বিদ্যাসাগর ভবন। ছবি: সংগৃহীত।
সমাজমাধ্যমেও সক্রিয় ভাবে উপস্থিত উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। ৩১ জুলাই থেকে একটি চ্যানেল এবং ফেসবুক পেজ থেকে কাউন্সিলের সমস্ত কাজ, নির্দেশিকা, তথ্য প্রচারের কাজও শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা সংসদ সভাপতি জানিয়েছেন, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের শিক্ষা সংক্রান্ত যে কোনও বিষয়ে ২৪ ঘণ্টা তথ্য পেশ করতেই এই উদ্যোগ। নিয়মিত পড়াশোনা এবং শিক্ষকতা সম্পর্কিত তথ্য আপলোড করা হবে সংশ্লিষ্ট চ্যানেল এবং পেজে। তাতে সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কেও ভিডিয়ো কিংবা লিখিত তথ্যের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ থাকবে।
তবে সমাজমাধ্যমে শিক্ষা সংসদের সক্রিয়তা কোথাও গিয়ে কি শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তিকে উৎসাহ জোগাচ্ছে? এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে শিক্ষামহলে। ঝাড়গ্রাম ননীবালা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুক্তিপদ বিশোই বলেন, “কাউন্সিলের তরফে এই উদ্যোগ যথেষ্ট প্রশংসনীয়।” তবে তিনি এ-ও বলেন, “শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্কুলগুলিকে আরও বেশি সচেতন হয়ে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে, যাতে তারা অপ্রয়োজনীয় কোনও কিছুর প্রতি আসক্ত হয়ে না পড়ে।”
এই বিষয়ে সহমত যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য এবং আসানসোলের হীরাপুর মানিকচাঁদ ঠাকুর ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষিকা নিবেদিতা আচার্য। পার্থপ্রতিম বলেন, “অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন, ফর্ম পূরণের মতো কাজে সমাজমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রেও রাজ্যের উচ্চ প্রাথমিকের স্তরের স্কুলগুলির অভ্যাস হওয়া প্রয়োজন। এতে দ্রুত কাজ সম্পন্ন হবে।” অন্য দিকে নিবেদিতা জানিয়েছেন, প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে স্কুলস্তরে সামাজিকতার পাঠদানের যে উদ্যোগ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ নিয়েছে, তা প্রশংসনীয় এবং প্রাসঙ্গিক। এ ক্ষেত্রে স্কুল তো বটেই, অভিভাবকদেরও ওয়াকিবহাল হতে হবে।
যদিও যোধপুর পার্ক বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন মজুমদার জানান, স্কুলে ছাত্রদের মোবাইল ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিক্ষা সংসদের সমাজমাধ্যমে সক্রিয়তার কারণে ছেলেরা নোটিস দেখার নামে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোন ব্যবহারের অজুহাত দিতে পারে-- এই আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তাই এই উদ্যোগকে স্বাগত জানানো উচিত হবে না বলেই মনে করছেন তিনি।
যদিও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য জানান, স্কুল চলাকালীন মোবাইল ব্যবহার একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। এ বিষয়ে দ্রুতই বিশেষ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। কোনও পড়ুয়া স্কুলে থাকাকালীন মোবাইল সমেত ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে স্কুলকে ‘ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন’ নিতে হবে। এ ছাড়াও স্কুলের বাইরে থাকাকালীন কী ভাবে সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করতে হবে, শিক্ষামূলক বিষয়ে বিভিন্ন ভিডিয়ো বা তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করতে স্কুলগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে।