চিনা পার্টির শতবর্ষে শি চিনফিং। ছবি পিটিআই।
শতবর্ষ পরে তাঁর মতবাদ, তাঁর চিন্তাধারা তাঁরই হাতে গড়া চিনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্ব কতটা অনুসরণ করছেন, সে বিষয়ে বিস্তর প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু তিনি রয়েছেন প্রবল ভাবেই। এই উপস্থিতি যেন মনে করিয়ে দেয়, চিনের ইতিহাস থেকে বারে বারে তাঁকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা হয়েছে, উপড়ে ফেলার প্রয়াস হয়েছে তাঁর অবদান। কিন্তু শতবর্ষের অনুষ্ঠান আলো করে রইলেন মাও জে দং। এ যেন তাঁরও প্রত্যাবর্তন।
তিয়েনআনমেন প্রান্তরের ঠিক সেইখানটিতে বাঁধা হয়েছিল উজ্জ্বল মঞ্চ, ১৯৪৯-এ যেখানে দাঁড়িয়ে সফল বিপ্লব সমাধা করে গণপ্রজাতন্ত্রী চিন-এর ঘোষণা করেছিলেন মাও। প্রেক্ষাপটে মাওয়ের সুবিশাল মুখচ্ছবিকে সাক্ষী রেখে চিন ও কমিউনিস্ট পার্টির প্রধান শি চিনফিং বৃহস্পতিবার যখন ঘোষণা করছেন, তাঁদের রাজনৈতিক ব্যবস্থা কোটি কোটি হত-দরিদ্রকে সম্পন্ন জীবনে প্রতিষ্ঠিত করেছে, এমন এক আধুনিক রাষ্ট্র গঠন করেছে, যেখান থেকে চিনকে আর ইতিহাসের পুরনো পথে ফেরানো সম্ভব নয়, চিরাচরিত সাহেবি সুটের বদলে তাঁর পরনে তখন বড় কলারের গলাবন্ধ কোট— ঠিক যেমনটি মাও জে দং পরতেন। আর এই সাফল্যের জন্য প্রেসিডেন্ট শি কুর্নিশ জানিয়েছেন ঐতিহাসিক লং মার্চের নায়ক সেই মাওকেই। আফিম যুদ্ধকেও সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রামের পূর্বাধিকার দিয়ে শি বর্তমান সম্পদশালী ও প্রযুক্তিতে আগুয়ান চিন গঠনের সাফল্যের জন্য সে দেশের মানুষের ভূমিকাকেই মুখ্য বলে ঘোষণা করেছেন।
জানিয়েছেন, চিনের প্রতি দাদাগিরির যুগ শেষ। সে দিনের শিশুরাষ্ট্র যে ভাবে বিদেশি শক্তির নিশানা হয়েছিল, আজ তার পুনরাবৃত্তির চেষ্টা হলে তার জবাব হবে ভয়ানক ও রক্তক্ষয়ী। ‘গ্রেট ওয়াল’-এর চিনে ১৪০ কোটি জনগণ যে ইস্পাত-কঠিন প্রাচীর রচনা করেছেন, তা দুর্ভেদ্য। সঙ্গে রয়েছে সুবিশাল, সুসজ্জিত ও অত্যাধুনিক গণফৌজ। অবশ্যই তাঁর এই কঠোর বার্তা আমেরিকার প্রতি। বিচ্ছিন্ন হওয়া তাইওয়ানকে ‘যথাশীঘ্র’ চিনের অঙ্গীভূত করার লক্ষ্যের কথাও জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট।