঘাত, সমীকরণ আকারে প্রকাশ করার জন্য বা দু’টির একটির সমাধান বের করার জন্য আংশিক নম্বর থাকে।
৭ নম্বর দাগে, একটি দ্বিঘাত করণী ও একটি ভেদ থেকে মোট দু’টির মধ্যে একটি অঙ্ক করতে হয়। অশূন্য ভেদ ধ্রুবক না লেখার জন্য ১ নম্বর কাটা যায়।
8 নম্বর দাগে, অনুপাত ও সমানুপাত থেকে দু’টি প্রশ্নের মধ্যে একটি করতে হবে। অশূন্য সমানুপাত ধ্রুবক না লেখার জন্য এক নম্বর কাটা হয়ে থাকে।
৯ নম্বর দাগে, পাঁচ নম্বরের দুটি উপপাদ্যের মধ্যে একটি করতে বলা হয়। উপপাদ্য, উপপাদ্যের প্রয়োগ, উচ্চতা ও দূরত্বের অঙ্কে ভুল ছবি বা ছবিহীন উত্তরের জন্য (উত্তর সঠিক হলেও) শূন্য নম্বর দেওয়া হয়।
১০ নম্বর দাগে, দুটি তিন নম্বরের উপপাদ্যের প্রয়োগে (একটি করতে হয়) নির্দিষ্ট নামকরণ দেওয়া থাকলে প্রদত্ত নাম দিয়েই ছবি ও প্রমাণ করতে হবে।
১১ নম্বর দাগে, দুটি সম্পাদ্যের মধ্যে একটি ৫ নম্বরের সম্পাদ্য অঙ্কন করতে হয়। লম্বভ্রমের কারণে দৈর্ঘ্য ছোট বড়ো না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। জ্যামিতিক পদ্ধতিতে ৩৫ বর্গমূল নির্ণয় অঙ্কে ৫.৯ (প্রায়) লিখতে হবে। ৫.৯ সেমি. লিখলে ১ নম্বর কাটা যাবে।
১২ নম্বর দাগে, ত্রিকোণমিতি থেকে ৩ নম্বরের তিনটি অঙ্কের মধ্যে দু’টি করতে হয়। আদর্শ কোণের ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের সঠিক মান বসাতে পারলেই ১ নম্বর দেওয়া হয়।
১৩ নম্বর দাগে, উচ্চতা ও দূরত্বের পাঁচ নম্বরের দু’টির মধ্যে একটি করতে হবে। এখানে সঠিক চিত্র অবশ্যই আঁকতে হবে। উন্নতি কোণ ও অবনতি কোণ সঠিক ভাবে দেখাতে হবে। বিশেষত অবনতি কোণ না দেখানো/ভুল দেখানোর জন্য নম্বর কাটা যাবে।
১৪ নম্বর দাগে, ৪ নম্বরের তিনটি পরিমিতির অঙ্কের মধ্যে দু’টি অঙ্ক করতে হয়। উত্তরে সঠিক একক না থাকলে ১ নম্বর কাটা যায়।
১৫ নম্বর দাগে, রাশিবিজ্ঞানের গড়, মধ্যমা, ওজাইভ ও সংখ্যাগুরুমান থেকে চার নম্বরের তিনটি প্রশ্নের মধ্যে দু’টির উত্তর দিতে হয়। এখানেও গড়, মধ্যমা ও সংখ্যাগুরুমানের সঠিক সূত্র লেখার জন্য এক করে আংশিক নম্বর দেওয়া হয়। তবে, পরিসংখ্যা বিভাজনের শ্রেণির যদি একক থাকে তবে উত্তরেও একক লিখতে হবে।