ছবি: সংগৃহীত।
মনের কথা মন জানে আর জানেন মনোবিদ। এই বিশেষ পেশায় যাঁরা কাজ করতে চান, তাঁদের শুধু ডিগ্রি এবং ইচ্ছে থাকলেই হবে না। আরও বেশ কিছু বিষয় জানতে হবে। এ ছাড়াও কেস স্টাডির জন্য অথবা পরবর্তীতে কাজের জন্য রোগীদের মনের সমস্যার সমাধান করতে হলে, নিজেকেও সুস্থ থাকতে হবে।
আগ্রহী মনোবিদদের কী কী মাথায় রাখতে হবে, এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হিসাবে মতামত দিয়েছেন ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট এবং সিধো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যা বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর তপোলগ্না দাস।
১. আবেগ বুঝে প্রতিক্রিয়া দেওয়া:
যে হেতু কাজটি মন এবং আবেগ সংক্রান্ত, তাই অন্যের আবেগ বোঝা তো বটেই, নিজের অনুভূতিগুলিকেও সমান ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। তবে, শুধু বুঝলেই চলবে না, তার সঙ্গে যথাযথ প্রতিক্রিয়াও দেওয়াও প্রয়োজন। তা না করতে পারলে, অন্যের সমস্যার সমাধান করা মুশকিল হয়ে উঠবে।
২. সহমর্মী:
অন্যের সমস্যা বুঝে তাঁর প্রতি সহমর্মী হওয়া প্রয়োজন। কারণ, সব সমস্যার ক্লিনিক্যালি সমাধান করা সম্ভব নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহানুভূতি কাজে গতি এনে দেয়। একই সঙ্গে, মনোবিদকে নিরপেক্ষ থেকে সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
৩. একটানা শুনতে এবং বলতে পারার ক্ষমতা:
মনের সমস্যা গভীর। তাই ১০ মিনিটের মধ্যে সেই সমস্যার সমাধান হবে, এমনটা আশা করলে চলবে না। দীর্ঘ ক্ষণ ধৈর্য ধরে মানুষের সমস্যার কথা শুনতে হবে এবং একই সঙ্গে সেই সমস্যার সম্ভাব্য সমাধান সম্পর্কেও তাঁকে আশ্বস্ত করতে হবে। কথোপকথন চালিয়ে যাওয়ার দক্ষতা এর জন্য বিশেষ ভাবে প্রয়োজন।
৪. মনোযোগী হওয়া প্রয়োজন:
মন দিয়ে সমস্যার কথা শোনা এবং ঠান্ডা মাথায় তার সমাধান করা— এই বিষয়গুলির জন্য মনোযোগী হওয়া বিশেষ ভাবে প্রয়োজন। কারণ কোনও একটা কথা, যা সমস্যার সমাধানের চাবিকাঠি হতে পারে, অথচ সেই কথাটাই হয়তো ভাল করে শুনলেন না মনোবিদ। এতে যেমন পরবর্তীতে সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে গিয়ে নাজেহাল হতে হবে, তেমনই যিনি সমস্যা নিয়ে আসছেন, তিনিও মনোবিদের কাজ সম্পর্কে নিশ্চিন্ত থাকতে পারবেন না।
৫. দৈনিক চর্চার অভ্যাস রাখতে হবে:
মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ে প্রতিদিন নতুন কিছু প্রকাশিত হয়ে চলেছে। কাজের ফাঁকে সেই সমস্ত বিষয়ে লিখিত গবেষণাপত্র নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। কাউন্সেলিং পদ্ধতি নিয়েও ক্রমাগত পরীক্ষানিরীক্ষা চলছে, সে ক্ষেত্রে সেই বিষয়গুলি সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল থাকা দরকার।
এ ছাড়াও বিশেষজ্ঞের মতে, রোগের ধরন অনুযায়ী, ব্যক্তিবিশেষে সমস্যা আলাদা। তাই শুরুতে এমন কোনও পরিস্থিতি আসতেই পারে, যেখানে মানসিক ভাবে সুস্থিরতা না থাকলে রোগী এবং তাঁর পরিবারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে কাজ করাটা কঠিন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিজেকে শান্ত রাখা সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ। একই সঙ্গে অন্য পেশাদারদের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে, যাতে তাঁরা কী ভাবে বিভিন্ন ধরনের কেসে কাজ করছেন, তা থেকে শেখার সুযোগ থাকে।