ফল, সবজির যৌগ থেকে ডিএনএ পর্যবেক্ষণ। সংগৃহীত চিত্র।
ফল, সবজির যৌগ থেকে ডিএনএ পর্যবেক্ষণের কৌশল এ বার হাতে কলমে। গবেষণার প্রতি পড়ুয়াদের আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগী হল নারায়ণদাস বাঙুর মাল্টিপারপাস স্কুল। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে পড়ুয়ারা। তাই আমরা ছাত্রদের বিজ্ঞানমনস্ক বা গবেষণামুখী করে তুলতে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়েছি। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকেই বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে পড়ুয়াদের ল্যাবরেটরিমুখী করা হয়েছে। হাতেকলমে শেখানো হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের গবেষণার টেকনিক।”
চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে চালু হয়েছে সিমেস্টার পদ্ধতি। যেখানে বিজ্ঞান বিষয়টির পাঠ্যক্রমে নানা ধরনের পরিবর্তন আনা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হাতেকলমে নানা ধরনের নতুন প্রয়োগে জোর দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল উদ্ভিদ নমুনা থেকে ডিএনএ পর্যবেক্ষণ। ল্যাবরটরিতে ফল-সবজির যৌগ থেকে ডিএনএ পর্যবেক্ষণের কৌশল শেখানো হচ্ছে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের। যে পদ্ধতি শেখানোর জন্য উন্নত মানের ল্যাবরেটরির প্রয়োজন, তা সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা বাজারচলতি ফল, সবজির যৌগের মাধ্যমে পড়ুয়াদের পর্যবেক্ষণ করে দেখাচ্ছেন।
নারায়ণদাস বাঙুর মাল্টিপারপাস স্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক শোভন পাল বলেন, “বিষয়টি শেখানোর জন্য উন্নত মানের ল্যাবরেটরির প্রয়োজন। আমরা তা সহজ পদ্ধতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে তুলে ধরতে পেরেছি।। যা আগামী দিনে এই ধরনের গবেষণার ক্ষেত্রে তাদের আগ্রহ বৃদ্ধি করবে। ”
কী ভাবে এই ধরনের পর্যবেক্ষণ করা হয়, তার ব্যাখ্যাও দেন শোভন। তিনি জানান, পাকা কলা পিষে সূক্ষ্ম কাপড় দিয়ে ছেঁকে নেওয়া হয়। তা আলাদা করে রাখা হয়। অন্য দিকে ইথাইল অ্যালকোহল ঠান্ডা অবস্থায় রাখা হয়। এর পরে কাঁচা পেঁপে বেটে তার থেকে উৎসেচক বার করা হয়। পাকা কলার নির্যাসের সঙ্গে সমপরিমাণ ভিম জেল মেশানো হয়। এর থেকে লাইপেজ উৎসেচক পাওয়া যায়। তার সঙ্গে মেশানো হয় নুন।
প্রসঙ্গত, পাকা কলা নির্যাসের সঙ্গে লাইপেজ উৎসেচক মিশিয়ে তা ১০ মিনিট রাখা হয়। তারপর পেঁপের নির্যাস মিশিয়েও ১০ মিনিট রাখা হয়। এর থেকে একটি দ্রবণ পাওয়া যায়, যা একটি টেস্ট টিউবে রেখে ঠান্ডা ইথাইল দেওয়া হয় উপর থেকে। এর পরেই কলার ডিএনএ দেখতে পাওয়া যায়।
একাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত এই ধরনের পদ্ধতি ল্যাবরেটারিতে দেখানো হয়। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পড়ুয়াদেরও নানা ধরনের জৈবিক ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার প্রাথমিক স্তরগুলি ল্যাবরেটরিতে শেখানো হয়। রসায়ন, জীববিজ্ঞান ছাড়াও ভৌত বিজ্ঞানেও প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করানো হয় পড়ুয়াদের।