সংগৃহীত চিত্র।
দ্বিতীয় রাউন্ডের মাঝেই স্নাতকে ভর্তির প্রক্রিয়া কলেজের হাতে তুলে দিল উচ্চ শিক্ষা দফতর। কলকাতার বুকে একাধিক নামী কলেজে কোথাও ৫০ শতাংশ, কোথাও ৬০ শতাংশ আসন ফাঁকা রয়ে গিয়েছে। উচ্চ শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, এই আসন ভর্তি করতে উদ্যোগী হতে হবে কলেজগুলিকেই।
এই বছর কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে রাজ্যের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্নাতক স্তরে পড়ুয়া ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। ৭ সেপ্টেম্বর তা শেষ হচ্ছে। এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পরেই কলেজগুলিকে পুরনো পদ্ধতিতে নিজস্ব পোর্টালের মাধ্যমে নতুন করে ভর্তি নিতে হবে। শুধু তাই নয়, বিকেন্দ্রীকরণের দায়িত্বও কলেজগুলিকে নিতে হবে বলে উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।
উচ্চশিক্ষা দফতরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, কেন্দ্রীয় ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়ার দু’টি রাউন্ড সম্পূর্ণ রূপে শেষ করার পরে যে আসন ফাঁকা থাকবে, তা পূরণ করতে হবে কলেজগুলিকে। দফতরের তরফ থেকে কোন কলেজে কত আসন ফাঁকা আছে, তার তালিকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। সেইমতো আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
আর এখানেই প্রশ্ন কলেজ কর্তৃপক্ষদের। স্বল্প সময়ের মধ্যে কী ভাবে এই ভর্তি প্রক্রিয়া চালু করা হবে, কোথা থেকে আসবে পড়ুয়া-- তা নিয়ে সন্দিহান কলেজগুলি।
আশুতোষ কলেজের অধ্যক্ষ মানস কবি বলেন, “অল্প সময়ের মধ্যে পোর্টাল চালু করে নতুন করে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা কলেজগুলোর কাছে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমাদের কলেজে মাত্র ৫০ শতাংশ আসন ভর্তি হয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ডের পরে আর ১০০ থেকে ১৫০ জন ভর্তি হতে পারে। বাদবাকি আসন ফাঁকাই থেকে যাবে।”
আশুতোষ কলেজের মোট আসন সংখ্যা ৩,৩৩০। দ্বিতীয় রাউন্ডের পরে ১৫০ মতো আসন ভর্তি হবে।
গত বছর পর্যন্ত কলেজগুলি নিজস্ব পোর্টালের মাধ্যমেই অনলাইনে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করত। সরকার এ ভাবে হঠাৎ কলেজগুলির হাতে বাদবাকি দায়িত্ব তুলে দেওয়ায় পোর্টাল তৈরির খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কলেজগুলি।
কলকাতার অন্যতম প্রতিষ্ঠান আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজের অধ্যক্ষ পূর্ণচন্দ্র মাইতি বলেন, “নতুন করে পোর্টাল খুলতে গেলে প্রায় লক্ষাধিক টাকার বেশি খরচ রয়েছে। সেই খরচ কোথা থেকে আসবে? উচ্চশিক্ষা দফতরের লোক দেখিয়ে কোন লাভ হল না। মেরুদণ্ড অনেক আগেই ভেঙে গেছে। সেই ভাঙা মেরুদণ্ড কি আর সোজা করা যায়!”
আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজে ৩,১৪০টি আসন রয়েছে। তার মধ্যে ৬০ শতাংশ আসন ফাঁকা। ভর্তি হয়েছে মাত্র ১,১০০টি আসন। দ্বিতীয় রাউন্ডের শেষে আরও ১০০ মতো ভর্তি হতে পারে বলে মনে করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
বেশ কিছু কলেজের বক্তব্য, তাদের পোর্টাল এখনও পর্যন্ত রেডি হয়নি। হঠাৎ করে নির্দিষ্ট সময়ের এই প্রক্রিয়া শেষের কথা সরকার বলায় যথেষ্ট চাপ তৈরি হয়েছে। ডি-রিজার্ভেশনের বিষয়টাও কলেজের উপর দেওয়া হলে তাতেও সময়ের ব্যাপার আছে।
এ প্রসঙ্গে সুরেন্দ্রনাথ কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল কর বলেন, “নতুন করে কলেজগুলির ভর্তি নেওয়া মানে এক বিশাল চাপের ব্যাপার। পোর্টাল রেডি করে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা এবং তাতে যদি নতুন করে পড়ুয়া আর না আসে তাহলে তো পুরোটাই লোকসান।”
সুরেন্দ্রনাথ কলেজে ৩,০০০ আসন রয়েছে। এখনও পর্যন্ত মাত্র ১,৩০০ আসন ভর্তি হয়েছে। আর দ্বিতীয় রাউন্ডের পর আরও ১৫০ মতো ভর্তি হতে পারে বলে মনে করছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।