এক নবমীতে বন্ধুর বাড়িতে প্রথম দেখা, নাড়ু পছন্দ দু’জনেরই। সামনে বাটিতে পড়ে একটা মাত্র নাড়ু। সেই নাড়ুর ভাগাভাগির হাত ধরেই শুরু শোভন-স্বস্তিকার মিষ্টি প্রেম।
গত দু’বছর কোভিডের কারণে ঘরবন্দি পুজো কেটেছে একসঙ্গে। মুহূর্তরা আরও কাছে এনেছে, নিবিড় হয়েছে সম্পর্ক। এ বছর কোভিডের চোখরাঙানি নেই। কিন্তু কাজের সূত্রে দূরে থাকতে হবে। এ বছর পুজো তাই মন কেমনের।
তবু কুছ পরোয়া নেই! পুজের চার দিনের বিচ্ছেদ ভুলতে আগে থেকেই শুরু ভালবাসার উদ্যাপন। সঙ্গে আনন্দবাজার অনলাইন।
“আমাদের প্রেমটা একেবারে পুজোর প্রেম। টিপিক্যাল বাঙালি বাড়ির ছেলেমেয়েরা যে ভাবে পুজোর সময়ে প্রেমে পড়ে, আমাদের ভালবাসাও সে ভাবেই শুরু হয়েছিল।”
“বন্ধুর বাড়িতে পুজো ছিল। তখন আমি মনের দিক থেকে একটু সমস্যায় ছিলাম। সে দিন যাব না ভেবেছিলাম। শেষমেশ অবশ্য গিয়েছিলাম। শোভনের সঙ্গে দেখা হবে, আগে থেকেই ঠিক ছিল বোধহয়।” কেনাকাটা করতে করতেই গল্প শুরু স্বস্তিকার। সকাল থেকে সন্ধে, একসঙ্গে সারাদিন। কাজের চাপ। তার মধ্যে দু’জনকেই সময় বার করতে হয়েছে। একটা দিন শুধু দু’জনের। পুজোর কেনাকাটা, খাওয়াদাওয়া, সঙ্গে মিষ্টি খুনসুটি, আরও একটু কাছাকাছি আসা।
শোভনের পছন্দের পোশাকই এ বার কিনবেন স্বস্তিকা। পুজোর উদ্বোধনে যেতে হবে। অনুষ্ঠানও আছে। তাই ক্যাজুয়ালই পছন্দ।
আকাশ নীল স্ট্রাইপ ড্রেসে, কলমকারি জ্যাকেটে ট্রায়াল রুমের বাইরে নায়িকা। শোভন কী বলছে, তার অপেক্ষায়।
সামনে মুগ্ধ শোভন। এটাই হবে ষষ্ঠীর পোশাক। রুপোর পাঁচ পয়সার দুল, দু’ পয়সার চোকার। অভিনব গয়নায় মোহময়ী স্বস্তিকা।
দূরে কাটবে তো কী, শোভনের পুজোর পোশাকও আজই ঠিক করতে হবে। ব্লক প্রিন্টের কালো শার্ট, সঙ্গে ডেনিম। ষষ্ঠীর দিন এই পোশাকই পরবেন শোভন।
স্বস্তিকার পছন্দ করা পোশাকে খুশি শোভনও। জুটিতে কেমন দেখাবে? তারও ট্রায়াল হল দেদার।
ড্রেস তো হল। এ বার কুর্তি দেখা যাক। শোভনের প্রিয় নীল রং। উৎসবের মরসুমে স্বস্তিকার পছন্দ রেড-বেজের কম্বিনেশন।
শেষ পর্যন্ত দু’জনেরই পছন্দে কেনা হল কালো-মেরুন আনারকলি। কানে তামার গোলাপ আকৃতির হালকা দুল। শোভনের পছন্দ কমলা-কালো পাঞ্জাবি। পছন্দের পোশাক পরেই চলল বাকি কেনাকাটা।
পাঞ্জাবির সঙ্গে জওহর কোট কেমন লাগবে? শোভনকে এই পোশাকে দেখতে পাবেন না। মন খারাপ তাঁর রাইয়ের।
অষ্টমীতে শাড়ি ছাড়া কিছু ভাবা যায় নাকি? এ বার নীল শাড়িতে সাদা প্রিন্টের দিকে নজর নায়িকার। খুব কি পছন্দ শোভনের? খুনসুটি, হাসি-ঠাট্টায় মেতে চলল শাড়ি কেনা।
ম্যানিকুইনের সামনে স্বস্তিকার হঠাৎ মজায় অবাক শোভন।
শাড়ি হোক বা ড্রেস, সঙ্গে অ্যাকসেসরিজ তো চাই। দুটো ব্যাগই পছন্দ। কোনটা তবে ফাইনাল? শুরু হল নতুন পর্ব।
কেনাকাটা শেষ। এ বার মজা করার পালা শোভনের। মানিব্যাগে টাকা নেই! ডেবিট কার্ডও নাকি ভুলে ফেলে এসেছে বাড়িতে। রেগে লাল স্বস্তিকা।
শপিং শেষে খাওয়াদাওয়ার পালা। হপ্পিপোলায় মকটেল আর প্রন ককটেল সামনে নিয়ে ঝগড়া, মান-অভিমান, আদরে-সোহাগে কিছু ক্ষণ।
লক্ষ্মী পুজোর পরে আবার দেখা হবে দু’জনের। একসঙ্গে উড়ে যাবেন তাইল্যান্ডের এক নির্জন গ্রামে। পুরো এলাকায় জনবসতির কোনও চিহ্ন নেই।
রয়েছে কেবল একটাই বাড়ি। আশপাশে প্রকৃতির ফিসফাস ছাড়া আর কোনও শব্দও নেই। নদীর উপরে ব্রেকফাস্ট। মুখোমুখি দু’জনে। বাকিটা ক্রমশ প্রকাশ্য…