ফাইল চিত্র।
দুই ত্রৈমাসিক মিলিয়ে সঙ্কোচন বিপুল। তার ভিত্তিতে বিশ্ব ব্যাঙ্ক সম্প্রতি হিসেব কষে জানিয়েছে, করোনার ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগে ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষয়ের অঙ্ক দাঁড়াবে ৯০,০০০ কোটি ডলার। অর্থাৎ, গোটা অর্থনীতির প্রায় এক-চতুর্থাংশ। এই হিসেবের যদি কিছুটাও ভিত্তি থাকে, তা হলে কবে ও কী ভাবে অর্থনীতিকে আগের জায়গায় ফেরানো সম্ভব? রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন মনে করেন, এই প্রেক্ষিতে আগামী বাজেট অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, রাজকোষ ঘাটতির ফলে কেন্দ্রের খরচের ক্ষমতা এমনিতেই সীমিত। অথচ, পরিস্থিতির দাবি মেনে সেই খরচ বাড়িয়েই চাঙ্গা করতে হবে অর্থনীতিকে।
কম ক্ষমতার মধ্যে কী ভাবে পরিস্থিতি অনুযায়ী খরচ বরাদ্দ করা উচিত, কোথায় দেওয়া উচিত বেশি জোর, আর রাজকোষ ঘাটতি কমাতে কী ভাবে পদক্ষেপ করা জরুরি— সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই সমস্ত বিষয়েই নিজের মতামত জানিয়েছেন রাজন।
আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১-২২ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। মোদী সরকার দাবি করেছে, এই বাজেট হবে একেবারে অন্য রকম। এক দিকে বিভিন্ন খাতে খরচ বাড়ানোর দাবি এবং অন্য দিকে বাড়তে থাকা রাজকোষ ঘাটতি সামাল দিতে নির্মলা কী পদক্ষেপ করেন, সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সকলে। প্রত্যাশা অনুযায়ী নিজেদের দাবি জানাচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্র। এই অবস্থায় রাজনের বক্তব্য, খরচ করতে হবে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে। ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পের সুরাহার দিকে জোর দিতেই হবে। কারণ, লকডাউনের সময়ে ক্ষয়ে যাওয়া কর্মসংস্থানকে মেরামত করা না-গেলে চাহিদার পরিস্থিতিও ভাল হবে না। আর কর্মসংস্থান বেশি হবে সেই ছোট শিল্পের মাধ্যমেই। পাশাপাশি, সুরাহার ব্যবস্থা করতে হবে দরিদ্র মানুষের। দিতে হবে ত্রাণ। কেন্দ্র বিভিন্ন প্যাকেজ ঘোষণা করলেও যাঁদের হাতে তার সুবিধা বিশেষ পৌঁছয়নি বলে বারবার মন্তব্য করেছে বিশেষজ্ঞ মহল। দীর্ঘ মেয়াদে অর্থনীতিকে পোক্ত করতে পরিকাঠামোয় জোর দেওয়ার কথাও বলেছেন রাজন। তা তৈরিতে জোর দিয়েছেন রাজ্যগুলির ভূমিকায়।
কিন্তু বিপুল রাজকোষ ঘাটতি মিটবে কী ভাবে? রাজনের পরামর্শ, শেয়ার বাজার এখন চাঙ্গা রয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বিলগ্নিকরণের মাধ্যমে ঘাটতি কমানোর এটাই সেরা সময়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার গুরুত্বপূর্ণ বলে মেনে নিলেও, আলোচনার মাধ্যমেই তার জন্য এগোনো উচিত বলে জানিয়েছেন রাজন।