Facial Recognition in Schools

স্কুল পালানোর সময় শেষ, অ্যাপ-এর মাধ্যমে অভিভাবকদের কাছে তথ্য পৌঁছে দেবে সরকারি স্কুল

ছাত্ররা স্কুলে এসে ‘ফেসিয়াল স্ক্যানিং’ করলেই তার সমস্ত তথ্য চলে যাবে অভিভাবকের মোবাইলে ডাউনলোড করা অ্যাপে। সে কোন সময়ে স্কুলে এসেছে এবং স্কুল থেকে কোন সময়ে বেরিয়ে গিয়েছে, জানতে পারবেন অভিভাবক।

Advertisement

অরুণাভ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫৩
Share:

প্রতীকী চিত্র।

স্কুলের নাম করে আর অন্যত্র ঘুরে বেড়ানো যাবে না। স্কুলে ঢোকার সময়েই তথ্য পৌঁছে যাবে অভিভাবকের কাছে। প্রযুক্তির ব্যবহার করে পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে পদক্ষেপ করল সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুল। পড়ুয়াদের উপস্থিতির উপরে নজরদারি চালাতে ‘ফেসিয়াল স্ক্যানিং’ এবং গুগল প্লে-স্টোরের মাধ্যমে অ্যাপ চালু করতে চলেছে নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুল।

Advertisement

স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “আমাদের কাছে বিভিন্ন সময়ে বহু অভিযোগ এসেছে অভিভাবকদের কাছ থেকে। বেশ কিছু ছাত্র স্কুলের নামে ঘর থেকে বেরোলেও পরে স্কুলে এসে উপস্থিত হয়নি। এ ছাড়াও অকারণে ছুটি নেওয়া প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। সব দিক বিচার করে ডিজিটাল নজরদারির উপর জোর দিতে এই ব্যবস্থা স্কুলের। সম্পূর্ণ স্কুলের উদ্যোগে এই কাজ করা হয়েছে।”

স্কুলের তরফ থেকে বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে বিশেষ অ্যাপ। যা গুগল প্লে-স্টোরে গিয়ে স্কুলের নাম টাইপ করলেই ডাউনলোড করতে পারবেন অভিভাবক থেকে পড়ুয়ারা। এই অ্যাপে দু’টি বিভাগ করা হয়েছে। একটি হল, অ্যাকাডেমিক বিভাগ এবং অপরটি হল নন অ্যাকাডেমিক বিভাগ।

Advertisement

ইতিমধ্যেই অবশ্য বেশ কয়েকটি স্কুল পড়ুয়াদের ‘বায়োমেট্রিক অ্যাটেনডেন্স’ চালু করেছে। নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাস স্কুলের এক প্রবীণ শিক্ষকের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে অনেক সময়ে বহু পড়ুয়া সেই বায়োমেট্রিক কার্ডের অপব্যবহার করছে। অন্য কাউকে সেই কার্ড দিয়ে স্কুলে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমন চেষ্টা বানচাল করতে ‘ফেসিয়াল স্ক্যানিংয়ের’ ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, ছাত্ররা স্কুলে এসে ফেসিয়াল স্ক্যানিং করলেই তার সমস্ত তথ্য চলে যাবে অভিভাবকের মোবাইলে ডাউনলোড করা অ্যাপে। সে কোন সময়ে স্কুলে এসেছে এবং স্কুল থেকে কোন সময়ে বেরিয়ে গিয়েছে, তা জানতে পারবেন অভিভাবক।

তবে স্কুলের তৈরি করা এই অ্যাপ শুধু উপস্থিতি সংক্রান্ত তথ্যের জন্য নয়। এই অ্যাপের মাধ্যমেই ছুটির আবেদন করতে হবে পড়ুয়াদের। ক্লাসের কোনও সমস্যা হলে সেটাও সরাসরি অভিযোগ নথিভুক্ত করা যাবে। এমনকি ভিডিও আপলোড ও ডাউনলোড করার সুযোগও থাকছে। এ ছাড়া, রেজাল্টও এই অ্যাপের মাধ্যমে দেখতে পাবে অভিভাবকেরা।

এই অ্যাপের আর একটি বিশেষত্ব হল পড়াশোনার পাশাপাশি এতে ছাত্র-ছাত্রীদের গান, বাজনা এবং স্কিল ডেভেলপমেন্টের উপরেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্পোকেন ইংলিশ, রবীন্দ্র সঙ্গীত, আধুনিক গান-সহ নানা ভিডিও আপলোড করা থাকবে এতে, যা পড়ুয়ারা চাইলে দেখতে পারবে।

স্কুলের তরফ থেকে উপস্থিতির জন্য তিনটি সময় ধার্য করা হয়েছে। ১০.৪০ মিনিটে যারা স্কুলে প্রবেশ করবে, তাদের উপস্থিত ধরা হবে। এগারোটার মধ্যে স্কুলে এলে সংশ্লিষ্ট পড়ুয়াকে লেট বলে গণ্য করা হবে। ১১ টা বেজে পাঁচ হয়ে গেলে তাকে অনুপস্থিত বলে দেখানো হবে।

কবে এই নতুন পদ্ধতি চালু হবে তা এখন‌ও স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করেনি। তবে জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে পঞ্চম শ্রেণি থেকে শুরু হবে পড়ুয়াদের ‘ফেসিয়াল স্ক্যানিং’-এর প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হলেই দ্রুত এই নয়া উপস্থিতির পদ্ধতি চালু করা হবে বলে জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তবে এই অ্যাপ ডাউনলোড করা যাবে একটি মাত্র ফোন নম্বরে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে। একাধিক ব্যক্তি এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রথমে এই 'ফেসিয়াল স্ক্যানিং'- এর মাধ্যমে পড়ুয়াদের উপস্থিতি নথিভুক্ত করা হলেও, আগামী দিনে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের উপস্থিতিও এই ‘ফেসিয়াল স্ক্যানিং’- এর মাধ্যমে করা হবে বলে জানাচ্ছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement