সিঙ্গারণ কালী
গোটা বাংলা জুড়ে আছে ডাকাতদের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন কালীমন্দির, আর প্রত্যেকটি মন্দিরেরই আছে বিশেষ মাহাত্ম্য। বাংলার কুখ্যাত ডাকাত সর্দার ভবানী পাঠকও এক কালী মন্দিরের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন– এমনই বিশ্বাস করেন আসানসোলের জামুড়িয়ার মানুষজন। সেটি বর্তমানে সিঙ্গারণ কালীমন্দির নামে পরিচিত।
শোনা যায়, এক সময়ে ভবানী পাঠক স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সিঙ্গারণ নদীর ধারে এই মন্দির বলেই এখানে কালীও সিঙ্গারণ কালী নামেই পরিচিত। কথিত আছে, এই পুজো আজ থেকে প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো।
জঙ্গলে ঘেরা এই মন্দিরে দেবীর নিত্যপুজো সম্পন্ন হয়। অনেকে আবার বলেন, এক সময়ে সাধক বামদেবও পা রেখেছিলেন এই মন্দিরে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ১৯৬৮-৬৯ সাল পর্যন্ত এই অঞ্চল ছিল জঙ্গলে ঘেরা। সাধারণ মানুষ ভয়ে যেতে পারত না। ডাকাতরা এখানে বলি দিয়ে এবং ভোগ খেয়েই তবেই ডাকাতি করতে যেত। এলাকার বাসিন্দারা জানান, মন্দিরের পাশেই আছে এক খোলা মুখ কয়লা খনি। এই এলাকায় আগুন লেগে যাওয়া, ধস নামা, ফাটল ধরার মতো বহু ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু কোনও দিনও মন্দিরের গায়ে এতটুকু আঁচ লাগেনি। আর এই থেকেই গ্রামবাসীদের বিশ্বাস, সিঙ্গারণ কালী গ্রামবাসীদের সব রকম বিপদ থেকে রক্ষা করেন।
বর্তমানে সিঙ্গারণ কালীপুজোর দায়িত্বে রয়েছেন তপসী গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার। পরিবারের সদস্যরা জানান, এক সময়ে দেবী স্বপ্নাদেশ দেন তাঁকে কোনও বদ্ধ মন্দিরে পুজো করা যাবে না। তাই চার দিক খোলা আটচালা মন্দিরেই এখনও পুজো হয়
আবার এই সিঙ্গারণ কালী মন্দির নিয়েই প্রচলিত রয়েছে অন্য এক কাহিনি। কথিত, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এক সময়ে বর্তমান কালীমন্দির প্রাঙ্গণে কোলিয়ারি চালু করতে এসেছিল। খননকার্য শুরু করতেই ১২ হাত লম্বা মহিলার চুল খুঁজে পাওয়া যায়। তা দেখার পরে এই স্থান থেকে ৫০০ মিটার দূরে কোলিয়ারি চালু করে সংস্থা। এমনই বহু অলৌকিক ঘটনার সাক্ষী এই মন্দির।
এই প্রতিবেদনটি ‘আনন্দ উৎসব’ ফিচারের একটি অংশ