Madhyamik Result 2023

শুক্রে মাধ্যমিকের ফল, এক নজরে তিন বোর্ডের পাঁচ বছরের ফলাফলের খতিয়ান

জাতীয় স্তরে অন্য দু’টি বোর্ডের শিক্ষার্থীদের পাশের হার চোখে পড়ার মতো!

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২৩ ২০:১৮
Share:

মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীরা এ বার কি টেক্কা দিতে পারবে?

রাত পেরোলেই প্রকাশিত হতে চলেছে মাধ্যমিকের রেজাল্ট। এর আগেই প্রকাশিত হয়েছে এই বছরের সিবিএসসি এবং আইসিএসই-র দশম শ্রেণির পরীক্ষার ফলাফল। এমনিতেই জাতীয় স্তরের এই দু’টি বোর্ডের পঠনপাঠন, পাঠক্রমের সঙ্গে মাধ্যমিকের পড়াশোনার তুলনা চলতেই থাকে। এখন ফলপ্রকাশের আবহে একনজরে দেখা যাক গত ৫ বছরে এই ৩ বোর্ডের ছেলেমেয়েরা কেমন ফলাফল করেছে।

Advertisement

২০২২ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৮৬.৬ শতাংশ। মোট ১১ লক্ষ ২৬ হাজার ৮৬৩ জন পরীক্ষা দিয়েছিলেন। অর্থাৎ ১৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী সেই বছরের পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিল। যুগ্ম ভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল অর্ণব গড়াই এবং রৌনক মণ্ডল। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩ (৯৩ শতাংশ)।

অন্যদিকে ওই একই বছরে সিবিএসসি বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৯৪.৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লক্ষ ৯৩ হাজার ৯৭৮ জন। অর্থাৎ প্রায় ৬ শতাংশ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছিল। যুগ্ম ভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল দিব্যা নামদেব এবং মায়াঙ্ক যাদব। প্রাপ্ত নম্বর ৫০০ (১০০ শতাংশ)। একই সঙ্গে আইসিএসই বোর্ডের দশম শ্রেণির ফলাফলে পাশের হার ছিল ৯৯.৯৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২ লক্ষ ৩১হাজার ৬৩ জন। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল ৪ জন। প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৪৯৯ (৯৯.৮ শতাংশ)।

Advertisement

২০২১ সালে অতিমারি পরিস্থিতি থাকার কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া হয়নি। তার বদলে ইন্টারনাল ফরম্যাটিং ইভ্যালুয়েশন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হয়েছিল। সঙ্গে যোগ করা হয়েছিল ২০১৯ সালের নবম শ্রেণির দু’টি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর। মোট ১০ লক্ষ ৭৯ হাজার ছাত্র-ছাত্রী সেই বছর পরীক্ষা দিয়েছিল। ১০০ শতাংশই উত্তীর্ণ হয়। প্রথম স্থান অর্জন করেছিল ৭৯ জন।

অন্যদিকে সিবিএসসি বোর্ডের তরফে করোনা অতিমারির কারণে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বদলে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়নের মাধ্যমে ফল প্রকাশিত হয়েছিল। পাশের হার ৯৯.০৪ শতাংশ। একই ভাবে আইসিএসই বোর্ডের পরীক্ষাও বাতিল করা হয়েছিল। সিবিএসসি বোর্ডের মতই এই বোর্ডের তরফেও অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নের নম্বর যোগ করেই ফল প্রকাশ করা হয়েছিল। পাশের হার ৯৯.৯৮ শতাংশ।

২০২০ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৮৬.৩৪ শতাংশ, মোট পরীক্ষার্থী ১০ লক্ষ ৩ হাজার ৬৬৬ জন। অর্থাৎ প্রায় ১৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছিল। প্রথম স্থানে ছিল অরিত্র পাল, তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৪ (৯৪ শতাংশ)।

