ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র কলেজের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়াদের নিয়ে অন জব ট্রেনিং চলছে। ছবি: ফেসবুক।
মাছ ও বাঙালির সম্পর্ক গভীর। আর তার সূত্র ধরেই পড়ুয়াদের কাছেও এই বিষয় নিয়ে জানার আগ্রহ কম নয়। তাই স্নাতক স্তরে মৎস্যবিজ্ঞান নিয়ে পড়ার বেশ চাহিদাও রয়েছে। অন্য দিকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চশিক্ষিতদের কাছে রয়েছে গবেষণা এবং সরকারি চাকরির সুযোগও। তবে পড়াশোনার সঙ্গে পেশাদার হয়ে ওঠার সঠিক পদ্ধতি অবলম্বন করা বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। বিষয়ভিত্তিক দক্ষতা বৃদ্ধি করার কিছু কৌশল সম্পর্কে সবিস্তার আলোচনা করেছেন ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র কলেজের মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান সন্দীপন গুপ্ত।
কলেজ স্তরে চার বছরের ব্যাচেলর অফ সায়েন্স ইন ফিশারি সায়েন্সেস নামে কোর্সটিতে মাছের জীবনচক্র, তার খাদ্যাভ্যাস, সমুদ্র এবং মিষ্টি জলের মাছ চাষের বিভিন্ন পদ্ধতি, রঙিন মাছের চাষ, মাছ থেকে বিভিন্ন পণ্য প্রস্তুতিকরণ, মাছের গুনমান যাচাই-এর মতো একাধিক বিষয় শেখানো হয়। তবে শুধুমাত্র থিয়োরি নয়, হাতেকলমে কাজ করা এবং গবেষণাগারের পাশাপাশি, ফিল্ড ওয়ার্ক, অন জব ট্রেনিংয়ের মতো কর্মসূচিতেও যোগদানের সুযোগ মিলবে। এর জন্য কম্পিউটার-সহ বিভিন্ন বায়োলজিক্যাল টুল ব্যবহারের প্রশিক্ষণও মেলে। এই প্রশিক্ষণ মূলত পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেই দেওয়া হয়ে থাকে।
এ বিষয়ে বিভাগীয় প্রধান আরও বলেন, “মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতক হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সরকারি চাকরির সুযোগ রয়েছে। কারণ তাঁরা ওয়েস্ট বেঙ্গল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের তরফে ফিশারিজ় এক্সটেশন অফিসার নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এ ছাড়াও স্কুল সার্ভিস কমিশন, ওয়েস্ট বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস-সহ অন্যান্য সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিতে পারবেন। তাই স্নাতক স্তরের এই চার বছরের কোর্সটি ভাল ভাবে সম্পূর্ণ করতে পারলে উল্লিখিত বিভাগে কাজের সুযোগ মিলবে।”
সরকারি চাকরি ছাড়াও বেসরকারি ক্ষেত্রে মৎস্যবিজ্ঞানে স্নাতকদের কাছে আর কী কী ধরনের কাজের সুযোগ রয়েছে? সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সন্দীপন গুপ্ত জানিয়েছেন, মৎস্যবিজ্ঞানে রাজ্যের বিভিন্ন ব্লকের কেন্দ্রীয় এবং আন্তর্জাতিক অর্থপুষ্ট প্রকল্পে ফিশারি এক্সপার্ট, ফিশারি স্পেশালিস্ট বিভিন্ন পদে কাজ করার সুযোগ থাকে। বেসরকারি সংস্থার ক্ষেত্রে কোয়ালিটি কন্ট্রোল টেকনোলজিস্ট, হ্যাচারি টেকনোলজিস্ট, অ্যাকোয়ারিস্ট পদে স্নাতকদের নিয়োগ করা হয়ে থাকে।
এ ছাড়াও স্নাতকোত্তর পর্বের পড়াশোনা সম্পূর্ণ হওয়ার পর নেট উত্তীর্ণদের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, গবেষক, সায়েন্টিস্ট হিসাবে দেশ-বিদেশের কলেজ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ করা হয়। তাই এই বিষয় নিয়ে যাঁরা ভর্তি হতে চান, তাঁরা ৮ অগস্ট থেকে পুনরায় সেন্ট্রালাইজড অ্যাডমিশন পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে জীববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, বায়োটেকনোলজি কিংবা ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন বিষয়ে দ্বাদশ উত্তীর্ণদের আবেদন গ্রহণ করা হয়ে থাকে। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইউনিভার্সিটির ব্রহ্মানন্দ কেশবচন্দ্র কলেজ এবং আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র কলেজে উল্লিখিত বিষয়টি স্নাতক স্তরে পড়ানো হয়ে থাকে।