সংগৃহীত চিত্র।
আরজিকর হাসপাতালে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই এ বছরের শিক্ষক দিবসের সরকারি অনুষ্ঠান স্থগিত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, স্থগিত রাখা হল মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে সমস্ত বোর্ডের পড়ুয়াদের নিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানও। সেই সঙ্গে 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১৬ লক্ষ পড়ুয়ার হাতে মোবাইল বা ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা করে যে অনুদান দেওয়ার কথা, তা-ও আপাতত দেওয়া হচ্ছে না বলে শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান করা হয়। সেখানেই এই 'তরুণের স্বপ্ন' প্রকল্পের সূচনা করা হয়। তার পরে টাকা যায় পড়ুয়াদের ব্যাঙ্কে।
তবে সরকারি ভাবে পড়ুয়াদের সংবর্ধনা এবং শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান স্থগিত রাখলেও স্কুলস্তরে বাতিল হচ্ছে না শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। অন্যান্য বছরের মতো এ বছরও রাজ্যের স্কুলগুলিতে পালিত হবে শিক্ষক দিবস। তবে আর জি কর কাণ্ডের অস্থির পরিস্থিতিতে সাড়ম্বরে নয়, ছোট করে হবে উদযাপন। নানা সমাজ সচেতনতামূলক কর্মসূচি ও ভিন্ন ধারার প্রতিবাদের মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে ছাত্র-ছাত্রীরা। অন্য দিকে, শিক্ষকরা কালো ব্যাজ পরে, অনুষ্ঠানস্থলে কালো প্যান্ডেল করে, অভিনব শিক্ষক দিবস উদযাপন করবেন।
উত্তর কলকাতার অন্যতম স্কুল পার্ক ইনস্টিটিউশন। প্রধান শিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, “এ বছর এই পরিস্থিতিতে সাড়ম্বরে পালিত হবে না শিক্ষক দিবস। স্কুলের ছাত্রীরা বেশ কিছু কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তারা তা ছোট আকারে পালন করবে।”
দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম স্কুল যোধপুর পার্ক গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা নাটক ও নাচের মাধ্যমে সমাজ সচেতনতামূলক বিষয় শিক্ষক দিবসে উত্থাপন করবে। এর মাধ্যমে তারা সামাজিক বার্তাও তুলে ধরবে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। স্কুলের সহ-প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা চৌধুরী বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে ছোট করা হয়েছে এ বছরের শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। তবে ছাত্রীরা নাচ ও নাটকের মাধ্যমে সমাজ সচেতনতা মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।”
বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিক শর্বরী ভট্টাচার্য বলেন, “আমরা এই পরিস্থিতিতে কোনও বড় অনুষ্ঠান আয়োজন করছি না। ছাত্রীরা অনুষ্ঠান শুরুর আগে নীরবতা পালন করবে আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে।
দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম স্কুল যোধপুর পার্ক গার্লস স্কুলের ছাত্রীরা নাটক ও নাচের মাধ্যমে সমাজ সচেতনামূলক বিষয় শিক্ষক দিবসে উত্থাপন করবে। এবং এর মাধ্যমে সামাজিক বার্তাও তুলে ধরবেন বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। স্কুলের সহ প্রধান শিক্ষিকা অজন্তা চৌধুরী বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে ছোট করা হয়েছে এ বছরের শিক্ষক দিবসের অনুষ্ঠান। তবে ছাত্রীরা নিত্য অনুষ্ঠান ও নাটকের মাধ্যমে সমাজ সচেতন মূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে।”
তবে শিক্ষক দিবস উপলক্ষে সরকারি অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত সঠিক নয় বলে মনে করছেন রাজ্যের শিক্ষাবিদরা। প্রবীণ শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন, “শিক্ষক দিবস নিয়ে তো কোনও বিতর্ক নেই। তাই সরকারি স্তরে তা পালন করা উচিত ছিল। যে কোনও পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের এই দিনগুলোর প্রতি গুরুত্ব আরোপ করা প্রয়োজন। এই ধরনের অনুষ্ঠান রাষ্ট্রীয় স্তরে স্থগিত রাখলে সমাজে ভুল বার্তা যেতে পারে।”