আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দামে বিপুল পতন, শেষ পর্যন্ত বিবৃতি দিল সেবি। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
শেষ পর্যন্ত মুখ খুলল সেবি। আদানিকাণ্ডের পর বাজারকে আশ্বস্ত করে শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করে জানাল, বাজারের প্রতি মানুষের বিশ্বাস বজায় রাখতে তারা বদ্ধপরিকর। গোটা বিবৃতিতে এক বারও আদানি গোষ্ঠীর নাম নেয়নি সেবি। তবে জানিয়েছে, ‘একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী’র শেয়ারের দামে লক্ষণীয় ওঠাপড়া তাদের নজর এড়ায়নি।
আমেরিকার নিউ ইয়র্কের শর্ট সেলার সংস্থা হিন্ডেনবার্গের একটি রিপোর্ট ভিত নড়িয়ে দিয়েছে ভারতের সবচেয়ে বড় কর্পোরেট আদানি গোষ্ঠীর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ গৌতম আদানির ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারের দাম বৃদ্ধি করতে নানা বেআইনি কৌশল অবলম্বন এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তুলেছে হিন্ডেনবার্গ। এর জেরে হু হু করে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দাম পড়ছে তো পড়ছেই। মাথায় হাত লক্ষ লক্ষ বিনিয়োগকারীর। অভিযোগ খণ্ডনে শতাধিক পাতার জবাব, সংস্থার প্রধান গৌতমের ভিডিয়ো বার্তার পরেও পরিস্থিতি শোধরায়নি। এই পরিস্থিতিতে প্রথম প্রশ্ন ছিল, বাজারে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা কতখানি তা নিয়ে সেবির বক্তব্য কী? পুরো সপ্তাহ ধরে এত তোলপাড়ের পরেও চুপ ছিল ভারতে শেয়ার বাজারের মূল নিয়ন্ত্রক সেবি। শেষ পর্যন্ত সেবির বিবৃতি এল। যদিও সেখানে সরাসরি আদানি গোষ্ঠীর কোনও উল্লেখ নেই।
সেবির বিবৃতি।
বিবৃতিতে সেবি জানিয়েছে, শেয়ার বাজারের প্রতি মানুষের আস্থা অটুট রাখতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ হিন্ডেনবার্গ তুলেছে তার তদন্তের দাবি নিয়েও সরাসরি কিছু বলা হয়নি। যথাযথ নিরীক্ষা শেষে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে কেবল। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়, গোটা বিবৃতিটি আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারের দামের ব্যাপক পতনের প্রেক্ষিতে হলেও এক বারও ওই গোষ্ঠীর নাম নেওয়া হয়নি। আদানি গোষ্ঠীকে ‘একটি ব্যবসায়িক গোষ্ঠী’ হিসাবে অভিহিত করে শুধু বলা হয়েছে, সেই ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর শেয়ারের দামে লক্ষণীয় ওঠাপড়া তাদের নজরে রয়েছে।
গত ২৪ জানুয়ারি হিন্ডেনবার্গের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ১০ হাজার কোটি ডলার হারিয়েছে আদানি গোষ্ঠী। শেয়ারের পতন অব্যাহত রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের নামজাদা একাধিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশি ব্যাঙ্ক আদানি গোষ্ঠীকে বিনিয়োগের অর্থ না জোগানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে। ভারতের এনএসই, বিএসই পেরিয়ে তার আঁচ গিয়ে পড়েছে আমেরিকার শেয়ার বাজারেও। এই অবস্থায় ভারতীয় শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা সেবির প্রতিক্রিয়া কী তা জানা যাচ্ছিল না। শনিবার তাদের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি প্রকাশ্যে এল।