সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যমিক পরীক্ষার আর কয়েক মাস বাকি। এখনও পর্যন্ত পর্ষদের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করল না ৬০০-বেশি স্কুল।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে বার বার স্কুলগুলিকে সতর্ক ও সচেতন করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল, স্কুলগুলি যেন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া অনলাইন মাধ্যমে সম্পূর্ণ করে। তার পরেও ৬০৮টি স্কুল এই প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেনি, তালিকা দিয়ে জানাল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।পর্ষদ সভাপতি রামানুজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “সমস্ত পড়ুয়ারা যাতে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে পরীক্ষায় বসতে পারে, তার সব রকম ব্যবস্থা আমরা করেছি। সরলীকরণের জন্য অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। কিন্তু বহু বার সময়সীমা বৃদ্ধি করার পরেও বহু স্কুল তাদের পড়ুয়াদের প্রতি দায়িত্বশীল হয়নি। তাই আমরা তালিকাও প্রকাশ করেছি সেই সমস্ত স্কুলের। আমরা চাই, স্কুলগুলি সঠিক কারণ জানিয়ে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করুক।”
সেপ্টেম্বর মাসের ১১ ও ১২ তারিখ পর্ষদের বিভিন্ন ক্যাম্প অফিস থেকে সংশোধিত রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট হাতে তুলে দেওয়া হবে। সেখানে তালিকাভুক্ত এই সমস্ত স্কুলগুলির হাতে রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেওয়া সম্ভব হবে না। শুধু তা-ই নয়, এর পরে যদি কোনও স্কুল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য আবেদন করে, তার আগে সংশ্লিষ্ট রিজিওনাল অফিসের কাছে স্কুলগুলিকে লিখিত ভাবে জবাবদিহি করতে হবে। তার পরেই তাদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে বলে পর্ষদের দেওয়া প্রধান শিক্ষকদের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “এই ধরনের পরিস্থিতি থেকে বেরোতে গেলে স্কুলের ছাত্র ও অভিভাবকদের আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে। স্কুলগুলি যখন বারবার বিজ্ঞপ্তি দেয়, তখন বহু ছাত্র বা ছাত্রী এই বিষয়টাকে গুরুত্বই দেয় না।”
রেজিস্ট্রেশনে কোনও ভুলভ্রান্তি থাকলে তা পুনর্নবীকরণের সুযোগ করে দিতে ১ অগস্ট থেকে ১১ অগস্ট পর্যন্ত অনলাইন পোর্টাল খুলেছিল মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তখনও বহু স্কুল তাদের ভুলগুলি ঠিক না করায় সময়সীমা আরও ৬ দিন বাড়িয়ে ১৭ অগস্ট পর্যন্ত করা হয়। তার পরেও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পরিসংখ্যান বলছে, ৯,১৮৬টি স্কুলের মধ্যে ৭,৯৫৩টি স্কুল অনলাইন পোর্টালে লগইন করেছে। ১,২৩৩টি স্কুল অনলাইন মাধ্যমে ঢোকেইনি। ১,৭৫৯টি স্কুল এই প্রক্রিয়ায় কোনও তথ্যই জমা দেয়নি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের কাছে।
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “অনেক ক্ষেত্রে এই সমস্যার জন্য পড়ুয়াদের সচেতনতার অভাব দায়ী। কারণ, বার বার বাড়িতে খবর পাঠিয়েও তাদের স্কুলে এসে চেকলিস্ট ভেরিফিকেশন করার সময় হচ্ছে না। ফলে স্কুল থেকে তথ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
২০২৫ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের ভুলভ্রান্তি দূর করতে ফের অনলাইন পোর্টাল খোলা হয়। চালু থাকে ১৮ থেকে ২২ অগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার পরেও দেখা গিয়েছে বহু স্কুল এখনও সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেনি।
পাশাপাশি, মধ্যশিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে ২০২৬ সালে যারা মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। অর্থাৎ এ বছর ২০২৪ সালে নবম শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন করার শেষ তারিখ আজ ৩১অগস্ট। এখনো পর্যন্ত ৭৭৫ স্কুল রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেনি। যদিও আজ রাত ১২টা পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করার সুযোগ রয়েছে। এই সময়সীমা আরো সাত দিন বৃদ্ধি করা হল পর্ষদের তরফ থেকে। ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে স্কুলগুলি।