মাধ্যমিকের পর কী নিয়ে পড়বেন? প্রতীকী ছবি।
স্কুল জীবনের প্রথম এবং বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক। মনে ভয় নিয়েই পরীক্ষা দেয় অনেকে। আবার ভবিষ্যৎ তৈরির প্রথম ধাপ হিসাবে এর গুরুত্ব অনেক। এর পর আসে জীবনের তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। উচ্চমাধ্যমিক। এখান থেকেই পড়ুয়ারা প্রবেশ করে উচ্চশিক্ষার আঙিনায়।
তাই উচ্চমাধ্যমিকে বিভাগ তথা বিষয় নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞান না কলা বিভাগ না কি বাণিজ্য নিয়ে পড়া ভাল হবে এই নিয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। কোন বিভাগ, কী বিষয় এবং সর্বোপরি কেন নির্বাচন করব, সেই নিয়ে পরামর্শ দিচ্ছেন যোধপুর বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমিত সেন।
বিজ্ঞান বিষয় নির্বাচন করার আগে কোন দিকগুলি নজর দেওয়া প্রয়োজন:
প্রথমেই দেখা উচিত কোন বিষয়টি এক জন পড়ুয়া পড়তে ভালবাসে। যা নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি সেই বিভাগ বা বিষয়ে নির্বাচন করা ভাল। বিশেষত এই সময় বেশির ভাগ পড়ুয়ার বিজ্ঞান বিভাগ নির্বাচনে ঝোঁক দেখা যায়। সে ক্ষেত্রে একটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, যে নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগের যে সিলেবাস থাকে তা একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। তাই মাধ্যমিকের ফলাফলে গণিত বা বিজ্ঞান বিভাগে ৮০ শতাংশের কাছে নম্বর থাকলে তবেই বিজ্ঞান বিভাগ নেওয়া ভাল।
অঙ্কে দুর্বল? কিন্তু তাও কী ভাবে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়া যেতে পারে?
যদি এমন হয় এক জন পড়ুয়া অঙ্কে দুর্বল, অন্যান্য বিজ্ঞান বিষয়ে ভাল, সে ক্ষেত্রে পরিবেশ বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান এবং পদার্থবিদ্যা, রসায়ন বা এই ধরনের কিছু বিষয় নির্বাচন করা যেতে পারে। তবে তখনও অঙ্কে ন্যূনতম ৭৫ শতাংশ নম্বর থাকলে তবেই এই বিজ্ঞানের বিষয়গুলি নিয়ে পড়া ভাল। শিক্ষার্থীরা এই বিষয়গুলি পড়েও নিট বা ডাক্তারি পরীক্ষায় বসতে পারে।
ডেটা সায়েন্স এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স:
চলতি বছর থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে যুক্ত হয়েছে ২টি বিষয়। নতুন বিষয় নিয়ে পড়ার দিকে যেমন আগ্রহও থাকে তেমনই ভয়ও থেকে যায়। পড়ুয়ারা যদি অঙ্ক এবং রাশিবিজ্ঞানে ভাল হয় তা হলে এই বিষয় নিয়ে পড়া যেতে পারে। ডেটা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পড়ার দিকে অগ্রহ থাকলে, মাধ্যমিকে রাশিবিজ্ঞানের প্রাথমিক যে দিকগুলি থাকে সেখানে ভাল হলে নেওয়া যেতে পারে ডেটা সায়েন্স এবং এআই। এখন ডেটা সায়েন্স, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ইকনমিক্স, কম্পিউটার সায়েন্স বা রাশিবিজ্ঞান নিয়ে পড়লে চাকরির রাস্তা অনেকটাই খোলা থাকে।
কলা বিভাগ নির্বাচন করার কারণ:
বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, রাষ্ট্রবিজ্ঞান-সহ কলা বিভাগের আরও বিষয়গুলি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ থাকাটা প্রয়োজন। কারণ, কলা বিভাগের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গণিতের মতো ছাঁকা নম্বর পাওয়া যায় না। তাই আগ্রহ না থাকলে বুঝে পড়া এবং লেখাটা অনেক সময় সমস্যার হয়ে ওঠে। তথাকথিত বিষয়ের বাইরে, সাংবাদিকতা, পরিবেশবিদ্যা নিয়েও পড়া যেতে পারে। কলা বিভাগ পড়ে শিক্ষক হওয়ার পাশাপাশি থাকে অন্যান্য সরকারি চাকরির সুযোগও। সিভিল সার্ভিস-এর মত স্টেট লেভেল বা সর্বভারতীয় স্তরের সরকারি চাকরির পরীক্ষা দেওয়া যায় কলা বিভাগে পড়েও।
বাণিজ্য নিয়ে পড়বেন কেন?
চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি, ট্যাক্স সংক্রান্ত কাজ-সহ অন্য আরও অনেক চাকরির দিক খোলা থাকে বাণিজ্য নিয়ে পড়ার পর।
এ ছাড়াও উচ্চমাধ্যমিক না পড়ে সরাসরি পলিটেকনিক, বা অন্য অনেক বিষয়ে ডিপ্লোমা নিয়ে পড়ার পরও কেরিয়ার তৈরি করা যেতে পারে।