এ বার শুধু রিলাক্স করার সময়। প্রতীকী ছবি।
রাত থেকে থেকে ঘুমটা ভেঙে যাচ্ছে। বার বার মনে হচ্ছে আরও এক বার খাতায় চোখটা বুলিয়ে নিলে ৫ এর ১ নংপ্রশ্নটার উত্তরটা আরও ভাল হতে পারত। পরীক্ষা ভাল দেওয়ার পরও চিন্তার পোকাগুলো মাথার ভিতরে কিলবিলিয়েই চলেছে। এই পরিস্থিতিতে মনটা শান্ত করবে কী ভাবে? আনন্দবাজার অনলাইনের তরফে রইল ৫টি সমাধান সূত্র। এ বার কঠিন অঙ্ক মিলে যায় কি না দেখো তো...
১. ‘সোয়ান’ চর্চা!
মনে যে প্রশ্ন এসেছে, তার উত্তরটা কিন্তু রাজহাঁস নয়। এই ‘সোয়ান’ হল ‘স্ট্রেন্থ’ অর্থাৎ শক্তি,‘উইকনেস’ বা দুর্বলতা, ‘অ্যাম্বিশন’ বা ইচ্ছে, এবং ‘নিড’ তথা প্রযোজন। একে চিনে নিতে প্রয়োজন তিনটে জিনিস। এক, সময়, দুই, একটা সাদা লম্বা কাগজ এবং তিন, একটা পেন। কারণ পেনসিলের দাগ সহজেইমুছে যায়। প্রথমে ‘সোয়ান’ এর ‘এস’ লিখে ভাল ভাবে চিন্তা করে নিজের মধ্যে কী কী শক্তি রয়েছে,সেগুলো ঝটপট লিখে ফেলতে হবে। তার পর নিজের শক্তির মত দুর্বলতার বিষয়টাও ফলাও করে লিখে নিতে হবে। এর পর মনের কী কী ইচ্ছে রয়েছে, সেটাও লিখে ফেলতে হবে। ইচ্ছের কথা লিখতে লিখতেই মাথায় নিজেরপ্রয়োজনটাও স্পষ্ট হয়ে যাবে। লেখা যে হেতু অন্য কেউ দেখবে না, তাই মন খুলে নিজের সমালোচনা করাই যায়। এই ভাবে নিজের সঙ্গে নিজে কাগজেকলমে কথা বলবে, তখন রেজাল্ট-জুজু কখন ঘর ছেড়ে পালিয়েছে, টেরই পাবে না।
২. পদ্মাসনের ধ্যানে হও মগ্ন:
ছোটবেলায় স্কুলের মাঠে বসে দিব্যি যে যোগাসনটা করে ফেলতে পারতে, সেই আসনটা এখন করা হয় কি? যদি নাহয়, তাহলে যখন রেজাল্টের জুজুটা মাথায় নাচতে শুরু করবে, তখনই দুটো পা ভাঁজ করে যতটা সম্ভব পেটের কাছাকাছি নিয়ে হাত দুটোকে টান টান করে হাঁটুর উপরে রাখার চেষ্টা করে মাথা, পিঠ, কোমর সোজা করে বসে থাকতে হবে ৫ মিনিট। প্রথম প্রথম একটু কষ্ট হলেও একবার পদ্ধতিটা বুঝে গেলে ছোটবেলার স্মৃতিগুলো কখন চোখের সামনে ভেসে উঠবে, টেরই পাওয়া যাবে না।
৩. ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিশ্বভ্রমণ হয়ে যাক
২০২৩ এ দাঁড়িয়ে সবই সম্ভব। গুগল জেঠুই এমন সুন্দর একটা ব্যবস্থা করে দিয়েছে। https://www.google.com/streetview/ এই ওয়েবসাইট থেকে বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ভার্চুয়ালি শিক্ষার্থীরা ভ্রমণ করতে পারবেন। ভাবতে অবাক লাগলেও কত জায়গায় বাড়ি থেকে বেরোনোর জন্য মায়ের কাছে বায়না না করেই ঘুরে ফেলা যাবে। এমনকি নিজের বাড়ির ৩৬০ ডিগ্রি ছবি এই স্ট্রিট ভিউ ওয়েবসাইটে আপলোড করার সুযোগ রয়েছে। গোটা পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য এর থেকে ভাল উপায় কিন্তু আর হয় না।
৪. গান ভালবেসে গান
গান শুনতে ভালোবাসেন না, এমন কেউ আছে বুঝি! যদি তা-ই হয়, তাহলে এই রেজাল্ট-জুজুকে তাড়াতে বেশ কাজে লাগবে বিশ্বের অন্যতম সুন্দর সৃষ্টি। এই সুযোগে চেনা জানার পাশাপাশি সঙ্গীত জগতের সঙ্গে আলাপচারিতাটা সেরে নেওয়া যেতেই পারে। আর যারা গান শুনতে খুবই ভালবাসেন, তাঁরা অন্য রকম ঘরানারগান শোনার চেষ্টা করতে পারেন। হয়ত সুরের মূর্ছনায় মন মেজাজ এতটাই ভাল হয়ে গেল যে, একটু গুনগুনও করে ফেললেন শিল্পীর সঙ্গে।
৫. অ্যানিমেশন সিনেমার জগৎটা কেমন?
ছোটবেলা থেকে ‘নন্টে-ফন্টে’, ‘বাঁটুল দ্য গ্রেট’, ‘বাচ্চু-বিচ্ছু’ থেকে শুরু করে ‘দ্য লায়ন কিং’, ‘বিউটি এন্ড দ্য বিস্ট’—এই সমস্ত অ্যানিমেশন প্রায় কমবেশি সকলেই দেখে ফেলেছেন। এ বার সেই ছোটবেলার স্বাদটা যদি ফের পড়ন্ত বিকেলে ফিরে পাওয়া যায়, তাহলে কেমন হয়? ‘নন্টে ফন্টে’ পরীক্ষার পর কেমন করে ‘কেল্টু বাবাজি’কে জব্দ করে সময় কাটাত, এটা দেখতে কিন্ত মন্দ লাগবে না। আর এমন করে পরীক্ষার রেজাল্টের ভয়টাও উধাও হয়ে যাবে।
তবে একটা কথা। রেজাল্ট যেমনই হোক না কেন, মনখারাপ করা কিন্তু একেবারেই বারণ। যেমন, আমাদের শরীরে হাতের পাঁচটা আঙুল সমান হয় না, তেমনই সবার রেজাল্টও সমান ভাবে ভাল হয় না। তাই রেজাল্ট নিয়ে চিন্তা নৈব নৈব চ।