পুজো আর ফ্যাশন, এরা একে অপরের পরিপূরক বলা চলে। উৎসবের আবহে নিজেকে সাজিয়ে তুলতে কার না মন চায়! কিন্তু পোশাক কেবলমাত্র পছন্দসই হলেই চলে না, তাকে হতে হবে মানানসইও। আরও বিশদে বললে, মাপসই। বিগত কয়েক বছরে ফ্যাশন জগতে বেশ বড় রকম বিপ্লব ঘটে গিয়েছে। ফ্যাশন দুনিয়া ডানা প্রসারিত করেছে আরও বিস্তৃত উড়ানের জন্য।
এই পৃথিবী নির্দিষ্ট কিছু আকার আয়তনের মানুষের জন্য সীমাবদ্ধ নয়। এত রকম মানুষ, তারা এক রকম চেহারার হলে কেমন একঘেয়ে লাগবে না!
ফ্যাশনের সঙ্গে তাই ওজনের সম্পর্ক নেই মোটেও। পোশাকই বুঝিয়ে দেয়, সে সাজতে পারে মেদ নিয়েই। এই প্লাস সাইজ ফ্যাশন মানুষকে আত্মবিশ্বাসী করে। নিজের সঙ্গে নিজেকে স্বচ্ছন্দ হতে শেখায়। এই ভাবনা মাথায় রেখেই ডিজাইনাররা প্লাস সাইজ ফ্যাশনকে বাজারে নিয়ে এসেছেন। ফ্যাশন দুনিয়াকে করে তুলছেন আরও রঙিন।
বেছে নিন রিল্যাক্সিং, স্টাইলিশ অ্যান্টি-ফিট জামাকাপড়।
ফ্যাশন দুনিয়া বলতেই বেশিরভাগের চোখের সামনে ভাসে ছিপছিপে সুসজ্জিত মডেলের ক্যাটওয়াক।কিন্তু বাস্তব পৃথিবীটা খানিক অন্যরকম। এখানে নানা মাপের, বিভিন্ন আকারের মানুষজন আছে। কেউ আশৈশব হৃষ্টপুষ্ট, কেউ একটা নির্দিষ্ট বয়সে পৌঁছে ভারিক্কি হয়ে পড়েছেন, কারও মেদবৃদ্ধি বিভিন্ন ব্যাধির কারণে। ফ্যাশন ডিজাইনার অভিষেক নাইয়ার এই সব টিপস মাথায় রাখলেই কেতাদুরস্ত হয়ে উঠবেন ওজনদার মানুষরাও।
আরও পড়ুন: সেরামিকের এই সব গয়নায় বাজিমাত পুজোর ফ্যাশনে
কী কী মাথায় রাখতে হবে?
ফিটিংস: স্কিন টাইট পোশাকের পরিবর্তে বেছে নিন রিল্যাক্সিং, স্টাইলিশ অ্যান্টি-ফিট জামাকাপড়, যা বিশেষ করে স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে তৈরি। এই বিশেষ ধরনের পোশাক আমাদের দৈহিক গঠন প্রকাশ না করে আত্মবিশ্বাসী থাকতে সাহায্য করে। তাই যাবতীয় হীনম্মন্যতাকে ঝেড়ে ফেলে সেজে উঠুন অ্যান্টি-ফিটেড পোশাকে।
কালো, মেরুন এ ধরনের উজ্জ্বল রং ছাড়াও বেছে নিতে পারেন প্যাস্টেলের যে কোনও শেড।
রং: আপনি কোন রঙের পোশাক নির্বাচন করছেন তার উপর অনেকটা নির্ভর করছে আপনাকে কতটা ছিমছাম দেখাবে। ডিজাইনার অভিষেক নাইয়ার কথায়, "কালো রঙ এক্ষেত্রে সবসময়ই আপনার বন্ধু। হ্যাঁ, কেউ যদি খানিকটা শ্যামবর্ণ হন, তাহলে তাঁর দ্বিধার কোনও প্রয়োজন নেই। কারণ মানুষের মনই আসল। চেহারা নয়। কালো, মেরুন এ ধরনের উজ্জ্বল রং ছাড়াও বেছে নিতে পারেন প্যাস্টেলের যে কোনও শেড (যেমন পিচ, লাইল্যাক, ল্যাভেন্ডার, অলিভ ইত্যাদি)।
আরও পড়ুন: গয়না বা পোশাক নয়, স্যানিটাইজার হোল্ডারে হয়ে উঠুন অনন্য
ড্রেস মেটেরিয়াল: গ্রীষ্মপ্রধান দেশে পোশাকের উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হালকা, ফুরফুরে থাকার জন্য সুতি, ডেনিম, সিল্ক জাতীয় পোশাকে সর্বদা আস্থা রাখুন। যদি প্রিন্টেড পোশাক আপনার পছন্দের হয়, তবে ছোট প্রিন্টের পোশাকে আপনাকে নির্ভার দেখাবে। গা ভাসিয়ে দিন আনন্দ প্রবাহে।
শাড়ি, লং ড্রেস, যে কোনও সময়: শাড়ি যে চিরকালীন, সবসময় নির্ভরযোগ্য, এটা সকলেই মানবেন। শাড়ি যে ভাবে মানুষকে সুন্দর করে তোলে, তেমন বোধহয় আর কোনও পোশাকই নয়।
আরও পড়ুন: পুজোয় এই সব নেল আর্টই ভাইরাল হতে পারে সোশ্যাল মিডিয়ায়
পুজোর মরসুমে শাড়ি তো বাম্পার হিট! ওজন আধিক্য থাকলে আঁচলটা প্লিট না করে খুলে রাখুন, ব্যস! লং ড্রেস, কাফতান, গাউন জাতীয় ফ্লোয়ি পোশাক নির্দ্বিধায় ট্রাই করতে পারেন এবার পুজোয়। আপনার ত্বকও শ্বাস নিয়ে বাঁচবে, উৎসবের আমেজে আপনিও হবেন মাতোয়ারা।
গাউন জাতীয় ফ্লোয়ি পোশাক নির্দ্বিধায় ট্রাই করতে পারেন এবার পুজোয়।
স্ট্রাইপড ড্রেস: পোশাকে স্ট্রাইপের চল বহুদিনের। খুব চেনা-সহজ এই স্টাইল কোনও দিন একঘেয়ে নয় বরং আদ্যন্ত কেতাদুরস্ত। একটু বেশি ওজনের মানুষের জন্য ভার্টিকাল স্ট্রাইপড পোশাক উপযুক্ত এবং নিরাপদ। হরাইজন্টাল বা আড়াআড়ি স্ট্রাইপ এ সব ক্ষেত্রে না হয় একটু এড়িয়েই চলুন। লম্বালম্বি স্ট্রাইপ পুজোর সাজে যোগ করবে আলাদা মাত্রা, আপনাকে দেখাবে আরও বেশি আকর্ষণীয়