প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।
শিক্ষাক্ষেত্রে গবেষণার জন্য বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রের ব্যবহার জানা আবশ্যক। বিশেষত, প্রাণী এবং উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে যন্ত্রের সাহায্যে কাজ করার দক্ষতা থাকলে পরবর্তী কালে তা চাকরির সহায়ক হয়ে ওঠে। এই ভাবনা থেকেই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে একটি বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। ২৮ এবং ২৯ অগস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন ক্যাম্পাসে এই কর্মসূচি চলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইফ সায়েন্সেস বিভাগের তরফে ওই কর্মশালাটির আয়োজন করা হচ্ছে। বিভাগীয় প্রধান প্রবীরকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মূলত প্রাণিবিজ্ঞান, উদ্ভিদবিজ্ঞান, শারীরবিজ্ঞান, বায়োটেকনোলজি, বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে গবেষণায় যে সমস্ত যন্ত্র ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তার কর্মপদ্ধতি হাতেকলমে শেখানো হবে। সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে পাঠরত পড়ুয়ারা ছাড়াও বিজ্ঞান এবং টেকনোলজি শাখার স্নাতক, স্নাতকোত্তর যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিরাও এতে যোগ দিতে পারবেন। মোট ৩০ জনকে নিয়ে চলবে কর্মশালা।
বিভাগীয় প্রধান আরও বলেন, “স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পর্বের পড়ুয়ারা যন্ত্র ব্যবহারের পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে যথেষ্ট আগ্রহী। এ ছাড়াও গবেষকদের কাজের জন্য এই দক্ষতা তৈরি হওয়া বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। তাই প্রায় সমস্ত গবেষণাগারেই থাকে, এমন কিছু যন্ত্রের ব্যবহার সম্পর্কে বিজ্ঞানের পড়ুয়াদের জানা দরকার। তারই হাতেকলমে প্রশিক্ষণ এই কর্মশালার মাধ্যমে দেওয়া হবে। যাতে পরবর্তীকালে গবেষণার কাজে কিংবা চাকরির ক্ষেত্রে পড়ুয়ারা এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারেন।”
এই কর্মশালায় কোন কোন যন্ত্রচালনার প্রশিক্ষণ চলবে? বিভাগীয় প্রধান জানিয়েছেন, গবেষণাগারের পরিবেশে ফ্লোরেসেন্স স্পেকট্রোস্কোপি, ক্লোরাফিল ফ্লুয়োরোমিটার, আল্ট্রাসেন্ট্রিফিউগ, রিয়েল টাইম পিসিআর সিস্টেমের ব্যবহার সমস্ত আগ্রহীদের হাতেকলমে শেখানো হবে। তবে শুধু যন্ত্র ব্যবহার কিংবা তার কর্মপদ্ধতিই নয়, যান্ত্রিক সমস্যা চিহ্নিত করা এবং তার সমাধানের কৌশল সম্পর্কেও অংশগ্রহণকারীদের সচেতন করার চেষ্টা করা হবে।
এ বিষয়ে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শান্তনু চক্রবর্তী বলেন,“যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে সমস্যা (ট্রাবলশ্যুট) হওয়াটাই স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে সেই তথ্য পুনরুদ্ধার, নতুন করে তথ্যের জন্য যন্ত্রচালনা করা বা কী ভাবে যান্ত্রিক সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে-- সেই সমস্ত বিষয়ে পাঠদান করা হবে। থিয়োরি হিসাবে যা শেখানো হবে, তা অংশগ্রহণকারীদের নিজেদের হাতে যন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে দেখাতে হবে। তার পরে সেই সমস্ত তথ্য তাঁরা রিপোর্টের মাধ্যমে লিখতে পারছেন কি না, তা দেখে নেওয়া হবে। প্রশিক্ষণের মূল্যায়ন করা হবে এ ভাবেই। কর্মশালার শেষে সকলকেই সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।”
বিভাগীয় প্রধান প্রবীরকুমার মুখোপাধ্যায়ের মতে, যন্ত্রনির্ভর প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে গবেষকদের পাশাপাশি পড়ুয়াদের আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। জীবিকা কিংবা উচ্চশিক্ষার তাগিদে স্নাতকোত্তর কিংবা স্নাতক স্তরে পাঠরত পড়ুয়ারা পড়াশোনার সঙ্গে গবেষণার প্রতি বিশেষ ভাবে মনোযোগ দিচ্ছেন, যাতে পড়াশোনা শেষের পরেই তাঁরা কাজে মনোনিবেশ করতে পারেন।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফে ১ অগস্ট থেকে ১৭ অগস্ট পর্যন্ত কর্মশালায় যোগদানের আবেদন গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফি হিসাবে ১ হাজার টাকা জমা নেওয়া হবে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট লিঙ্কে প্রবেশ করে নাম নথিভুক্ত করে নিতে হবে।