ছবি: সংগৃহীত
কথায় আছে মায়ের ইচ্ছেতে সবই সম্ভব। কালী দয়াময়ী। তিনি তাঁর ভক্তকে কখনও একা রাখেন না। তাঁর চলন সর্বত্র। তাই ভক্তের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও ঘুরে বেড়ান এই বিশ্ব চরাচরে। এ রকমই একটি ঘটনার সাক্ষী সুইডেনের মালমো। মালমো, সুইডেনের তৃতীয় বৃহত্তম শহর। এখানে বসবাস করেন বহু মানুষ, যাঁদের আদি ঠিকানা ভারতীয় উপমহাদেশ। ভারতীয়দের পাশাপাশি বাংলাদেশের বহু মানুষও জীবিকা অথবা শিক্ষার টানে এক সময় সুইডেনে আসেন। তাঁরা এখন এখানকার নাগরিক। কিন্তু সন্তান কি মাকে ছেড়ে থাকতে পারে?।
‘গ্র্যান্ড মা কালী পুজো মালমোর’ উদ্যোক্তা সুব্রত সাহা ও রাণা সাহা জানান, তাঁদের শ্যামা মা আগে পূজিত হতেন বাংলাদেশের ময়মনসিংহে। বহু বছর ধরে নিষ্ঠা সহকারে তাঁরা মায়ের পুজো করে আসছিলেন সেই ছোট থেকে। সুইডেনে পাড়ি দেওয়ার পরে মায়ের পুজো আবার শুরু করার ভাবনা চিন্তা করেন তাঁরাই।
ছবি: সংগৃহীত
সুইডেনের মালমোতে এই ‘গ্র্যান্ড মা কালী পুজো’-র এবারে অষ্টমবর্ষ। শুধু মাত্র দক্ষিণ সুইডেন নয়, পাশের দেশ ডেনমার্ক থেকেও মানুষজন আসেন এখানকার পুজোতে। বাংলাদেশিদের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিরাও ভিড় করেন মায়ের পুজো দেখতে। এ ছাড়াও নানা প্রান্তের মানুষ সুইডিশ, ড্যানিশ, অ্যালবেনিয়ান, এমনকি ইসলাম ধর্মাবলম্বীরাও আসেন। দুই দিন ধরে বাংলাদেশি নির্ঘণ্ট মেনে চলে মায়ের আরাধনা। নিয়ম-নিষ্ঠা মেনে মায়ের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। পুজোর জোগাড়ে থাকা মহিলা পুরুষরা নির্জলা উপবাস করেন। হয় হোমযজ্ঞ। পুষ্পাঞ্জলি শেষ হলে প্রসাদ গ্রহণ করেন প্রায় ২০০ মানুষ।
সব থেকে আশ্চর্যের বিষয়, এখানকার পূজারী বামুন আসেন প্যারিস থেকে। গত সাত বছর ধরে তিনিই এখানে পুজো করছেন। তাঁর আদি বাড়ি অবশ্য বাংলাদেশের সিলেটে। বামুন ঠাকুর নিজের সঙ্গে করেই পুজোর কিছু সামগ্রী নিয়ে আসেন প্যারিস থেকে। বাকি পুজোর জিনিস আসে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ থেকে।
ঢাকের বাজনা ছাড়া বাঙালির পুজো সম্পূর্ণ হয় না। এই বছর ঢাক নিয়ে আসা হয়েছে বাংলাদেশ থেকে।
বাঙালি, মা কালীর সন্তান। মা আগলে রাখেন সর্বদা। হোক না ময়মনসিংহ বা মালমো। মা আছেন। তিনিই দেখবেন।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ।