অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ছবি পিটিআই।
চার বছর পূর্ণ হল জিএসটি-র। আর সেই উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ফের এই পরোক্ষ করের গুণগান গাইলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কর আধিকারিকদের পাঠানো লিখিত বার্তায় কোথাও বললেন এর হাত ধরে করদাতাদের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ১.২৮ কোটি ছোঁয়ার কথা। কোথাও দেশব্যাপী তা চালুর চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেও ব্যবসায়ীদের কর জমার প্রক্রিয়া জিএসটি কতটা সহজ করেছে সেই ব্যাখ্যা দিলেন। আশ্বাস এল আদায় বৃদ্ধিরও। তবে সেই ‘যজ্ঞে’ কার্যত জল ঢেলেই এ দিন উল্টো সুর গেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। প্রশংসার বদলে উগরে দিয়েছেন কর ব্যবস্থাটির বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ। প্রস্তুতি না-নিয়ে কোনও রকমে এই কর চালুর জন্য তাঁদের মাসুল গুনতে হচ্ছে অভিযোগ তুলে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সরকারকে।
কেন্দ্রের অস্বস্তি বাড়িয়ে তীব্র সমালোচনা আসে বিজেপি-র ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ীদের সংগঠন সিএআইটি-র তরফেও। তাদের তোপ, জিএসটি কার্যত একটি ‘ঔপনিবেশিক’ কর ব্যবস্থা। যা চালুর সময়ে বলা হয়েছিল, এটি হবে সহজ ও সরল বন্দোবস্ত। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে অত্যন্ত জটিল, বাস্তবের সঙ্গে যার কোনও সম্পর্ক নেই। তাদের মতে, ‘‘জিএসটি এখন ব্যবসায়ীদের কাছে মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
আর এক সংগঠন কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনসের সভাপতি সুশীল পোদ্দারের অভিযোগ, প্রস্তুতি না-নিয়েই কেন্দ্র জিএসটি আনায় খেসারত দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁর কথায়, ‘‘গত চার বছরে হাজারখানেক সংশোধন হয়েছে জিএসটি আইনে। সবগুলির ব্যাপারে বহু আধিকারিকেরও সঠিক ধারণা নেই।’’ এমনকি বহু সংশোধন পোর্টালে তোলা হয়নি বলেও অভিযোগ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ী এ দিন স্বীকার করেছেন, জিএসটি কাঠামোয় সংস্কার জরুরি। আর পুরো জিএসটি আইন ঢেলে সাজানোর সওয়াল করে সুশীলবাবুর মতো ব্যবসায়ীদের আক্ষেপ, এই জমানায় রিটার্ন জমা-সহ যাবতীয় বিধি মেনে চলা জটিল তো বটেই, খরচসাপেক্ষও হয়েছে। ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফোরাম অব ট্রেডার্স অর্গানাইজ়েশনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ কোলে বলেন, মাঝারি মাপের ব্যবসায়ীরা জিএসটি নিয়ে সমস্যায় রয়েছেন। কর আদায়ও যতটা বৃদ্ধি পাওয়া উচিত ছিল, ততটা হয়নি।