ফাইল চিত্র।
গাড়ি শিল্পের সমস্যায় এই প্রথম নোটবন্দির ছায়া।
গাড়ি বিক্রি কমার কারণ হিসেবে মোদী সরকারের প্রথম দফার এই সিদ্ধান্তকেই এ বার কাঠগড়ায় দাঁড় করাল শিল্প। শুক্রবার গাড়ির যন্ত্রাংশ শিল্পের সংগঠন অ্যাকমার বার্ষিক সম্মেলনে তাদের অভিযোগ, আসলে ২০১৬ সালে নোট বাতিলের পর থেকে মানুষের হাতে তেমন টাকা নেই। যার বিলম্বিত প্রভাব টের পাচ্ছে সংস্থাগুলি। জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুন রাম মেঘওয়াল অবশ্য বলেন, ‘‘নোটবন্দি ও জিএসটি আর্থিক সংস্কার। যা ভারতকে ৩ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি করেছে।’’ তাঁর মতে, অর্থনীতিকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারে নিয়ে যেতেও এই সংস্কার জরুরি। বরং গাড়ি বিক্রি কমার সমস্যাকে ‘ছোটখাটো’ বলে দাবি করে তিনি জানান, কেন্দ্র দ্রুত তা সামলাবে।
বৃহস্পতিবারই অবিলম্বে বিক্রি না বাড়লে আরও অনেকে কাজ হারাবেন বলে কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল গাড়ি শিল্প। অথচ শুক্রবার অ্যাকমার সভায় উল্টে শিল্পের কাছেই অর্থ প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর জানতে চান, কেন্দ্রের একগুচ্ছ সুবিধা ঘোষণা, ঋণে সুদ কমাতে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পদক্ষেপ ও নির্মাতা সংস্থাগুলির বড় ছাড় সত্ত্বেও গাড়ির চাহিদা বাড়ছে না কেন? জবাবে নোটবন্দির তোপ দাগেন যন্ত্রাংশ সংস্থা জিএস অটো লুধিয়ানার জসবীর সিংহ। অনুরাগের প্রশ্নের মাঝেই তাঁকে থামিয়ে বলেন, এটা নোটবন্দিরই বিলম্বিত প্রভাব। তাই এখন কারও হাতে টাকা নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, সভা শেষে শিল্পের হয়ে কথা বলার জন্য জসবীরকে অভিনন্দন জানিয়ে উপস্থিত শিল্প মহলের বাকিরা তাঁর বক্তব্যকে কার্যত সমর্থনই করেছেন।
সভায় দাবি
• দ্রুত কমানো হোক গাড়িতে জিএসটি।
• যন্ত্রাংশের উপর তার হার হোক একটিই, ১৮%।
• এপ্রিল থেকে যাতে বিনা ঝক্কিতে পুরোদস্তুর বিএস-৬ দূষণ বিধি চালু হয়, সে জন্য হাত বাড়াক কেন্দ্র।
• দেশে বিএস-৬ জ্বালানির জোগানও বাড়ানো হোক।
পরিস্থিতি কিছুটা ‘ঠান্ডা’ করতে অনুরাগ অবশ্য প্রশ্ন তোলেন, গাড়ি শিল্পের দুরবস্থা নোটবন্দির জের হলে, জসবীর সামনের দিকে এগোবেন কী করে? বরং চাহিদা কমার কারণ হিসেবে অ্যাপ নির্ভর ট্যাক্সি, বৈদ্যুতিক গাড়ি, বিএস-৬ মাপকাঠির নতুন গাড়ি নিয়ে ক্রেতার সংশয় বা অর্থনীতিতে চাহিদার স্বাভাবিক ওঠানামার নিয়ম দায়ী কি না, তা ভেবে দেখতে বলেন।
এ দিন অ্যাকমা ফের গাড়ি শিল্পে জিএসটি কমানোর আর্জি জানিয়েছে। অনুরাগের পরামর্শ, এই আর্জি রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদেরও জানানো হোক। কারণ তাঁরা জিএসটি পরিষদের সদস্য। আর কর নিয়ে সিদ্ধান্ত নেয় পরিষদই। তবে কেন্দ্রীয় সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি।