প্রতীকী চিত্র
বিনিয়োগের অর্থই হল ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করা। সে কারণে বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে তবেই বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাজারে বিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে ঝুঁকির সঙ্গে সঙ্গে ভাল রিটার্নও রয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে সেই রিটার্নের পরিমাণ কম। এই সময়ে দাঁড়িয়ে তরুণ প্রজন্মের কাছে অন্যতম পছন্দের বিনিয়োগ মাধ্যম হয়ে উঠছে রিয়েল এস্টেট। পরিসংখ্যান বলছে, রিয়েল এস্টেট হল এমন এক বিনিয়োগ ক্ষেত্র, যেখানে সব থেকে নিরাপদে বিনিয়োগ করা সম্ভব এবং লাভও বেশি। কিন্তু প্রশ্ন হল কেন রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগকে ভবিষ্যতের জন্য সব থেকে নিরাপদ খাত হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে?
১. ক্যাশ ফ্লো বা নগদের নিশ্চয়তা
মনে রাখতে হবে, রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদি। এই ধরনের বিনিয়োগ থেকে উপার্জিত মোট আয়কেই ক্যাশ ফ্লো বলা হয়ে থাকে। যে কোনও বিনিয়োগের ক্ষেত্রেই ক্যাশ ফ্লো বা নগদের সুনিশ্চয়তা তৈরি করা ইতিবাচক। কোনও ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনার পরে, গৃহঋণ পরিশোধ হয়ে গেলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ক্যাশ ফ্লো বাড়তেই থাকে। পাশাপাশি, যদি সঠিক অঞ্চলের রিয়েল এস্টেট প্রপার্টিতে বিনিয়োগ করা যায়, তা হলে এই ক্যাশ ফ্লো-এর অঙ্কটা আরও বেড়ে যায়।
কর সাশ্রয় এবং ছাড়
একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ আয়ের পরে সকলের ক্ষেত্রেই কর দেওয়া বাধ্যতামূলক। তাই সব সময়েই উপার্জনকারী ব্যক্তিরা নানা ভাবে কর সাশ্রয়ের উপায় খুঁজতে থাকেন। রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করলে এই সাশ্রয়ের ক্ষেত্রে দারুণ সুবিধা পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে পাওয়া যায় ছাড়ও। একটু হিসাব করলে দেখা যাবে, দীর্ঘকালীন সময়ে কর সাশ্রয় ও ছাড় বাবদ যে টাকা বাঁচে, তা দিয়ে সংশ্লিষ্ট বাড়ির দেখাশোনা এবং মেরামতের খরচ হয়ে যায়। আবার অন্য দিকে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির দাম কমলেও জমির দাম কিন্তু কখনও কমে না। পরবর্তী সময়ে তা বিনিয়োগকারীর কাছে স্থায়ী আমানত হিসাবেও থেকে যায়।
রিয়েল এস্টেটের দাম বৃদ্ধি
পরিসংখ্যান ও তথ্য বলছে, রিয়েল এস্টেটের দাম বাড়ে বই কমে না। প্রতি বছর অন্তত ৬-৭ শতাংশ দাম বাড়তে থাকে। করোনা-সহ বিভিন্ন অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে মূল্যবৃদ্ধির অঙ্কটা হয়তো খানিকটা কমেছে, তবে সামগ্রিক চিত্র বদলায়নি। যাঁরা অবসর নিচ্ছেন বা সদ্য চাকরিতে যুক্ত হয়েছেন, তারা বেশির ভাগ সময়েই ঝুঁকি নিতে চান না। এঁদের কাছে রিয়েল এস্টেটের থেকে ভাল বিনিয়োগের খাত আর কী-ই বা হতে পারে।
ভাড়ার মাধ্যমে আয়
শুধু কর সাশ্রয় কিংবা দীর্ঘমেয়াদি লাভই নয়, ফ্ল্যাট বা বাড়ি কেনার পরে ভাড়ার মাধ্যমেও ভাল অঙ্কের অর্থ উপার্জন করা যেতে পারে। সে বাণিজ্যিক হোক বা আবাসিক, ভাড়ার বিষয়টি কিন্তু সব ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কলকাতা-সহ দেশ জুড়ে বহু শহরেই এক অংশের মানুষ ফ্ল্যাট কেনেন শুধু ভাড়া দিয়ে উপার্জন করার লক্ষ্যে। পরবর্তী সময়ে সুযোগ বুঝে সেই বাড়ি বিক্রি করে মোটা লাভের অঙ্ক ঘরে তোলেন অনেকেই। অর্থাৎ সহজ করে বললে লোকসানের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
অন্যান্য বিনিয়োগের তুলনায় কম ঝুঁকিপূর্ণ
সোনা, মিউচুয়াল ফান্ড, শেয়ার মার্কেট, ইত্যাদির মতো সম্পত্তিতে বিনিয়োগের ফলাফল অনেক ক্ষেত্রেই বেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, এই ধরনের সম্পত্তির দাম প্রায় রোজই ওঠা-নামা করতে থাকে। অন্য দিকে যে কোনও ধরনের রিয়েল এস্টেট প্রপার্টিরই দাম খুব সহজে ওঠানামা করে না। যে বিনিয়োগকারীরা বড় অঙ্কের লাভের আশা করেন, এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করার কথা ভাবছেন, তাঁদের জন্য নিঃসন্দেহে সেরা বিনিয়োগের ক্ষেত্র রিয়েল এস্টেট।
মুদ্রাস্ফীতিকে টেক্কা
ইদানীং সবচেয়ে বড় আর্থিক সমস্যা হল মুদ্রাস্ফীতি। তবে এই সমস্যা থেকে মুক্তির পথ দেখাতে পারে রিয়েল এস্টেট। কারণ, নগদের মূল্য হঠাৎ কমে গেলেও রিয়েল এস্টেট প্রপার্টির দাম কিন্তু সেই ভাবে কমে না। এমনকি নগদ ব্যাঙ্কে সুরক্ষিত থাকলেও মুদ্রাস্ফীতির হাত থেকে তার রেহাই নেই। অথচ, আজ থেকে ১০ বছর আগে কেনা কোনও প্রপার্টির দামের সঙ্গে এই সময়ের দামের তুলনা করে দেখুন। ফারাকটা নিজেরই চোখ পড়বে।
গত কয়েক দশকে আমূল বদলে গিয়েছে রিয়েল এস্টেট। ব্যাঙ্ক ঋণের সহজলভ্যতা, এবং পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি এর বাজারে আরও বেশি করে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। তাই সব দিক বিবেচনা করলে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগের এটাই সেরা সময়।
স্বপ্নের বাড়ি খুঁজছেন? মার্লিন গ্রুপ রয়েছে তো। বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন পাশের লিঙ্কে — https://www.merlinprojects.com/
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।