অন্যদিকে ওই একই বছরে সিবিএসসি বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৯৪.৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ১৮ লক্ষ ৭৩ হাজার ১৫ হাজার। অর্থাৎ প্রায় ৬ শতাংশ পরীক্ষার্থীরা অকৃতকার্য হয়েছিল। যুগ্ম ভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল শিরিজা ছাবরা এবং পি হারিনি। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৯ (৯৯ শতাংশ)। একইসঙ্গে আইসিএসই বোর্ডে পাশের হার ছিল ৯৯.৯৮ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ২ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৩ জন। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল জুহি রূপেশ কাজারিয়া এবং মুক্তাসারস মানহার ভনসালি। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৯ (৯৯.৮ শতাংশ)।

২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৮৬.০৭ শতাংশ, মোট পরীক্ষার্থী ১০ লক্ষ ৫০ হাজার ৩৯৭ জন। অর্থাৎ প্রায় ১৪ শতাংশ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছিল। প্রথম স্থানে ছিল সৌগত দাস। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৪ (৯৯.১৪ শতাংশ)।

অন্যদিকে ওই একই বছরে সিবিএসসি বোর্ডের পরীক্ষায় দশম শ্রেণির পাশের হার ছিল ৯১.১ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ১৮ লক্ষ ২৭ হাজার ৪৭২ জন। অর্থাৎ প্রায় ৬ শতাংশ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছিল। প্রথম হয়েছিল শিবিকা দুদানি। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৮ ( ৯৯.৬ শতাংশ)। একইসঙ্গে আইসিএসই বোর্ডের ফলাফলে পাশের হার ছিল ৯৮.৫৪ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ১ লক্ষ ৯৬ হাজার ২৭১ জন। সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল মনহর বনশল। প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৮ (৯৯.৬ শতাংশ)।

২০১৮ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৮৫.৪৯ শতাংশ, মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১১ লক্ষ ২ হাজার ৯২১ জন। অর্থাৎ প্রায় ১৫ শতাংশ পরীক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছিল। প্রথম স্থানে ছিল সঞ্জীবনী দেবনাথ। প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৯ (৯৮.৪৩ শতাংশ)।

অন্যদিকে ওই একই বছরে সিবিএসসি বোর্ডের দশম শ্রেণির পরীক্ষায় পাশের হার ছিল ৮৬.৭০ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৬ লক্ষ ৩৮ হাজার ৪২০ জন। অর্থাৎ প্রায় ১৬ শতাংশ পরীক্ষার্থীরা অকৃতকার্য হয়েছিল। মোট ৪ জন ৪৯৯ (৯৯.৮ শতাংশ) নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল। একইসঙ্গে আইসিএসই বোর্ডের ফলাফলে পাশের হার ছিল ৯৮.৫১ শতাংশ। মোট পরীক্ষার্থী ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৩৮৭ জন। স্বয়ম দাস এবং জেসমিন কউলচাহল ৪৯৮ (৯৯.৪০ শতাংশ) সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছিল।

এই বিপুল তথ্যরাশি থেকে একটা বিষয় খুব স্পষ্ট, গত ৫ বছরে মাধ্যমিকের সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত পরীক্ষার্থীরা ৯৯ শতাংশের গণ্ডি পেরিয়ে গেলেও সার্বিক ভাবে পাশের হার কখনই ৮৭ শতাংশ পেরোয়নি। অন্যদিকে অতিমারি পরিস্থিতির মাঝেও শেষ ৫ বছরের মধ্যে ১টি বছর বাদ দিলে জাতীয় স্তরে ২টি বোর্ডের পাশের হার কখনও ৯০ শতাংশের নীচে নামেনি। তাই এই বছর পরিস্থিতির বদল হয় কি না, মাধ্যমিকের ফল জাতীয় স্তরের দুই বোর্ডের অঙ্কে পৌঁছে যেতে পারে কি না, এখন সেটাই দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement